ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo রাঙ্গামাটির ক্রীড়া অবকাঠামো নিয়ে হতাশ বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর Logo সোজা আঙুলে না উঠলে বাঁকা করব, ঘি আমাদের লাগবেই: জামায়াত নেতা তাহের Logo তিন বছরে রাহা: ভাইয়ের মেয়েকে জন্মদিনে আবেগঘন বার্তা রণবীরের বোনের Logo ট্রাম্পের দাবি: ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ৮ যুদ্ধবিমান ধ্বংস, তার মধ্যস্থাতেই শান্তি স্থাপন Logo প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কাঠামোতে বড় পরিবর্তন Logo জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি তুললেন বিএনপি নেতা আলাল Logo ইমরান হাশমির কারণে স্কুলে যেতে লজ্জা পাচ্ছেন তার ছেলে আয়ান! Logo স্বর্ণপ্রেমীদের জন্য সুখবর! কমেছে ভরিপ্রতি দাম Logo প্রেম, পরকীয়া আর বিতর্কে টালমাটাল ব্রিটিশ রাজপরিবার Logo সুদানে আরএসএফ বাহিনীর তাণ্ডব, মানবিক বিপর্যয় তীব্র

বাম দল ছাড়া কি সম্ভব হতো জুলাই বিপ্লব? জানুন তাদের আসল অবদান!

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি : সংগৃহিত

জুলাইয়ের ঐতিহাসিক আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বাম রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে, সিপিবি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতো প্রগতিশীল দলগুলো আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুর পরপরই সিপিবি রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রথম প্রেসক্লাব থেকে মিছিল করে। ওই আন্দোলনে সিপিবির চারজন কর্মী প্রাণ হারান এবং শতাধিক আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

জুলাইয়ের প্রথম দিকে সরকারবিরোধী নানা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হয় বামপন্থী দলগুলো। বিশেষ করে কোটা সংস্কার, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ছিল স্পষ্ট। এই ধারাবাহিকতায় সিপিবি ১৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সামনে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও আবু সাঈদের মৃত্যুতে তারা স্থান পরিবর্তন করে প্রতিবাদ মিছিল করে প্রেসক্লাবে।

পরের দিনগুলোতে রাজধানী ছাড়িয়ে সারা দেশেই বাম দলগুলোর সক্রিয়তা বাড়তে থাকে। ১৯ জুলাই গণতন্ত্র মঞ্চের ব্যানারে তারা সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে, যেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও ঘটে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রবিরোধী লড়াইয়ে বরাবরের মতো এবারও আমরা প্রথম সারিতে ছিলাম। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমরা পাশে ছিলাম।’

৩০ জুলাই সিপিবির সাংস্কৃতিক সংগঠনের ‘প্রতিবাদী গানের মিছিল’ থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জড়ো হয়ে পড়ে জিপিওর আশেপাশের সড়কে। এরপর ১ আগস্ট শাহবাগে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

সরকারের পক্ষ থেকে দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়তে থাকে। কারফিউ, গুলি ও গণগ্রেফতার ছাপিয়ে আন্দোলন এক বিশাল রূপ নেয়। তখনই ২ আগস্ট নাগরিক সমাজের ব্যানারে বের হয় ‘দ্রোহযাত্রা’। এই যাত্রায় বামপন্থী রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং ছাত্ররা নেতৃত্বে থাকেন। ৯ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন সেখানে রূপ নেয় সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে।

৩ আগস্ট শহীদ মিনারে বিশাল সমাবেশে প্রগতিশীল দলগুলো একত্রিত হয়। সেদিনই এক কণ্ঠে উচ্চারিত হয়: “দফা এক, দাবি এক—শেখ হাসিনার পদত্যাগ।”

চূড়ান্ত সংঘর্ষ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট আসে পরিবর্তনের ভোর। কারফিউ ভেঙে লাখো মানুষ রাস্তায় নামে। আন্দোলনের চূড়ান্ত সাফল্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে পরিণতি ঘটে এই ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৫৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
৮৯ বার পড়া হয়েছে

বাম দল ছাড়া কি সম্ভব হতো জুলাই বিপ্লব? জানুন তাদের আসল অবদান!

আপডেট সময় ০৪:৫৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

জুলাইয়ের ঐতিহাসিক আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বাম রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে, সিপিবি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতো প্রগতিশীল দলগুলো আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুর পরপরই সিপিবি রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রথম প্রেসক্লাব থেকে মিছিল করে। ওই আন্দোলনে সিপিবির চারজন কর্মী প্রাণ হারান এবং শতাধিক আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

জুলাইয়ের প্রথম দিকে সরকারবিরোধী নানা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হয় বামপন্থী দলগুলো। বিশেষ করে কোটা সংস্কার, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ছিল স্পষ্ট। এই ধারাবাহিকতায় সিপিবি ১৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সামনে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও আবু সাঈদের মৃত্যুতে তারা স্থান পরিবর্তন করে প্রতিবাদ মিছিল করে প্রেসক্লাবে।

পরের দিনগুলোতে রাজধানী ছাড়িয়ে সারা দেশেই বাম দলগুলোর সক্রিয়তা বাড়তে থাকে। ১৯ জুলাই গণতন্ত্র মঞ্চের ব্যানারে তারা সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে, যেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও ঘটে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রবিরোধী লড়াইয়ে বরাবরের মতো এবারও আমরা প্রথম সারিতে ছিলাম। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমরা পাশে ছিলাম।’

৩০ জুলাই সিপিবির সাংস্কৃতিক সংগঠনের ‘প্রতিবাদী গানের মিছিল’ থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জড়ো হয়ে পড়ে জিপিওর আশেপাশের সড়কে। এরপর ১ আগস্ট শাহবাগে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

সরকারের পক্ষ থেকে দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়তে থাকে। কারফিউ, গুলি ও গণগ্রেফতার ছাপিয়ে আন্দোলন এক বিশাল রূপ নেয়। তখনই ২ আগস্ট নাগরিক সমাজের ব্যানারে বের হয় ‘দ্রোহযাত্রা’। এই যাত্রায় বামপন্থী রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং ছাত্ররা নেতৃত্বে থাকেন। ৯ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন সেখানে রূপ নেয় সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে।

৩ আগস্ট শহীদ মিনারে বিশাল সমাবেশে প্রগতিশীল দলগুলো একত্রিত হয়। সেদিনই এক কণ্ঠে উচ্চারিত হয়: “দফা এক, দাবি এক—শেখ হাসিনার পদত্যাগ।”

চূড়ান্ত সংঘর্ষ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট আসে পরিবর্তনের ভোর। কারফিউ ভেঙে লাখো মানুষ রাস্তায় নামে। আন্দোলনের চূড়ান্ত সাফল্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে পরিণতি ঘটে এই ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের।