ঢাকা ০২:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার শেষ পাঁচ বছরে খুনের ঘটনা ঘটেছে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

শেখ হাসিনার শেষ পাঁচ বছরে খুনের ঘটনা ঘটেছে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার।

সারাদেশে কোন কোন জায়গায় কতো এবং কী ধরণের অপরাধ ঘটেছে- কতো মামলা বা জিডি হয়েছে তার মাসিক পরিসংখ্যান ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে পুলিশ সদর দফতর। কিন্তু অজানা কারণে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩-এর ডিসেম্বর, এই সময় পর্যন্ত অপরাধ পরিসংখ্যান ওয়েবসাইটে দেয়া বন্ধ ছিল। সবশেষ নতুন আইজিপি দায়িত্ব নেয়ার পর প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকরা বিষয়টি তোলার সাথে সাথেই পরিসংখ্যান ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে পুলিশ।

সেখানে মিললো ভয়ঙ্কর কিছু তথ্য, পুলিশ সদর দফতরর সেই ৫ বছরে হত্যাকাণ্ড হয়েছে ১৬ হাজার ৩৫৫টি। প্রতি বছর গড়ে ৩ হাজার ৩১১ খুন। এই ৫ বছরে ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ৯ হাজার ৯৫৫টি। আর ডাকাতির ১ হাজার ৬৮৫ মামলা হয়েছে। থানাগুলোতে চুরির অভিযোগ এসেছে ৫৫ হাজার। তবে বাস্তবে এসব ঘটনা আরও বেশি। কারণ অধিকাংশ চুরি-ছিনতাইয়ের মামলা করতে আগ্রহ দেখান না ভুক্তভোগীরা। পুলিশের মামলার পরিসংখ্যান বলছে, শেখ হাসিনার শাসনামলের শেষ ৫ বছরে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৪৫২টি।

বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক সাগর বলেন, অপরাধ নিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে। পরিস্থিতি উন্নতির জন্য পুলিশপ্রধান নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোন এলাকায় কোন ধরনের অপরাধ ঘটে কিংবা কেন ঘটে সেসব নিয়ে পুলিশ গবেষণা করে। সেই অনুযায়ী অপরাধ কমাতে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশের দায়িত্ব নিয়েছে নতুন সরকার। তবে এখনও থেমে নেই অপরাধ। থানায় পুলিশ পুরোপুরি সক্রিয় না হওয়ায় বেড়েছে সামাজিক অপরাধ। চুরি-ছিনতাই গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যও বেড়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অপরাধের খাত ধরে ধরে কাজ করতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে। দ্রব্যমূল্য কমিয়ে মানুষকে স্বস্তির মধ্যে রাখলে অপরাধ কমবে বলেও মত তাদের।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অপরাধ বিশ্লেষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাগুলো অনেকটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তারা কঠোর হলে পুরোপুরি এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবে খুনের মতো অপরাধগুলো নির্ভর করে দেশে আর্থসামাজিক অবস্থার ওপর। যদি আর্থিক ও সামাজিক দিক ভালো থাকে তাহলে এসব অপরাধ কম ঘটে।

সবমিলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশে সবচেয়ে দুশ্চিন্তার জায়গা পারিবারিক অপরাধ। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের অংশগ্রহণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়াতে চায় বাহিনীটি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৪৮:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
১২ বার পড়া হয়েছে

শেখ হাসিনার শেষ পাঁচ বছরে খুনের ঘটনা ঘটেছে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার

আপডেট সময় ০৪:৪৮:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনার শেষ পাঁচ বছরে খুনের ঘটনা ঘটেছে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার।

সারাদেশে কোন কোন জায়গায় কতো এবং কী ধরণের অপরাধ ঘটেছে- কতো মামলা বা জিডি হয়েছে তার মাসিক পরিসংখ্যান ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে পুলিশ সদর দফতর। কিন্তু অজানা কারণে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩-এর ডিসেম্বর, এই সময় পর্যন্ত অপরাধ পরিসংখ্যান ওয়েবসাইটে দেয়া বন্ধ ছিল। সবশেষ নতুন আইজিপি দায়িত্ব নেয়ার পর প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকরা বিষয়টি তোলার সাথে সাথেই পরিসংখ্যান ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে পুলিশ।

সেখানে মিললো ভয়ঙ্কর কিছু তথ্য, পুলিশ সদর দফতরর সেই ৫ বছরে হত্যাকাণ্ড হয়েছে ১৬ হাজার ৩৫৫টি। প্রতি বছর গড়ে ৩ হাজার ৩১১ খুন। এই ৫ বছরে ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ৯ হাজার ৯৫৫টি। আর ডাকাতির ১ হাজার ৬৮৫ মামলা হয়েছে। থানাগুলোতে চুরির অভিযোগ এসেছে ৫৫ হাজার। তবে বাস্তবে এসব ঘটনা আরও বেশি। কারণ অধিকাংশ চুরি-ছিনতাইয়ের মামলা করতে আগ্রহ দেখান না ভুক্তভোগীরা। পুলিশের মামলার পরিসংখ্যান বলছে, শেখ হাসিনার শাসনামলের শেষ ৫ বছরে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৪৫২টি।

বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক সাগর বলেন, অপরাধ নিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে। পরিস্থিতি উন্নতির জন্য পুলিশপ্রধান নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোন এলাকায় কোন ধরনের অপরাধ ঘটে কিংবা কেন ঘটে সেসব নিয়ে পুলিশ গবেষণা করে। সেই অনুযায়ী অপরাধ কমাতে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশের দায়িত্ব নিয়েছে নতুন সরকার। তবে এখনও থেমে নেই অপরাধ। থানায় পুলিশ পুরোপুরি সক্রিয় না হওয়ায় বেড়েছে সামাজিক অপরাধ। চুরি-ছিনতাই গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যও বেড়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অপরাধের খাত ধরে ধরে কাজ করতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে। দ্রব্যমূল্য কমিয়ে মানুষকে স্বস্তির মধ্যে রাখলে অপরাধ কমবে বলেও মত তাদের।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অপরাধ বিশ্লেষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাগুলো অনেকটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তারা কঠোর হলে পুরোপুরি এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবে খুনের মতো অপরাধগুলো নির্ভর করে দেশে আর্থসামাজিক অবস্থার ওপর। যদি আর্থিক ও সামাজিক দিক ভালো থাকে তাহলে এসব অপরাধ কম ঘটে।

সবমিলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশে সবচেয়ে দুশ্চিন্তার জায়গা পারিবারিক অপরাধ। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের অংশগ্রহণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়াতে চায় বাহিনীটি।