ঢাকা ০৮:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo রায়েরবাজার গণকবরে দাফন হওয়া শহীদদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে, পরিবার চাইলে মরদেহ নেওয়ার সুযোগ Logo জুলাই গণহত্যা মামলা: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু আগামীকাল, হতে পারে সরাসরি সম্প্রচার Logo যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানায় বন্দুক হামলায় ৪ জন নিহত Logo আগস্টের ৫ তারিখের আগেই প্রকাশ পাবে জুলাই ঘোষণাপত্র: তথ্য উপদেষ্টা Logo মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু, আহত ২ Logo কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে ৬ জন প্রকৌশলী ও স্থপতিকে বরখাস্ত Logo রাশিয়ার ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ডকৃত ইতিহাসে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ শক্তিশালী ভূমিকম্প হিসেবে চিহ্নিত Logo শুধু নির্বাচিত সরকারেরই সংস্কারের অধিকার রয়েছে: ড. মঈন খান Logo রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টায় ১৮৬ জন গ্রেফতার, দায়ের ৩৩টি মামলা Logo সালমান এফ রহমান ও তার ছেলের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে অনিয়মের অভিযোগে বড় অঙ্কের জরিমানা

৬০০ বছর আগের বিলুপ্ত মোয়া পাখির পুনরুত্থান সম্ভব?

নিজস্ব সংবাদ :

অস্কারজয়ী পরিচালক পিটার জ্যাকসন (লেজেন্ডারি সিনেমা দ্য লর্ড অব দ্য রিংস, দ্য হবিট) শৈশব থেকেই কল্পনা করতেন—বিলুপ্ত প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কি না? জেট প্যাক বা উড়ন্ত গাড়ি যেমন এখনও বাস্তব হয়নি, তেমনি ‘ডি-এক্সটিংশন’ (বিলুপ্ত প্রাণীর পুনরুজ্জীবন) প্রযুক্তিও একসময় কল্পনা ছিল। কিন্তু এখন তা বাস্তব হয়ে উঠছে।

চলতি বছরের এপ্রিলে, ডালাসভিত্তিক বায়োটেক কোম্পানি কলোসাল বায়োসায়েন্স ঘোষণা দেয় যে তারা ১০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া ডায়ার উলফ (এক প্রকার ভয়ঙ্কর নেকড়ে) ফিরিয়ে এনেছে। বর্তমানে তিনটি ডায়ার উলফ ২,০০০ একরের একটি গোপন অভয়ারণ্যে বাস করছে।

এরপর কোম্পানিটি ডোডো পাখি, উলি ম্যামথ, তাসমানিয়ান টাইগারসহ (থাইলাসিন) আরও কয়েকটি প্রজাতি ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে।

এবার তাদের তালিকায় যুক্ত হয়েছে মোয়া—একটি ১২ ফুট (৩.৬ মিটার) উঁচু, ৫০০ পাউন্ড (২৩০ কেজি) ওজনের উড়তে অক্ষম দৈত্যাকার পাখি, যা ৬০০ বছর আগে নিউজিল্যান্ডে মানুষের শিকারে বিলুপ্ত হয়।

পিটার জ্যাকসন, যিনি নিজেও নিউজিল্যান্ডের নাগরিক, কলোসালের বিনিয়োগকারী এবং এই প্রকল্পে মাওরি আদিবাসীদের গবেষণা কেন্দ্র (Ngāi Tahu)-এর সঙ্গে সহযোগিতার সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছেন।

মাওরি আদিবাসীদের গবেষণা কেন্দ্রের প্রত্নতত্ত্ববিদ কাইল ডেভিস বলেন, ‘মোয়া আমাদের গোষ্ঠীর পুরাণ ও ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই গবেষণায় অংশগ্রহণ আমাদের জন্য গর্বের।’

কলোসালের সিইও বেন ল্যাম বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে মাওরি সম্প্রদায়ের উদ্যোগ। আমরা তাদের গবেষণা দলেরই অংশ হয়ে গেছি।’

মোয়া ছিল ‘কর্নারস্টোন স্পিশিজ’—এই পাখিগুলো জঙ্গলের গঠন ও বাস্তুতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করত। তাদের বিলুপ্তির ফলে হাস্টের ঈগলসহ (যারা শুধু মোয়া শিকার করত) বেশ কিছু প্রজাতিও হারিয়ে যায়। মোয়া ফিরে এলে নিউজিল্যান্ডের বনাঞ্চলের প্রাচীন ভারসাম্য কিছুটা ফিরে পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা গবেষকদের।

 

কলোসালের প্রযুক্তি শুধু বিলুপ্ত প্রাণী ফিরিয়েই আনছে না, বরং বর্তমানের বিপন্ন প্রজাতির জিনগত বৈচিত্র্য বাড়াতেও সাহায্য করছে। যেমন: ডায়ার উলফ প্রকল্পের জ্ঞান ব্যবহার করে লাল নেকড়ের জিনোমে বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে।

ক্যান্টারবারি মিউজিয়ামের কিউরেটর পল স্কোফিল্ড (যিনি মোয়ার জিনোম নিয়ে ২০টি গবেষণাপত্র লিখেছেন) বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের কিছু পাখি জিনগত বৈচিত্র্যহীনতার কারণে বিপন্ন। কলোসালের প্রযুক্তি তাদের বাঁচাতেও সাহায্য করতে পারে।’

তবে মোয়া পাখিকে ফিরিয়ে আনতে এখনও সময় লাগবে। তবে কলোসাল ইতিমধ্যে মোয়ার জিনোম সিকোয়েন্সিং শুরু করেছে এবং আদিবাসী মাওরি সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে এই ঐতিহাসিক প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখছে।

সূত্র: টাইম ম্যাগাজিন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:২৯:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
৪৪ বার পড়া হয়েছে

৬০০ বছর আগের বিলুপ্ত মোয়া পাখির পুনরুত্থান সম্ভব?

আপডেট সময় ০৭:২৯:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

অস্কারজয়ী পরিচালক পিটার জ্যাকসন (লেজেন্ডারি সিনেমা দ্য লর্ড অব দ্য রিংস, দ্য হবিট) শৈশব থেকেই কল্পনা করতেন—বিলুপ্ত প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কি না? জেট প্যাক বা উড়ন্ত গাড়ি যেমন এখনও বাস্তব হয়নি, তেমনি ‘ডি-এক্সটিংশন’ (বিলুপ্ত প্রাণীর পুনরুজ্জীবন) প্রযুক্তিও একসময় কল্পনা ছিল। কিন্তু এখন তা বাস্তব হয়ে উঠছে।

চলতি বছরের এপ্রিলে, ডালাসভিত্তিক বায়োটেক কোম্পানি কলোসাল বায়োসায়েন্স ঘোষণা দেয় যে তারা ১০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া ডায়ার উলফ (এক প্রকার ভয়ঙ্কর নেকড়ে) ফিরিয়ে এনেছে। বর্তমানে তিনটি ডায়ার উলফ ২,০০০ একরের একটি গোপন অভয়ারণ্যে বাস করছে।

এরপর কোম্পানিটি ডোডো পাখি, উলি ম্যামথ, তাসমানিয়ান টাইগারসহ (থাইলাসিন) আরও কয়েকটি প্রজাতি ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে।

এবার তাদের তালিকায় যুক্ত হয়েছে মোয়া—একটি ১২ ফুট (৩.৬ মিটার) উঁচু, ৫০০ পাউন্ড (২৩০ কেজি) ওজনের উড়তে অক্ষম দৈত্যাকার পাখি, যা ৬০০ বছর আগে নিউজিল্যান্ডে মানুষের শিকারে বিলুপ্ত হয়।

পিটার জ্যাকসন, যিনি নিজেও নিউজিল্যান্ডের নাগরিক, কলোসালের বিনিয়োগকারী এবং এই প্রকল্পে মাওরি আদিবাসীদের গবেষণা কেন্দ্র (Ngāi Tahu)-এর সঙ্গে সহযোগিতার সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছেন।

মাওরি আদিবাসীদের গবেষণা কেন্দ্রের প্রত্নতত্ত্ববিদ কাইল ডেভিস বলেন, ‘মোয়া আমাদের গোষ্ঠীর পুরাণ ও ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই গবেষণায় অংশগ্রহণ আমাদের জন্য গর্বের।’

কলোসালের সিইও বেন ল্যাম বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে মাওরি সম্প্রদায়ের উদ্যোগ। আমরা তাদের গবেষণা দলেরই অংশ হয়ে গেছি।’

মোয়া ছিল ‘কর্নারস্টোন স্পিশিজ’—এই পাখিগুলো জঙ্গলের গঠন ও বাস্তুতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করত। তাদের বিলুপ্তির ফলে হাস্টের ঈগলসহ (যারা শুধু মোয়া শিকার করত) বেশ কিছু প্রজাতিও হারিয়ে যায়। মোয়া ফিরে এলে নিউজিল্যান্ডের বনাঞ্চলের প্রাচীন ভারসাম্য কিছুটা ফিরে পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা গবেষকদের।

 

কলোসালের প্রযুক্তি শুধু বিলুপ্ত প্রাণী ফিরিয়েই আনছে না, বরং বর্তমানের বিপন্ন প্রজাতির জিনগত বৈচিত্র্য বাড়াতেও সাহায্য করছে। যেমন: ডায়ার উলফ প্রকল্পের জ্ঞান ব্যবহার করে লাল নেকড়ের জিনোমে বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে।

ক্যান্টারবারি মিউজিয়ামের কিউরেটর পল স্কোফিল্ড (যিনি মোয়ার জিনোম নিয়ে ২০টি গবেষণাপত্র লিখেছেন) বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের কিছু পাখি জিনগত বৈচিত্র্যহীনতার কারণে বিপন্ন। কলোসালের প্রযুক্তি তাদের বাঁচাতেও সাহায্য করতে পারে।’

তবে মোয়া পাখিকে ফিরিয়ে আনতে এখনও সময় লাগবে। তবে কলোসাল ইতিমধ্যে মোয়ার জিনোম সিকোয়েন্সিং শুরু করেছে এবং আদিবাসী মাওরি সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে এই ঐতিহাসিক প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখছে।

সূত্র: টাইম ম্যাগাজিন।