পেরুর সংসদে সিদ্ধান্ত: মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট শেনবাউম ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেনবাউমকে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ বা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে পেরু। মেক্সিকোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার অল্প সময়ের মধ্যেই দেশটি এই পদক্ষেপ নিয়েছে। সিদ্ধান্তের ফলে শেনবাউমের পেরু প্রবেশ এখন নিষিদ্ধ।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) পেরুর পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে ভোট হয়। ১৩০ জন সাংসদের মধ্যে ৬৩ জন শেনবাউমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পক্ষে ভোট দেন, বিপক্ষে ছিলেন ৩৪ জন। এর মাধ্যমে প্রস্তাবটি সহজেই পাস হয়।
সম্প্রতি মেক্সিকো সরকার পেরুর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেটসি চাভেজকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন তীব্র হয়। বেটসি গত সপ্তাহে লিমায় অবস্থিত মেক্সিকোর দূতাবাসে আশ্রয় নেন। এর জেরে গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) পেরুর প্রেসিডেন্ট হোসে হেরির নেতৃত্বাধীন সরকার মেক্সিকোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
এরপরই মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা আসে। সাধারণত এই ধরনের ঘোষণা কূটনৈতিক অসন্তোষের ইঙ্গিত দেয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে দেশত্যাগে বাধ্য করার মতো কঠোর বার্তা বহন করে।
ভোটাভুটির পর পেরুর কংগ্রেসের সভাপতি ফার্নান্দো রোস্পিগ্লিওসি বলেন, এই সিদ্ধান্ত সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করে এবং মেক্সিকোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পদক্ষেপের পক্ষে পার্লামেন্টের ঐক্যকে প্রতিফলিত করে।
আলোচনার সময় পররাষ্ট্র সম্পর্ক কমিটির সদস্য সাংসদ এরনেস্তো বুস্তামান্তে অভিযোগ করেন, মাদক চোরাচালানকারীদের সঙ্গে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট শেনবাউমের যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা এমন একজন নেতাকে দেশে ঢুকতে দিতে পারি না, যিনি মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশে লিপ্ত এবং নিজ দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন।”
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেটসি চাভেজ ২০২২ সালের কথিত অভ্যুত্থানচেষ্টার মামলায় অভিযুক্ত। প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলোর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে তিনি একই বছরের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বল্প সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, কাস্তিলো যখন কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেন, তখন চাভেজ সেই পদক্ষেপে সহায়তা করেছিলেন। পরবর্তীতে কাস্তিলো অভিশংসিত হয়ে গ্রেফতার হন। চাভেজকেও ২০২৩ সালের জুনে আটক করা হয়, তবে সেপ্টেম্বরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। দোষী প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।



















