পুতিনের চোখ এখন পুরো ইউক্রেনে, ইউরোপের প্রস্তুতি জোরদার
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইউক্রেনকে আরও বেশি সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটির ইউরোপীয় মিত্ররা, যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে সহায়তা স্থগিতের ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আবারও জানিয়েছেন, ইউক্রেনের পুরো ভূখণ্ড তার উচ্চাকাঙ্ক্ষার অংশ।
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে ২৪ ও ২৫ জুন দ্য হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটোর সম্মেলনের আগে জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কানাডা ২০২৪ সালের মধ্যে ইউক্রেনকে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, ইতোমধ্যেই এ সহায়তা ৪০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা গত বছরের মোট সহায়তার (৫০ বিলিয়ন ডলার) তুলনায় অর্ধেক বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
এই সাহায্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের দিক থেকে সামরিক সহায়তা না দেওয়ার ক্ষতিপূরণ কিছুটা হলেও পূরণ করছে।
এপ্রিলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার আগ্রহ দেখান। তবে পরের মাসে প্রথমবারের মতো ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করে।
অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতির জন্য ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের দাবি জানিয়েছে রাশিয়া। এই দাবি আবারও উচ্চারণ করেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গত ২৮ জুন।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ২০ জুন এক অনুষ্ঠানে বলেন, “রুশ ও ইউক্রেনীয়রা এক জাতি— এই দৃষ্টিকোণ থেকে পুরো ইউক্রেনই আমাদের। পুরোনো একটি প্রবাদ রয়েছে— যেখানে রুশ সৈন্য পা রাখে, সেটিই আমাদের এলাকা।”
এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পরদিন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন, “রুশ বাহিনী যেখানে পা রাখে, সেখানেই মৃত্যু, ধ্বংস এবং বিপর্যয় নামিয়ে আনে।”
জেলেনস্কিও ২১ জুন এক টেলিগ্রাম পোস্টে উল্লেখ করেন, “পুতিন এখন শুধু ইউক্রেন নয়, বেলারুশ, বাল্টিক রাষ্ট্র, মলদোভা, ককেশাস এবং কাজাখস্তান নিয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডের স্পিগেল প্রকাশিত এক ফাঁস হওয়া গোপন সামরিক পরিকল্পনায় জার্মান সেনাবাহিনী রাশিয়াকে একটি সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছে। নথিতে বলা হয়, “মস্কো ২০৩০ সালের মধ্যে ন্যাটোর বিরুদ্ধে বড় পরিসরের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মেরৎজ ২৪ জুন স্বীকার করেন, “আমরা অতীতে বাল্টিক দেশগুলোর সতর্কতা উপেক্ষা করেছি। এখন সেই ভুল শোধরানোর সময় এসেছে।”