কম্বোডিয়ার অভিযোগ: সীমান্তে ‘ভূতের শব্দ’ বাজিয়ে মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে সীমান্ত অঞ্চলে রাতে ভয়াবহ ধরনের শব্দ—যেমন ‘ভূতের আর্তনাদ’ ও বিমানের ইঞ্জিনের মতো আওয়াজ—বাজানোর অভিযোগ তুলেছে কম্বোডিয়া। দেশটির জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতে, এটি এক ধরনের মানসিক চাপ তৈরি করার কৌশল, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান সিনেট সভাপতি হুন সেন জানান, এই বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্ককে একটি অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে রাতের বেলা লাউডস্পিকারে বিকট ও আতঙ্কজনক শব্দ বাজিয়ে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করা হচ্ছে।
কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কমিশনের তথ্যমতে, সীমান্ত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বলছে—থাই সেনাবাহিনী রাতের আঁধারে লাউডস্পিকারে ভূতের চিৎকারের মতো আওয়াজ এবং তীব্র যান্ত্রিক শব্দ বাজাচ্ছে। এসব শব্দ স্থানীয়দের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, মানসিক উদ্বেগ বাড়াচ্ছে এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণ হচ্ছে। কমিশনের মতে, এ ধরণের কাজ দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
এখন পর্যন্ত থাইল্যান্ড সরকার এই অভিযোগের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য দেয়নি।
কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি মালয়েশিয়ার সাথেও আলোচনা করেছেন, যেহেতু দেশটি দুই দেশের মধ্যে জুলাইয়ে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিল।
অন্যদিকে, থাই কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, কম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকায় নতুন করে স্থলমাইন বসাচ্ছে। জুলাইয়ের পর থেকে কমপক্ষে ছয়জন থাই সেনা বিস্ফোরণে আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। তবে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, এই বিস্ফোরণগুলো পুরনো যুদ্ধকালীন সময়ে বসানো মাইনের কারণে ঘটেছে।
যুদ্ধবিরতির পরও, ‘ভৌতিক শব্দ’, পারস্পরিক অভিযোগ ও সীমান্ত উত্তেজনা—সব মিলিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সম্পর্ক আবারও জটিল হয়ে উঠছে। জাতিসংঘ পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া এই অভিযোগ আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
















