আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান ভারতের সীমানা থেকে গ্রেফতার
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রাক্তন সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান আরিফ ভারতের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাকে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা কাকডাঙ্গা সীমান্তের কাছাকাছি থেকে ধরে ভারতের স্বরূপনগর থানায় হস্তান্তর করেছে। তবে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হয়নি। আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত ৩টি হত্যাকাণ্ড এবং ২টি হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার কামরুজ্জামান জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় আরিফুজ্জামান সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হাকিমপুর চেকপোস্টে পৌঁছানোর সময় বিএসএফ তাকে গ্রেফতার করে। পরিচয় যাচাইয়ের পর তার পুলিশের পরিচয় নিশ্চিত হয়।
রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, আরিফুজ্জামানের বাড়ি নীলফামারী জেলায়। গত বছর ৫ আগস্ট তিনি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এপিবিএনে বদলি হওয়ার পর থেকে পলাতক ছিলেন।
গত বছর ১৪ আগস্ট সরকারি অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আরিফুজ্জামান শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলায় মোট ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে, যাদের মধ্যে ছয়জন গ্রেফতার রয়েছে। তিনি এছাড়া রংপুরের তাজহাট থানায় শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। কোতোয়ালি থানায় শহীদ মেরাজুল ইসলাম ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলার আসামি এবং দুইটি হত্যাচেষ্টা মামলাতেও তিনি অভিযুক্ত।
রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সবচেয়ে জোরদার ভূমিকা পালন করেছিলেন আরিফুজ্জামান। ১৬ জুলাই ২০২৩ তারিখে রংপুরে ছাত্রদের মিছিল থামাতে তিনি লাঠিচার্জের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আবু সাঈদকে গুলি করার সময়ও তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং নিজেও গুলি চালিয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ভারতের পক্ষ থেকে তাকে কিভাবে বাংলাদেশে ফেরত আনা হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। ভারতীয় সীমান্তে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা করা হতে পারে, যা দুই দেশের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমাধান হবে। এ ব্যাপারে নথিপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
গত বছর জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত এক শিক্ষার্থীও জানান, আরিফুজ্জামান শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যন্ত আগ্রাসী ছিলেন এবং আন্দোলন দমনে জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন।