ঢাকা ১১:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo খাসিয়ামারা নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জনপদ, আতঙ্কে শত শত পরিবার Logo সুশান্তের পর এবার কার্তিক আরিয়ানকে ঘিরে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, সরব অমল মালিক Logo জাহাঙ্গীর কবির পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক Logo নিউইয়র্ক নির্বাচনে জয় পেয়ে ভারতে বিতর্কের কেন্দ্রে জোহরান মামদানি Logo দুবাই গোল্ডেন ভিসায় বড় ছাড়, বাংলাদেশিদের জন্য নতুন সুযোগ Logo বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (৭ জুলাই) Logo নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও দেশের সঠিক পথে অগ্রযাত্রা সম্ভব: মির্জা ফখরুল Logo যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহু Logo শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনে দ্বিতীয় দিনের শুনানি আজ Logo ৭ জুলাই: দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বেগবান করে ‘বাংলা ব্লকেড’

খাসিয়ামারা নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জনপদ, আতঙ্কে শত শত পরিবার

নিজস্ব সংবাদ :

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নে খাসিয়ামারা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, পুকুর ও জনপদ। ভাঙনের তীব্রতায় এখন এলাকাবাসী আতঙ্কে দিন পার করছেন। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলের তোড়ে খাসিয়ামারা নদী তার দিক পরিবর্তন করে গ্রাস করছে গ্রামের পর গ্রাম।

সাম্প্রতিক সময়ের তুলনায় এবার ভাঙনের মাত্রা অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর, টেংরাটিলা, টিলাগাঁওসহ একাধিক গ্রাম ইতিমধ্যেই নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও বসতঘর নদীতে ধসে পড়ছে, কোথাও আবার পুকুর, বাগান, ফসলি জমি হারিয়ে গেছে নদীর গর্ভে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙনের ফলে স্থানীয় একটি আলীপুর বাজার, নির্মানাধীন খাসিয়ামারা সেতু, আলীপুর নূরানী কিন্ডারগার্টেন, টেংরাটিলার আব্দুল করিম ও ব্যবসায়ী আব্দুর রহিমের বসতভিটা, পুকুর ও ফসলি জমি ইতোমধ্যে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ইতোমধ্যে আলীপুর গ্রামের কয়েকটি পরিবার বসতবাড়ি অন্যত্র স্থানান্তর করেছেন। তবে স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকায় ভাঙন আতঙ্ক নিয়েই বসবাস করছেন সাধারণ মানুষ।

টেংরাটিলা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, ‘আমার বসতবাড়ির অর্ধেকটাই নদীতে চলে গেছে। এইভাবে আর ক’দিন চললে আমাদের ঘরবাড়ি আর থাকবে না।’

একই গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, আমার ফসলি জমির অর্ধেকই খাসিয়ামারা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন অবশিষ্ট পুকুর ও বসতবাড়িটুকু বিলীন হওয়ার পথে।’

আলীপুর গ্রামের ভানু বিবি বলেন, ‘আমার জমিজমা, দোকানপাট ও বসতবাড়ি সব নদী গর্ভে চলে গেছে। গত ৫ বছরে অন্তত কয়েকবার বাড়ি স্থানান্তর করেছি। এখন আর স্থানান্তর করার মতো জমি টুকুও নাই। ভাঙন অব্যাহত থাকলে পরিবার পরিজন নিয়ে পথে নামতে হবে।’

একই গ্রামের মফিজ মিয়া বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে চাষ করা জমিটা চোখের সামনে নদীতে ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে কেউ এখনো এসে খোঁজও নেয়নি।’

সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ বলেন, ‘খাসিয়ামারা নদী এখন একটি ভয়ংকর বিপদে পরিণত হয়েছে। স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে না তুললে অচিরেই পুরো জনপদ হুমকির মুখে পড়বে। ইতোমধ্যে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দোয়ারাবাজারের এসও সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।’

দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুপ রতন সিংহ জানান, ‘ভাঙন কবলিত আলীপুর ও টেংরাটিলা এলাকা পরিদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলবো।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:১২:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
১ বার পড়া হয়েছে

খাসিয়ামারা নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জনপদ, আতঙ্কে শত শত পরিবার

আপডেট সময় ১১:১২:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নে খাসিয়ামারা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, পুকুর ও জনপদ। ভাঙনের তীব্রতায় এখন এলাকাবাসী আতঙ্কে দিন পার করছেন। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলের তোড়ে খাসিয়ামারা নদী তার দিক পরিবর্তন করে গ্রাস করছে গ্রামের পর গ্রাম।

সাম্প্রতিক সময়ের তুলনায় এবার ভাঙনের মাত্রা অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর, টেংরাটিলা, টিলাগাঁওসহ একাধিক গ্রাম ইতিমধ্যেই নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও বসতঘর নদীতে ধসে পড়ছে, কোথাও আবার পুকুর, বাগান, ফসলি জমি হারিয়ে গেছে নদীর গর্ভে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙনের ফলে স্থানীয় একটি আলীপুর বাজার, নির্মানাধীন খাসিয়ামারা সেতু, আলীপুর নূরানী কিন্ডারগার্টেন, টেংরাটিলার আব্দুল করিম ও ব্যবসায়ী আব্দুর রহিমের বসতভিটা, পুকুর ও ফসলি জমি ইতোমধ্যে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ইতোমধ্যে আলীপুর গ্রামের কয়েকটি পরিবার বসতবাড়ি অন্যত্র স্থানান্তর করেছেন। তবে স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকায় ভাঙন আতঙ্ক নিয়েই বসবাস করছেন সাধারণ মানুষ।

টেংরাটিলা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, ‘আমার বসতবাড়ির অর্ধেকটাই নদীতে চলে গেছে। এইভাবে আর ক’দিন চললে আমাদের ঘরবাড়ি আর থাকবে না।’

একই গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, আমার ফসলি জমির অর্ধেকই খাসিয়ামারা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন অবশিষ্ট পুকুর ও বসতবাড়িটুকু বিলীন হওয়ার পথে।’

আলীপুর গ্রামের ভানু বিবি বলেন, ‘আমার জমিজমা, দোকানপাট ও বসতবাড়ি সব নদী গর্ভে চলে গেছে। গত ৫ বছরে অন্তত কয়েকবার বাড়ি স্থানান্তর করেছি। এখন আর স্থানান্তর করার মতো জমি টুকুও নাই। ভাঙন অব্যাহত থাকলে পরিবার পরিজন নিয়ে পথে নামতে হবে।’

একই গ্রামের মফিজ মিয়া বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে চাষ করা জমিটা চোখের সামনে নদীতে ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে কেউ এখনো এসে খোঁজও নেয়নি।’

সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ বলেন, ‘খাসিয়ামারা নদী এখন একটি ভয়ংকর বিপদে পরিণত হয়েছে। স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে না তুললে অচিরেই পুরো জনপদ হুমকির মুখে পড়বে। ইতোমধ্যে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দোয়ারাবাজারের এসও সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।’

দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুপ রতন সিংহ জানান, ‘ভাঙন কবলিত আলীপুর ও টেংরাটিলা এলাকা পরিদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলবো।