ঢাকা ০১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে নবজাতকের মৃত্যু, আহত দুই নারী Logo দেশজুড়ে তাপমাত্রা সামান্য কমার সম্ভাবনা, শেষ দিকে বাড়বে শীতের অনুভূতি Logo ময়মনসিংহে ডাকসু নেত্রী রাফিয়ার বাসার গেটে দুর্বৃত্তদের আগুন, তদন্তে পুলিশ Logo চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে প্রাইভেটকার পড়ে সাইকেল আরোহীর মৃত্যু Logo পাকিস্তানের সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ—তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন অধ্যায় Logo বিক্ষোভের উত্তাপে নেপাল, কারফিউ জারি করে প্রশাসন Logo নবী (সা.)-এর নামকরণ—স্বপ্ন, ইলহাম ও ভবিষ্যদ্বাণী Logo স্ত্রী কি স্বামীর নাম নেবে? জেনে নিন ইসলামের বিধান Logo শেয়ার বাজার মামলায় আবারও আলোচনায় সাকিব Logo হাসিনা–কামালকে ফেরাতে সরকারের নতুন পদক্ষেপ আলোচনায়

হাসিনা বিরোধী রায় দেখায়—আইনের সামনে সবাই সমান: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব সংবাদ :

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে যে শাস্তির রায় ঘোষণা করেছে, তা আবারও প্রমাণ করেছে যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যতোই শক্তিশালী হোক, কোনো ব্যক্তি আইনের ঊর্ধ্বে নন— এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের আদালতের এ রায় শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়ও গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিফলিত হয়েছে। তার মতে, এই সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষের জন্য অন্তত আংশিক হলেও ন্যায়বিচারের স্বস্তি এনে দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বহু বছরের দমন-পীড়নে দুর্বল হয়ে পড়া গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠনের সন্ধিক্ষণে দেশ রয়েছে। যে ঘটনাগুলোর বিচার হয়েছে— তরুণ ও শিশু বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ— তা দেশের আইন, নাগরিক অধিকার এবং রাষ্ট্র–নাগরিক সম্পর্কের ভিত্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। এসব ঘটনা বাংলাদেশের মূল মূল্যবোধ— মর্যাদা, সাহস ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকার—কে গভীরভাবে আঘাত করেছে।

প্রায় ১,৪০০ মানুষের মৃত্যু শুধু পরিসংখ্যান নয়; তারা ছিলেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ নাগরিক। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রকাশিত সাক্ষ্যে উঠে এসেছে, কীভাবে নিরস্ত্র মানুষের ওপর এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানো হয়েছিল। ইউনূস বলেন, এই রায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের বেদনার স্বীকৃতি দেয় এবং অপরাধীদের জবাবদিহির বিষয়ে বিচারব্যবস্থার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতার ক্ষেত্রেও পুনরায় নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে। পরিবর্তনের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামা শিক্ষার্থী ও নাগরিকরা বিষয়টি গভীরভাবে অনুধাবন করেছিলেন, আর অনেকেই জীবনের সর্বোচ্চ মূল্য দিয়ে তা প্রমাণ করেছেন।

আগামী দিনের লক্ষ্য শুধু আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়— রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও জনগণের মধ্যকার আস্থা পুনর্গঠন করাও জরুরি বলে জানানো হয় বিবৃতিতে। কেন মানুষ প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের জন্য ঝুঁকি নেয়, তা বোঝা এবং সেই আস্থা অর্জনের মতো ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টার মতে, আজকের রায় সেই দীর্ঘ পথচলার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

তিনি বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, সাহস ও বিনয়ের সমন্বয়ে বাংলাদেশ সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে পারবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রত্যেক নাগরিকের সম্ভাবনার প্রতি সম্মান দেখিয়ে ন্যায়বিচারকে দেশে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১০:৫৯:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
১৯ বার পড়া হয়েছে

হাসিনা বিরোধী রায় দেখায়—আইনের সামনে সবাই সমান: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় ১০:৫৯:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে যে শাস্তির রায় ঘোষণা করেছে, তা আবারও প্রমাণ করেছে যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যতোই শক্তিশালী হোক, কোনো ব্যক্তি আইনের ঊর্ধ্বে নন— এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের আদালতের এ রায় শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়ও গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিফলিত হয়েছে। তার মতে, এই সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষের জন্য অন্তত আংশিক হলেও ন্যায়বিচারের স্বস্তি এনে দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বহু বছরের দমন-পীড়নে দুর্বল হয়ে পড়া গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠনের সন্ধিক্ষণে দেশ রয়েছে। যে ঘটনাগুলোর বিচার হয়েছে— তরুণ ও শিশু বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ— তা দেশের আইন, নাগরিক অধিকার এবং রাষ্ট্র–নাগরিক সম্পর্কের ভিত্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। এসব ঘটনা বাংলাদেশের মূল মূল্যবোধ— মর্যাদা, সাহস ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকার—কে গভীরভাবে আঘাত করেছে।

প্রায় ১,৪০০ মানুষের মৃত্যু শুধু পরিসংখ্যান নয়; তারা ছিলেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ নাগরিক। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রকাশিত সাক্ষ্যে উঠে এসেছে, কীভাবে নিরস্ত্র মানুষের ওপর এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানো হয়েছিল। ইউনূস বলেন, এই রায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের বেদনার স্বীকৃতি দেয় এবং অপরাধীদের জবাবদিহির বিষয়ে বিচারব্যবস্থার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতার ক্ষেত্রেও পুনরায় নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে। পরিবর্তনের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামা শিক্ষার্থী ও নাগরিকরা বিষয়টি গভীরভাবে অনুধাবন করেছিলেন, আর অনেকেই জীবনের সর্বোচ্চ মূল্য দিয়ে তা প্রমাণ করেছেন।

আগামী দিনের লক্ষ্য শুধু আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়— রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও জনগণের মধ্যকার আস্থা পুনর্গঠন করাও জরুরি বলে জানানো হয় বিবৃতিতে। কেন মানুষ প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের জন্য ঝুঁকি নেয়, তা বোঝা এবং সেই আস্থা অর্জনের মতো ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টার মতে, আজকের রায় সেই দীর্ঘ পথচলার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

তিনি বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, সাহস ও বিনয়ের সমন্বয়ে বাংলাদেশ সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে পারবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রত্যেক নাগরিকের সম্ভাবনার প্রতি সম্মান দেখিয়ে ন্যায়বিচারকে দেশে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে।