অন্যান্যবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবলে স্বাগতিক দেশ নির্বাচনে যে ভোটের আয়োজন, সেটিতে একটু ভাটা পড়েছিলো এবার। প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় আগেই নির্ধারিত হয়ে গেছিল ২০৩০ ও ২০৩৪ বিশ্বকাপ কোন কোন দেশে গড়াতে যাচ্ছে। তবে ফিফার এক অভিনব কায়দায় তৃতীয়বারের মতো এশিয়ার মাটিতে বসতে যাচ্ছে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ খ্যাত বিশ্বকাপ ফুটবলের। অপরদিকে, আয়োজক তকমা পেয়ে গেলেও ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএ) এক প্রশ্নবানে পড়েছে সৌদি আরব। এর যথার্থ উত্তরও দিয়েছে উপসাগরীয় দেশটি।
আয়োজকের মর্যাদা পাবার পর নতুন ইস্যু আসে সৌদি আরবের সামনে। ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) সৌদি আরবের কাছে জানতে চায় ১০ বছর বাদে দেশটিতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে ভক্তদের নিরাপত্তার বিষয়ে। এফএ বোর্ড গত মাসে সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশনের সাথে দেখা করে তাদের বিড নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে।
এফএ বলে, আমরা তাদের (সৌদি আরব) এলজিবিটিকিউ ফ্যানসহ ২০৩৪ সালে দেশটিতে আসা সমস্ত ফুটবল ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা সবার জন্য একটি নিরাপদ ও উপভোগ্য আসর উপহার দিতে পারবে।
এফএ’র তরফ থেকে আরও বলা হয়, ফুটবল একটি বৈশ্বিক খেলা। খেলাধুলা সকল ধর্ম ও সংস্কৃতিসহ সকলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখায়।
ফিফা এবার সদস্য দেশগুলোকে ভোট দেয়ার জন্য ‘টু ইন ওয়ান’ সিস্টেমের আবির্ভাব ঘটায়। এতে একই সাথে দুইটি বিশ্বকাপের আয়োজক নির্ধারণের জন্য একটি ভোট দেয়ার পদ্ধতি সামনে আনে। ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজন করতে একক প্রার্থী ছিল সৌদি আরব, যার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই।
এখন এমনভাবে ভোট দেয়ার সিস্টেম ছিল না, যেখানে ২০৩০ বিশ্বকাপের দেশগুলোকে ভোট দিয়ে আয়োজনের স্বীকৃতি দেয়া যাবে আবার সৌদি আরবকে আয়োজক হিসেবে পরের বিশ্বকাপে পছন্দ না। অর্থাৎ, পর্তুগাল-মরক্কো-স্পেনকে ভোট দেয়ার মানে হলো পরের বিশ্বকাপে সৌদি আরবকেও ভোট দেয়া।
আবার, সৌদিকে ২০৩৪ আয়োজক হিসেবে পছন্দ না করার মানে হলো আগের বিশ্বকাপে সেই তিন দেশকে আয়োজক হিসেবে না চাওয়া। তাই ফিফার এই কায়দায় অনেকটা অনুষ্ঠানিকমাত্রা-ই যোগ হয়েছিলো কেবল। আগেই বোঝা যাচ্ছিলো কোথায় হতে যাচ্ছে পরের দুই বিশ্বকাপ।
এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ব্যালটও ব্যবহার করেনি ফিফা। অনলাইনে হওয়া কংগ্রেসে নির্দেশনা দেয়া হয় কোনো বিতর্ক ছাড়াই ‘হাত উঁচিয়ে’ নিজেদের অবস্থান জানান দেয়ার। ভোটাররা দুই বিশ্বকাপের আয়োজক হতে আগ্রহীদের নাম শোনার পর হাততালি দিয়েই সমর্থন জানিয়েছেন। সমালোচকেরা আইন ভঙ্গের কথা বললেও ফিফা কিছুদিন আগে নিয়ম পরিবর্তনের কথা জানিয়ে দিয়েছিল। তারা বলেছিল সব কনফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলেই পরিবর্তনটা করা হয়েছে। তবে কেন দুই বিশ্বকাপের আয়োজক বেছে নেয়ার ভোট একবারে নেয়া হবে, অবশ্য সেই ব্যাখ্যা দেয়নি বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা।