বাগেরহাটে টেলিস্কোপে চাঁদ-তারা দেখে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস
বাগেরহাটে শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করা হয় এক ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতার—টেলিস্কোপে চাঁদ, তারা, গ্রহ ও মহাকাশ দেখা। বুধবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাগেরহাট সদর উপজেলার উদ্দীপন বদর-সামছু বিদ্যানিকেতনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (SPSB)।
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন সামছ উদ্দিন নাহার ট্রাস্টের চীফ ফেসিলিটেটর সুব্রত কুমার মুখার্জি, এসপিএসবি’র সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. রেজাউল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ নাসির খান সৈকত, আঞ্চলিক সমন্বয়ক মাহমুদ শোভন, মেন্টর ফারজানা আক্তার লিমা ও রুবাইয়েদসহ প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
প্রথমবার টেলিস্কোপে মহাকাশ দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত নবম শ্রেণির ছাত্রী তামান্না আক্তার বলল, “চাঁদ দেখার সময় মনে হচ্ছিল আমি যেন পৃথিবীর বাইরে চলে গেছি! বইয়ে যা পড়েছি, আজ নিজ চোখে দেখা সত্যিই অবিশ্বাস্য।”
আরেক শিক্ষার্থী রাহাত হোসেন জানায়, “আগে ভাবতাম মহাকাশ আমাদের থেকে অনেক দূরে। কিন্তু আজ বুঝলাম, বিজ্ঞান শিখলে আমরাও একদিন সেখানে পৌঁছাতে পারব।”
জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ ২০২৫ (৪–১০ অক্টোবর) উপলক্ষে “Living in Space” বা “মহাকাশে বসবাস” প্রতিপাদ্যে দিনব্যাপী এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ‘তারায় তারায় খচিত’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে শিক্ষার্থীরা নিজের হাতে টেলিস্কোপ পরিচালনা করে আকাশ পর্যবেক্ষণের সুযোগ পায়, যা তাদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি নতুন কৌতূহল ও আগ্রহ জাগায়।
সুব্রত কুমার মুখার্জি বলেন, “গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের জন্য এমন আয়োজন একেবারে নতুন। তারা শিখছে, প্রশ্ন করছে, আর বিজ্ঞানের আনন্দ নিজেরা অনুভব করছে—এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এমন আয়োজন আরও ছড়িয়ে পড়া উচিত দেশের গ্রামাঞ্চলে।”
বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির কোষাধ্যক্ষ নাসির খান সৈকত বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুরাও যেন বিজ্ঞানের আলোয় বেড়ে ওঠে। পাঠ্যবইয়ের বাইরে এসে আকাশ দেখার মাধ্যমে তারা বুঝতে পারছে, বিজ্ঞান কতটা বাস্তব ও সুন্দর।”
তিনি আরও যোগ করেন, “মহাকাশ, রোবটিক্স ও জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে শিশুদের আগ্রহই একদিন তাদের দেশের প্রযুক্তি ও গবেষণার নেতৃত্বে নিয়ে যাবে। আমরা শুধু তাদের কৌতূহলের আগুনটা জ্বালিয়ে দিতে চাই।”