ঢাকা ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo বাম দল ছাড়া কি সম্ভব হতো জুলাই বিপ্লব? জানুন তাদের আসল অবদান! Logo “শাহরুখ, রানি ও করণের জয় নিয়ে গৌরীর আবেগঘন বার্তা!” Logo ‘সাইয়ারা’: নতুন মুখ আর সাধারণ গল্পে বলিউডে সফলতার ছোঁয়া! Logo বিএনপি প্রস্তুত জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে: সালাহউদ্দিন আহমেদ Logo বাংলাদেশির ভাগ্যে জ্বলজ্বল করছে ৬৬ কোটি টাকার লটারির প্রাইজ! Logo শাকিবের ‘দুই স্ত্রী’ ইস্যুতে জয়ের তীব্র মন্তব্য ভাইরাল Logo গাজা ইস্যুতে ট্রাম্পের স্পষ্ট মন্তব্য: ‘গণহত্যা নয়, এটা যুদ্ধ’ Logo মেয়েকে নিয়ে গুজব ছড়াতেই তীব্র জবাব দিলেন পরীমণি Logo সিডনির ঐতিহাসিক ব্রিজে ফিলিস্তিনের পক্ষে জনস্রোত, বিশ্ববাসীর নজর কাড়লো অস্ট্রেলিয়া Logo হাসপাতালে চিকিৎসা নয়, আগে ছাড়পত্র—শেখ হাসিনার আদেশের দাবি আদালতে

বাম দল ছাড়া কি সম্ভব হতো জুলাই বিপ্লব? জানুন তাদের আসল অবদান!

নিজস্ব সংবাদ : চিন্ময় দে আনন্দ

ছবি : সংগৃহিত

জুলাইয়ের ঐতিহাসিক আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বাম রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে, সিপিবি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতো প্রগতিশীল দলগুলো আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুর পরপরই সিপিবি রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রথম প্রেসক্লাব থেকে মিছিল করে। ওই আন্দোলনে সিপিবির চারজন কর্মী প্রাণ হারান এবং শতাধিক আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

জুলাইয়ের প্রথম দিকে সরকারবিরোধী নানা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হয় বামপন্থী দলগুলো। বিশেষ করে কোটা সংস্কার, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ছিল স্পষ্ট। এই ধারাবাহিকতায় সিপিবি ১৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সামনে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও আবু সাঈদের মৃত্যুতে তারা স্থান পরিবর্তন করে প্রতিবাদ মিছিল করে প্রেসক্লাবে।

পরের দিনগুলোতে রাজধানী ছাড়িয়ে সারা দেশেই বাম দলগুলোর সক্রিয়তা বাড়তে থাকে। ১৯ জুলাই গণতন্ত্র মঞ্চের ব্যানারে তারা সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে, যেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও ঘটে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রবিরোধী লড়াইয়ে বরাবরের মতো এবারও আমরা প্রথম সারিতে ছিলাম। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমরা পাশে ছিলাম।’

৩০ জুলাই সিপিবির সাংস্কৃতিক সংগঠনের ‘প্রতিবাদী গানের মিছিল’ থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জড়ো হয়ে পড়ে জিপিওর আশেপাশের সড়কে। এরপর ১ আগস্ট শাহবাগে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

সরকারের পক্ষ থেকে দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়তে থাকে। কারফিউ, গুলি ও গণগ্রেফতার ছাপিয়ে আন্দোলন এক বিশাল রূপ নেয়। তখনই ২ আগস্ট নাগরিক সমাজের ব্যানারে বের হয় ‘দ্রোহযাত্রা’। এই যাত্রায় বামপন্থী রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং ছাত্ররা নেতৃত্বে থাকেন। ৯ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন সেখানে রূপ নেয় সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে।

৩ আগস্ট শহীদ মিনারে বিশাল সমাবেশে প্রগতিশীল দলগুলো একত্রিত হয়। সেদিনই এক কণ্ঠে উচ্চারিত হয়: “দফা এক, দাবি এক—শেখ হাসিনার পদত্যাগ।”

চূড়ান্ত সংঘর্ষ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট আসে পরিবর্তনের ভোর। কারফিউ ভেঙে লাখো মানুষ রাস্তায় নামে। আন্দোলনের চূড়ান্ত সাফল্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে পরিণতি ঘটে এই ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৫৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
০ বার পড়া হয়েছে

বাম দল ছাড়া কি সম্ভব হতো জুলাই বিপ্লব? জানুন তাদের আসল অবদান!

আপডেট সময় ০৪:৫৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

জুলাইয়ের ঐতিহাসিক আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বাম রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে, সিপিবি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতো প্রগতিশীল দলগুলো আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুর পরপরই সিপিবি রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রথম প্রেসক্লাব থেকে মিছিল করে। ওই আন্দোলনে সিপিবির চারজন কর্মী প্রাণ হারান এবং শতাধিক আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

জুলাইয়ের প্রথম দিকে সরকারবিরোধী নানা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হয় বামপন্থী দলগুলো। বিশেষ করে কোটা সংস্কার, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ছিল স্পষ্ট। এই ধারাবাহিকতায় সিপিবি ১৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সামনে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও আবু সাঈদের মৃত্যুতে তারা স্থান পরিবর্তন করে প্রতিবাদ মিছিল করে প্রেসক্লাবে।

পরের দিনগুলোতে রাজধানী ছাড়িয়ে সারা দেশেই বাম দলগুলোর সক্রিয়তা বাড়তে থাকে। ১৯ জুলাই গণতন্ত্র মঞ্চের ব্যানারে তারা সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে, যেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও ঘটে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রবিরোধী লড়াইয়ে বরাবরের মতো এবারও আমরা প্রথম সারিতে ছিলাম। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমরা পাশে ছিলাম।’

৩০ জুলাই সিপিবির সাংস্কৃতিক সংগঠনের ‘প্রতিবাদী গানের মিছিল’ থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জড়ো হয়ে পড়ে জিপিওর আশেপাশের সড়কে। এরপর ১ আগস্ট শাহবাগে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

সরকারের পক্ষ থেকে দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়তে থাকে। কারফিউ, গুলি ও গণগ্রেফতার ছাপিয়ে আন্দোলন এক বিশাল রূপ নেয়। তখনই ২ আগস্ট নাগরিক সমাজের ব্যানারে বের হয় ‘দ্রোহযাত্রা’। এই যাত্রায় বামপন্থী রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং ছাত্ররা নেতৃত্বে থাকেন। ৯ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন সেখানে রূপ নেয় সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে।

৩ আগস্ট শহীদ মিনারে বিশাল সমাবেশে প্রগতিশীল দলগুলো একত্রিত হয়। সেদিনই এক কণ্ঠে উচ্চারিত হয়: “দফা এক, দাবি এক—শেখ হাসিনার পদত্যাগ।”

চূড়ান্ত সংঘর্ষ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট আসে পরিবর্তনের ভোর। কারফিউ ভেঙে লাখো মানুষ রাস্তায় নামে। আন্দোলনের চূড়ান্ত সাফল্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে পরিণতি ঘটে এই ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের।