ঢাকা ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভারতীয় দল প্রকাশ, জায়গা হয়নি শুভমান গিলের, ফিরেছেন ঈশান কিষাণ Logo শহীদ হাদির স্মরণে জার্সি উৎসর্গ করবে রাজশাহী Logo ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: আপিল সংক্রান্ত সময়সূচিতে পরিবর্তন আনল ইসি Logo দুর্নীতির দ্বিতীয় মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির ১৭ বছরের সাজা Logo জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শরীফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত Logo ময়মনসিংহে যুবক হত্যাকাণ্ড ও মরদেহে আগুন দেয়ার চেষ্টা: র‍্যাবের হাতে ৭ জন Logo শহিদ ওসমান হাদির জানাজায় মানুষের ঢল, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জনসমুদ্র Logo মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানুষের স্রোত, পূর্ণ জনসমাবেশ Logo মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পৌঁছেছে হাদির Logo ঢাকায় ১৫ দিনের সফর শেষে লন্ডনে ফিরলেন ডা. জুবাইদা রহমান

অসম্পূর্ণ ঘোষণাপত্রে আপত্তি জানিয়ে অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার ব্যাখ্যা দিলেন হাসনাত

নিজস্ব সংবাদ :

 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণ) হাসনাত আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, ঘোষণাপত্রের অনুষ্ঠানে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে অনুপস্থিত ছিলেন, কারণ ওই আয়োজনে আন্দোলনের মূল সংগঠক, আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এই বিষয়টিকে তিনি রাজনৈতিক ও নৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

দল থেকে পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ) জবাবে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) হাসনাত বলেন, ঘোষণাপত্র প্রণয়নের সময় আন্দোলনের প্রকৃত চালিকাশক্তিদের মতামতের কোনো প্রতিফলন ছিল না। অনেককেই মত প্রকাশের সুযোগ তো দেওয়া হয়নি, এমনকি ন্যূনতম স্বীকৃতিটুকুও তারা পাননি।

তিনি দাবি করেন, ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়ায় এমন কিছু বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা আন্দোলনের চেতনাকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করে না। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, এটি পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের উপর ছেড়ে দেওয়া হবে—যা হাসনাতের মতে, সত্য নয় এবং সংবিধানে কাঙ্ক্ষিত মৌলিক পরিবর্তনের পথে বাধা সৃষ্টি করবে। এনসিপি শুরু থেকেই গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

হাসনাত আরও বলেন, ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান থেকে নেতৃত্বদানকারী এবং আন্দোলনে আহতদের বাদ দেওয়া হয় জেনে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেন অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ার। পরিবর্তে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ভাবতে কক্সবাজারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি জানান, কক্সবাজার সফরের আগে তিনি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন এবং পরে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারীর মাধ্যমে সফরের কথা জানান। দলীয় সমন্বয়কের সম্মতি পাওয়ার পরই তিনি সফরে যান। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন দলের ঘনিষ্ঠ সদস্য যুক্ত হন।

সফর প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, এটি ছিল একান্ত রাজনৈতিক চর্চার অংশ। সাগরের পাড়ে বসে গণঅভ্যুত্থান, নাগরিক কমিটি এবং ভবিষ্যতের সংবিধান প্রণয়নের রূপরেখা নিয়ে গভীরভাবে ভাবার উদ্দেশ্যে তিনি কক্সবাজার যান। তিনি একে কোনোভাবেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা অপরাধ হিসেবে দেখেন না।

তবে সফরের সময় কিছু বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যেমন তিনি মার্কিন সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে হাসনাত জানান, এ গুজব সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, পিটার হাস ওই সময় দেশে ছিলেন না, বরং ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন।

সবশেষে হাসনাত তার বক্তব্যে বলেন, “ঘুরতে যাওয়া কোনো অপরাধ নয়। অনেক সময় ইতিহাস সৃষ্টি হয় না কেবল মিটিং-সেমিনারে, বরং নির্জন চিন্তা-ভাবনার মধ্য দিয়েও।” তিনি দলের প্রতি আনুগত্য ও রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখে শোকজের জবাব দিয়েছেন বলে জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:০৬:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
১২৮ বার পড়া হয়েছে

অসম্পূর্ণ ঘোষণাপত্রে আপত্তি জানিয়ে অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার ব্যাখ্যা দিলেন হাসনাত

আপডেট সময় ০৮:০৬:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণ) হাসনাত আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, ঘোষণাপত্রের অনুষ্ঠানে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে অনুপস্থিত ছিলেন, কারণ ওই আয়োজনে আন্দোলনের মূল সংগঠক, আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এই বিষয়টিকে তিনি রাজনৈতিক ও নৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

দল থেকে পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ) জবাবে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) হাসনাত বলেন, ঘোষণাপত্র প্রণয়নের সময় আন্দোলনের প্রকৃত চালিকাশক্তিদের মতামতের কোনো প্রতিফলন ছিল না। অনেককেই মত প্রকাশের সুযোগ তো দেওয়া হয়নি, এমনকি ন্যূনতম স্বীকৃতিটুকুও তারা পাননি।

তিনি দাবি করেন, ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়ায় এমন কিছু বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা আন্দোলনের চেতনাকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করে না। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, এটি পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের উপর ছেড়ে দেওয়া হবে—যা হাসনাতের মতে, সত্য নয় এবং সংবিধানে কাঙ্ক্ষিত মৌলিক পরিবর্তনের পথে বাধা সৃষ্টি করবে। এনসিপি শুরু থেকেই গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

হাসনাত আরও বলেন, ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান থেকে নেতৃত্বদানকারী এবং আন্দোলনে আহতদের বাদ দেওয়া হয় জেনে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেন অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ার। পরিবর্তে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ভাবতে কক্সবাজারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি জানান, কক্সবাজার সফরের আগে তিনি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন এবং পরে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারীর মাধ্যমে সফরের কথা জানান। দলীয় সমন্বয়কের সম্মতি পাওয়ার পরই তিনি সফরে যান। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন দলের ঘনিষ্ঠ সদস্য যুক্ত হন।

সফর প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, এটি ছিল একান্ত রাজনৈতিক চর্চার অংশ। সাগরের পাড়ে বসে গণঅভ্যুত্থান, নাগরিক কমিটি এবং ভবিষ্যতের সংবিধান প্রণয়নের রূপরেখা নিয়ে গভীরভাবে ভাবার উদ্দেশ্যে তিনি কক্সবাজার যান। তিনি একে কোনোভাবেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা অপরাধ হিসেবে দেখেন না।

তবে সফরের সময় কিছু বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যেমন তিনি মার্কিন সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে হাসনাত জানান, এ গুজব সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, পিটার হাস ওই সময় দেশে ছিলেন না, বরং ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন।

সবশেষে হাসনাত তার বক্তব্যে বলেন, “ঘুরতে যাওয়া কোনো অপরাধ নয়। অনেক সময় ইতিহাস সৃষ্টি হয় না কেবল মিটিং-সেমিনারে, বরং নির্জন চিন্তা-ভাবনার মধ্য দিয়েও।” তিনি দলের প্রতি আনুগত্য ও রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখে শোকজের জবাব দিয়েছেন বলে জানান।