ঢাকা ০৭:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, জানালেন মির্জা ফখরুল Logo সালমান শাহ হত্যা: সাবেক ভাবী সামিরাকে ঘিরে নতুন মন্তব্য শাহরানের Logo বিশেষ নিয়োগের দাবিতে শাহবাগে প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটদের পদযাত্রা বন্ধ করলো পুলিশ Logo পাকিস্তানগামী নদীতে বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ, পানির প্রবাহ কমাতে চায় আফগানিস্তান Logo সাবলেটের আড়ালে অপহরণচক্র: যেভাবে উদ্ধার হলো কামরাঙ্গীরচরের শিশু Logo জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে আলোচনায় একটি দল: সালাহউদ্দিন আহমদ Logo প্রিয় কুকুর হারিয়ে শহরজুড়ে মাইকিং Logo আমি শতভাগ আশাবাদী’: বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী আরিফ Logo গণভোট ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়: জামায়াত Logo স্বামী হত্যার অভিযোগে স্ত্রী আটক, চাঞ্চল্যকর তথ্য জানাল মেয়ে

পাকিস্তানগামী নদীতে বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ, পানির প্রবাহ কমাতে চায় আফগানিস্তান

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

আফগানিস্তানের তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত নদীগুলোর ওপর বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা কুনার নদীর ওপর দ্রুত বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি আফগানিস্তান–পাকিস্তান সীমান্তে সংঘাতের পর কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হলেও নতুন এই প্রকল্প আবারও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আফগানিস্তানের পানি ও জ্বালানি মন্ত্রী মোল্লা আব্দুল লতিফ মনসুর জানান, “আমাদের সর্বোচ্চ নেতা কুনার নদীতে বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে দ্রুত চুক্তি সম্পন্নেরও নির্দেশনা দিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আফগান জনগণের নিজেদের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার অধিকার রয়েছে। প্রকল্পটি পুরোপুরি দেশীয় উদ্যোগে বাস্তবায়িত হবে, বিদেশি সহায়তা ছাড়াই।”

কুনার নদী প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এটি হিন্দুকুশ পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন হয়ে আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার প্রদেশ অতিক্রম করে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় প্রবেশ করেছে। সেখানে এটি কাবুল নদীর সঙ্গে মিলিত হয়। পাকিস্তানে নদীটি ‘চিত্রাল নদী’ নামে পরিচিত।

কাবুল নদী আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্তঃসীমান্ত নদী। এটি পাকিস্তানের অ্যাটক এলাকায় গিয়ে সিন্ধু নদে মিলিত হয়—যা খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের সেচ ও পানির প্রধান উৎস।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, কুনার নদীর পানিপ্রবাহে বাঁধ সৃষ্টি হলে সিন্ধু নদীর প্রবাহও কমে যাবে। এর ফলে পাকিস্তানের কৃষি, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।

চলতি বছরের এপ্রিলে কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু পানি চুক্তির অধীনে সহযোগিতা স্থগিত করে। পরবর্তীতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে এবং মে মাসে সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। এই চুক্তি অনুযায়ী ভারত সতলজ, বিয়াস ও রাভি নদীর পানি ব্যবহারের অধিকার পায়, আর পাকিস্তান পায় ইন্দুস, ঝিলম ও চেনাব নদীর পানি ব্যবহারের সুযোগ।

সূত্র: এনডিটিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:৫৪:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
৫ বার পড়া হয়েছে

পাকিস্তানগামী নদীতে বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ, পানির প্রবাহ কমাতে চায় আফগানিস্তান

আপডেট সময় ০৫:৫৪:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

আফগানিস্তানের তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত নদীগুলোর ওপর বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা কুনার নদীর ওপর দ্রুত বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি আফগানিস্তান–পাকিস্তান সীমান্তে সংঘাতের পর কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হলেও নতুন এই প্রকল্প আবারও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আফগানিস্তানের পানি ও জ্বালানি মন্ত্রী মোল্লা আব্দুল লতিফ মনসুর জানান, “আমাদের সর্বোচ্চ নেতা কুনার নদীতে বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে দ্রুত চুক্তি সম্পন্নেরও নির্দেশনা দিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আফগান জনগণের নিজেদের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার অধিকার রয়েছে। প্রকল্পটি পুরোপুরি দেশীয় উদ্যোগে বাস্তবায়িত হবে, বিদেশি সহায়তা ছাড়াই।”

কুনার নদী প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এটি হিন্দুকুশ পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন হয়ে আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার প্রদেশ অতিক্রম করে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় প্রবেশ করেছে। সেখানে এটি কাবুল নদীর সঙ্গে মিলিত হয়। পাকিস্তানে নদীটি ‘চিত্রাল নদী’ নামে পরিচিত।

কাবুল নদী আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্তঃসীমান্ত নদী। এটি পাকিস্তানের অ্যাটক এলাকায় গিয়ে সিন্ধু নদে মিলিত হয়—যা খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের সেচ ও পানির প্রধান উৎস।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, কুনার নদীর পানিপ্রবাহে বাঁধ সৃষ্টি হলে সিন্ধু নদীর প্রবাহও কমে যাবে। এর ফলে পাকিস্তানের কৃষি, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।

চলতি বছরের এপ্রিলে কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু পানি চুক্তির অধীনে সহযোগিতা স্থগিত করে। পরবর্তীতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে এবং মে মাসে সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। এই চুক্তি অনুযায়ী ভারত সতলজ, বিয়াস ও রাভি নদীর পানি ব্যবহারের অধিকার পায়, আর পাকিস্তান পায় ইন্দুস, ঝিলম ও চেনাব নদীর পানি ব্যবহারের সুযোগ।

সূত্র: এনডিটিভি