মাছ-মাংস-সবজির দাম বেড়েই চলেছে, স্বস্তি নেই সাধারণ ক্রেতার
রাজধানীর বাজারে মাছ, মাংস ও সবজির দামে কোনো স্বস্তি নেই। ছুটির দিনে বাজারে গিয়ে ক্রেতারা দেখছেন, অনেক পণ্যের দাম আগের চেয়ে আরও বেশি। পূজা উপলক্ষে ইলিশের দাম আগুন, আর পোল্ট্রি মুরগির বাজারেও লেগেছে নতুন উত্তাপ। একইসাথে, বৃষ্টির প্রভাব কিছুটা কমলেও সবজির দামে কমার কোনো লক্ষণ নেই।
ইলিশের দাম ঊর্ধ্বমুখী, মিলছে না বড় সাইজ
বর্তমানে ইলিশের মৌসুম হলেও বাজারে বড় আকারের ইলিশের অভাব। বিক্রেতারা বলছেন, অনেক ইলিশ জেলেদের হাত ঘুরে চোরাইপথে ভারতে চলে যাচ্ছে। ফলে বাজারে ১ কেজির কাছাকাছি ওজনের নদীর ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ থেকে ২৮০০ টাকা কেজি দরে। আর ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ কিনতে হচ্ছে ১৬০০ টাকা কেজিতে।
অন্যান্য মাছের দামও নাগালের বাইরে
বর্ষাকালে নদ-নদী ও খাল-বিল থেকে মাছের সরবরাহ বেড়েছে। বাজারে পাবদা, শিংসহ নানা স্বাদের দেশি মাছ থাকলেও দাম বেশি। চাষের মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, আর দেশি মাছের দাম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় দামে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। ক্রেতারা বলছেন, মৌসুমে দাম কমার আশা করলেও বাস্তবে তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না।
পোল্ট্রির বাজারেও ঝাঁজ
ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন ১৯০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কমে ৩১০ টাকা কেজিতে এসেছে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়তি। তবে ডিমের বাজার এখনও স্থিতিশীল — লাল ডিম প্রতি ডজন ১৩০-১৩৫ টাকায় এবং সাদা ডিম ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে আগুন, কাঁচামরিচে ‘ঝাল’ সমস্যা
বৃষ্টির পরেও অনেক সবজির দাম নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। বাজারে বেশিরভাগ সবজির দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তবে কাঁচামরিচ এখন সবচেয়ে দামি — কেজিতে ২০০ টাকার বেশি। টমেটো, বেগুন, গাজরের মতো সবজির দামও তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। ব্যবসায়ীদের দাবি, আবাদ কম হওয়ায় সরবরাহ কম এবং পাইকারি ও খুচরা দামের ফারাকের কারণেই এই পরিস্থিতি।
ক্রেতাদের অভিযোগ: “যেদিকেই তাকাই, শুধু বাড়তি খরচ”
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, মাছ-মাংসের উচ্চমূল্যের কারণে সবজি দিয়ে কোনোভাবে দিন পার করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখন সবজির দামও সেই পথ বন্ধ করে দিচ্ছে। অনেকেই বাজারে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসছেন, কেননা সীমিত আয়ে চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।