ইয়েমেনে নাগরিক হত্যার দায়ে ভারতীয় নার্সের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হচ্ছে ১৬ জুলাই
ইয়েমেনে একজন নাগরিককে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত কেরালার নার্স নিমিশা প্রিয়া শেষ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হচ্ছেন। প্রায় এক দশক ধরে চলা আইনি লড়াই এবং ভারতের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক চেষ্টা সত্ত্বেও, আগামী ১৬ জুলাই তার ফাঁসি কার্যকর হতে চলেছে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুসারে, কেরালার পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা ২০০৮ সালে স্বামী ও কন্যাসহ ইয়েমেন যান এবং সেখানে একজন নার্স হিসেবে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে স্বামী ও মেয়ে ফিরে এলেও, তিনি ক্লিনিক খোলার উদ্দেশ্যে ইয়েমেনে থেকে যান।
২০১৫ সালে স্থানীয় নাগরিক তালাল আবদো মাহদির সঙ্গে যৌথভাবে একটি ক্লিনিক চালু করেন। কারণ ইয়েমেনের আইন অনুযায়ী, বিদেশিদের পক্ষে স্থানীয় অংশীদার ছাড়া ব্যবসা করা সম্ভব নয়। কিন্তু দ্রুতই ওই অংশীদারিত্বে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
নিমিশার পরিবারের দাবি, মাহদি তার অর্থ আত্মসাৎ করেন এবং তাকে নেশাগ্রস্ত করে পাসপোর্ট কেড়ে নেন, যাতে তিনি দেশে ফিরতে না পারেন। পরবর্তীতে পাসপোর্ট উদ্ধার করতে গিয়ে প্রিয়া মাহদিকে ঘুমের ইনজেকশন দেন, যা অতিরিক্ত মাত্রায় প্রয়োগের ফলে তার মৃত্যু হয়।
মাহদি তাকে স্ত্রী হিসেবে দাবি করায় মামলাটি আরও জটিল হয়ে ওঠে। দেশ ছাড়ার চেষ্টাকালে ২০১৭ সালে প্রিয়াকে আটক করা হয় এবং পরবর্তীতে তাকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৮ সালে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল আলিমি মৃত্যুদণ্ডে স্বাক্ষর করেন, যার পর এক মাসের মধ্যে রায় কার্যকরের সময়সীমা নির্ধারিত হয়। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বহুবার কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া হলেও ইয়েমেন সরকার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে।
সবশেষে, জানানো হয়েছে যে ২০২৫ সালের ১৬ জুলাইই নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।