বিনামূল্যে পাওয়া ফ্ল্যাট, রাজনৈতিক প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো থিংকট্যাঙ্কের সাথে যুক্ত ভাইবোন, বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ- সব মিলিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছে ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের ওপরে। ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ দু’জন ব্যক্তির কাছ থেকে উপহার হিসেবে ফ্ল্যাট নেয়ার কারণে বৃটিশ অনেক এমপিই এখন টিউলিপের পদত্যাগ দাবি করছেন।
এমন অবস্থায় যদি টিউলিপ এখন পদত্যাগও করেন, তবু বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের যেটুকু ক্ষতি হওয়ার তা ইতোমধ্যে হয়ে গেছে বলে মনে করেন স্কাই নিউজের রাজনৈতিক বিশ্লেষক রব পাওয়েল।
তিনি লিখেছেন, বেশির ভাগ রাজনৈতিক কেলেঙ্কারির মধ্যে এমন একটি পয়েন্ট আছে, যার পরে পদত্যাগ আরও বেশি প্রশ্নের ঝুঁকি সৃষ্টি করে। ফলে টিউলিপ সিদ্দিকের জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। একই রকম বিপদ প্রধানমন্ত্রীর কিয়ের স্টারমারের।
যদি টিউলিপ এখন পদত্যাগ করেন, তাহলে যুক্তরাজ্যের অগণিত মানুষ অবাক হবেন যে, এটা কেন আরও আগে হলো না। কেন ডাউনিং স্ট্রিট এই কাহিনীকে এতটা পথ আসতে দিলো। এতে আরও ক্ষতি হবে।
প্রধান রাজনৈতিক প্রতিনিধি জন ক্রেইগ লিখেছেন, টিউলিপ বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও তার খালা শেখ হাসিনার থেকে দূরত্ব রক্ষার চেষ্টা করেছেন। দাবি করেছেন, তারা কখনোই রাজনীতি নিয়ে কথা বলেননি।
কিন্তু স্কাই নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, নতুন সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক একটি ব্লগ লিখেছিলেন। তাতে শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি রাজনৈতিকভাবে কতটা ঘনিষ্ঠ ছিলেন তা নিয়ে গর্ব প্রকাশ করেছেন এবং তাদের একসাথে ছবি প্রকাশ করেছেন।
এর আগে, ২০০৮ সালের শেষের দিকে এবং ২০০৯ সালের শুরুর দিকে টিউলিপ সিদ্দিক তখন লেবার পার্টির একজন কর্মী। তখন লেখা পোস্টে তার খালা শেখ হাসিনার জাতীয় নির্বাচনে তার জন্য যে প্রচারণা চালিয়েছেন এবং কিভাবে তার বিজয় উদযাপন করেছেন তার বর্ণনা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সাথে একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করার সময় প্রকল্পের মোট ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছিলো। মূলত টিউলিপ সিদ্দিকের খালা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন যে ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে তারই আওতায় পড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক।
এছাড়াও এতো অভিযোগের মাঝে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন করায় এক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে। ওই সময় সেই সাংবাদিক অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করতে ছাড়েননি তিনি।