নেতানিয়াহুর নতুন পরিকল্পনা: গাজা দখলে তীব্র উত্তেজনা বাড়ছে
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকা পুরোপুরি পুনর্দখলের একটি প্রস্তাব পেশ করতে যাচ্ছেন। শিগগিরই এই প্রস্তাব দেশটির নিরাপত্তা ক্যাবিনেটে উপস্থাপন করবেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম।
গত মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, স্থানীয় সাংবাদিকরা এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তার বরাতে বলেছেন, “এটা এখন নিশ্চিত— গাজা পুরোপুরি দখল করা হবে এবং হামাসকে নির্মূল করা হবে।”
তবে নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনার সঙ্গে একমত নন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রধানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, “যদি সেনাপ্রধানের আপত্তি থাকে, তাহলে পদত্যাগ করাই উচিত।”
এদিকে গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবারগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে প্রায় ৫০ বন্দির মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন। এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি চারজন ইসরায়েলির মধ্যে তিনজন যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বন্দিমুক্তি চান।
অনেক পশ্চিমা মিত্রদেশও নেতানিয়াহুর দখলদারি পরিকল্পনার বিরোধিতা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তারা দীর্ঘদিন ধরেই যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে আসছে।
দেশের অভ্যন্তরেও এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রবল প্রতিক্রিয়া। সাবেক গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা একটি খোলা চিঠিতে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ প্রয়োগ করেছেন যুদ্ধ বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। শিন বেতের (Shin Bet) সাবেক প্রধান আমি আয়ালন বলেন, “হামাস সামরিকভাবে দুর্বল হলেও আদর্শগতভাবে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে, যা শুধু ফিলিস্তিনিদের মধ্যেই নয়, বরং পুরো মুসলিম বিশ্বের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে।”
তার মতে, “হামাসকে পরাজিত করতে চাইলে, একটি আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যতের দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে হবে।”
এই প্রস্তাব এমন এক সময় সামনে এলো, যখন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় আলোচনায় অগ্রগতি থেমে গেছে। হামাস সম্প্রতি যে ভিডিওগুলো প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়— দুই ইসরায়েলি বন্দি রোম ব্লাস্লাভস্কি ও এভিয়াতার ডেভিড চরম দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এমনকি ডেভিডকে একটি টানেলে নিজের জন্য কবর খুঁড়তে দেখা গেছে।