ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বপ্ন ভাঙতে যাচ্ছে ইসরায়েল?
ইসরায়েল পশ্চিম তীরকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করেছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোরিচ এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, কয়েকটি অঞ্চল বাদে পশ্চিম তীরের বেশিরভাগ এলাকাকে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের আওতায় আনা হবে। তিনি দাবি করেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সম্ভাবনাকে একেবারেই শেষ করে দিতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
১৯৬৭ সালে ইসরায়েল পশ্চিম তীর দখল করে। পরবর্তীতে ১৯৯০-এর দশকে অসলো চুক্তির আওতায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ দেওয়ার জন্য অঞ্চলটিকে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’—এই তিনভাগে ভাগ করা হয়। কিন্তু ৫ বছরের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে তিন দশক ধরে অঞ্চলটি একইভাবে বিভক্ত রয়েছে।
গত ২৩ জুলাই ইসরায়েলি সংসদ নেসেট আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিম তীর সংযুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। এ সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর লিকুদ দলসহ জোটের অন্যান্য দল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।
বর্তমানে পশ্চিম তীরের ১৮% এলাকা (এরিয়া এ) ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য নির্ধারিত, যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ প্রশাসন চালায়। ২২% এলাকা (এরিয়া বি) বেসামরিকভাবে আব্বাস প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নিরাপত্তা পুরোপুরি ইসরায়েলের হাতে। আর বাকি ৬০% এরিয়া ‘সি’ পুরোপুরি ইসরায়েলের দখলে। এখানেই অবৈধভাবে বসবাস করছে প্রায় পাঁচ লাখ ইসরায়েলি এবং এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদও মূলত তাদের নিয়ন্ত্রণে।
ইসরায়েল এখন প্রায় ৩০ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য অল্প কিছু জায়গা রেখে পশ্চিম তীরের বৃহৎ অংশ নিজেদের অধীনে নিতে চায়। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ গাজা ও পশ্চিম তীরকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্নকে ধ্বংস করবে।
অর্থমন্ত্রী স্মোরিচ বলেন, “জুডাইয়া ও সামারিয়ায় ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার সময় এসেছে। আমরা এমন কোনো পরিস্থিতি চাই না যেখানে আমাদের ছোট ভূখণ্ড ভাগ হয়ে যাবে বা এর কেন্দ্রে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র গড়ে উঠবে।”
তবে আন্তর্জাতিক মহল দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে অবৈধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে আসছে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এই পদক্ষেপকে স্বীকৃতি দেয় না।