নেপালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী: কে এই সুশীলা কার্কি?
নেপালে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন সুশীলা কার্কি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন।
১৯৫২ সালের ৭ জুন বিরাটনগরে জন্ম নেওয়া সুশীলা দীর্ঘ কর্মজীবনে নেপালের বিচার বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ছিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের প্রথম ও একমাত্র নারী প্রধান বিচারপতি। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তিনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নেন এবং দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থানের কারণে আলোচনায় আসেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানবিক বিষয়ে স্নাতক এবং ভারতের বারাণসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে আইনশাস্ত্রে স্নাতক হয়ে ১৯৭৮ সালে ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করেন।
১৯৯০ সালে পঞ্চায়েতবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে তিনি কারাবন্দি হন। কারাগারে কাটানো অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি পরবর্তীতে ‘কারা’ নামে একটি উপন্যাস লেখেন।
কর্মজীবনে ২০০৮ সালে নেপাল বার অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র অ্যাডভোকেট হন সুশীলা। ২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্টে অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান এবং এক বছর পর স্থায়ী বিচারপতি হন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার নির্ভীক অবস্থান তাকে আলাদা পরিচিতি এনে দেয়। সাবেক মন্ত্রী জয়প্রকাশ গুপ্তাকে দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করাও তার অন্যতম সাফল্য।
তবে ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অপসারণ প্রস্তাব আনা হয়, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করা হয়। জনমতের চাপ এবং আদালতের হস্তক্ষেপে সেই প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। এরপর ২০১৭ সালের ৬ জুন তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
অবসরের পরও তিনি সামাজিক কর্মকাণ্ড, নাগরিক আন্দোলন এবং দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে সক্রিয় থাকেন। নেপালি, ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় দক্ষ সুশীলা বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করেছেন এবং বিচারিক স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে এখনও সম্মানিত।