ঢাকা ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভারতীয় দল প্রকাশ, জায়গা হয়নি শুভমান গিলের, ফিরেছেন ঈশান কিষাণ Logo শহীদ হাদির স্মরণে জার্সি উৎসর্গ করবে রাজশাহী Logo ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: আপিল সংক্রান্ত সময়সূচিতে পরিবর্তন আনল ইসি Logo দুর্নীতির দ্বিতীয় মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির ১৭ বছরের সাজা Logo জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শরীফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত Logo ময়মনসিংহে যুবক হত্যাকাণ্ড ও মরদেহে আগুন দেয়ার চেষ্টা: র‍্যাবের হাতে ৭ জন Logo শহিদ ওসমান হাদির জানাজায় মানুষের ঢল, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জনসমুদ্র Logo মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানুষের স্রোত, পূর্ণ জনসমাবেশ Logo মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পৌঁছেছে হাদির Logo ঢাকায় ১৫ দিনের সফর শেষে লন্ডনে ফিরলেন ডা. জুবাইদা রহমান

শুল্কহার কমানোয় বেড়েছে খেজুর আমদানি, দামে প্রভাব কেমন?

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

শুল্কহার কমানোয় বেড়েছে খেজুর আমদানি, দামে প্রভাব কেমন?

শুল্কহার কমানোর সুযোগে রেকর্ড আমদানির ফলে দেশের বাজারে অবশেষে খেজুরের দামে ধস নামতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ কেজির প্যাকেটে দাম কমেছে ২০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। গত এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে, যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় অন্তত ৮ হাজার মেট্রিক টন বেশি।

২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দিয়ে ৭৫ হাজার ২২০ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে। তার আগের বছর খেজুর আমদানি হয়েছিল ৬৭ হাজার ৩২৩ মেট্রিক টন। এমনকি জানুয়ারি মাসেই ৫১৯ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে। বিগত দুই বছর রমজানের শুরুতে খেজুরের বাজারে চরম অস্থিরতা থাকলেও এবার আগে-ভাগেই শুল্ক হার কমিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ কাউছার আলম পাটওয়ারী বলেন,সরকার খেজুর আমদানিতে পর্যাপ্ত ট্যাক্স কমিয়েছেন। এতে বেড়েছে খেজুর আমদানি।

 
কোনো রকম শ্রেণি বিভাগ ছাড়াই ২০২২-২৩ অর্থ বছর পর্যন্ত আমদানিকৃত খেজুরের উপর মাত্র ৫০ সেন্ট থেকে ২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারে শুল্কায়ন করতো চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ব্যবসায়ীরা কারসাজির মাধ্যমে খেজুরের দাম লাগামহীন করায় সরকার শেষ পর্যন্ত শুল্কহার বাড়িয়ে দেয়। তবে গত মাসেই আজোয়া-মরিয়ম-মেডজুল-মাবরুম এবং আম্বার খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি কেজিতে ৩ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার, আলজেরিয়া-তিউনিশিয়ান খেজুরে ২ দশমিক ৩০ মার্কিন ডলার, ইরাকের খেজুরে ১ মার্কিন ডলার শুল্কহার নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
 
চট্টগ্রামের ফলমন্ডির বিসমিল্লাহ স্টোরের মালিক আবুল হাসেম বলেন,শুল্ক কমায় কমছে খেজুরের দাম।  এখনও বেচাবিক্রি কম। তবে রোজা যত ঘনিয়ে আসবে, বেচাবিক্রি ততই বাড়বে।

 

চট্টগ্রামের ফলমন্ডির পাইকারি বিক্রেতা রাশেদ কামাল মুন্না বলেন, গত বছর যেসব খেজুরের কার্টন ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটি এবার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০০-৩৪০০ টাকায়। শুল্ক হ্রাসের প্রভাব পড়েছে খেজুরের বাজারে।
 
এছাড়া প্যাকেটজাত খেজুরে আড়াই ডলার, বস্তার শুকনো খেজুরে ২ মার্কিন ডলার এবং ভেজা খেজুরে ৭০ সেন্ট শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়। গত এক সপ্তাহে ৫ কেজির প্যাকেট খেজুরে প্রকার ভেদে দাম কমেছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে মেডজুল ৪ হাজার ১০০ টাকা, আজোয়া ৪ হাজার ৫০০ টাকা, সাফাবি ৩ হাজার ২০০ টাকা এবং মরিয়ম ৭ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
তবে ক্রেতারা বলছেন, সরকার যে হারে শুল্ক কমিয়েছে, সে অনুযায়ী দাম কমেনি খেজুরের। এখনও হাতের নাগালে আসেনি। দাম এত চড়া থাকলেও এবার রোজায় খেজুর কেনায় হিমশিম খেতে হবে।
 
এদিকে, সরকার খেজুরের আমদানি শুল্ক কমালেও ট্যারিফ নিয়ে আপত্তি রয়ে গেছে ব্যবসায়ীদের। বিশেষ করে অতিরিক্ত ট্যারিফ নির্ধারণের কারণে খেজুরের দর সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসছে না বলে অভিযোগ তাদের।
 
 
চট্টগ্রামের ফলমন্ডির ফ্রেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ডেটস গ্যালারির মালিক মোহাম্মদ শফিউল আজম বলেন,বিশ্ববাজার বিশ্লেষণ করে খেজুরের দাম নির্ধারণ করা জরুরি। এতে নিয়ন্ত্রণে আসবে বাজার।

 

চট্টগ্রামের ফলমন্ডির চট্টলা ডেটস শপের মালিক নাজমুল হাসান শেয়ান বলেন, সরকারের উচিত খেজুর আমদানিতে শুল্ক আরও কমানো। এতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসবে পণ্যটির দাম।
 
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বছরে অন্তত ৮০ হাজার মেট্রিক টন খেজুরের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে শুধু রমজান মাসেই ইফতারের অনুষঙ্গ হিসেবে খেজুরের চাহিদা ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:০৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
১১১ বার পড়া হয়েছে

শুল্কহার কমানোয় বেড়েছে খেজুর আমদানি, দামে প্রভাব কেমন?

আপডেট সময় ০৭:০৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শুল্কহার কমানোয় বেড়েছে খেজুর আমদানি, দামে প্রভাব কেমন?

শুল্কহার কমানোর সুযোগে রেকর্ড আমদানির ফলে দেশের বাজারে অবশেষে খেজুরের দামে ধস নামতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ কেজির প্যাকেটে দাম কমেছে ২০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। গত এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে, যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় অন্তত ৮ হাজার মেট্রিক টন বেশি।

২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দিয়ে ৭৫ হাজার ২২০ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে। তার আগের বছর খেজুর আমদানি হয়েছিল ৬৭ হাজার ৩২৩ মেট্রিক টন। এমনকি জানুয়ারি মাসেই ৫১৯ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে। বিগত দুই বছর রমজানের শুরুতে খেজুরের বাজারে চরম অস্থিরতা থাকলেও এবার আগে-ভাগেই শুল্ক হার কমিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ কাউছার আলম পাটওয়ারী বলেন,সরকার খেজুর আমদানিতে পর্যাপ্ত ট্যাক্স কমিয়েছেন। এতে বেড়েছে খেজুর আমদানি।

 
কোনো রকম শ্রেণি বিভাগ ছাড়াই ২০২২-২৩ অর্থ বছর পর্যন্ত আমদানিকৃত খেজুরের উপর মাত্র ৫০ সেন্ট থেকে ২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারে শুল্কায়ন করতো চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ব্যবসায়ীরা কারসাজির মাধ্যমে খেজুরের দাম লাগামহীন করায় সরকার শেষ পর্যন্ত শুল্কহার বাড়িয়ে দেয়। তবে গত মাসেই আজোয়া-মরিয়ম-মেডজুল-মাবরুম এবং আম্বার খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি কেজিতে ৩ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার, আলজেরিয়া-তিউনিশিয়ান খেজুরে ২ দশমিক ৩০ মার্কিন ডলার, ইরাকের খেজুরে ১ মার্কিন ডলার শুল্কহার নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
 
চট্টগ্রামের ফলমন্ডির বিসমিল্লাহ স্টোরের মালিক আবুল হাসেম বলেন,শুল্ক কমায় কমছে খেজুরের দাম।  এখনও বেচাবিক্রি কম। তবে রোজা যত ঘনিয়ে আসবে, বেচাবিক্রি ততই বাড়বে।

 

চট্টগ্রামের ফলমন্ডির পাইকারি বিক্রেতা রাশেদ কামাল মুন্না বলেন, গত বছর যেসব খেজুরের কার্টন ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটি এবার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০০-৩৪০০ টাকায়। শুল্ক হ্রাসের প্রভাব পড়েছে খেজুরের বাজারে।
 
এছাড়া প্যাকেটজাত খেজুরে আড়াই ডলার, বস্তার শুকনো খেজুরে ২ মার্কিন ডলার এবং ভেজা খেজুরে ৭০ সেন্ট শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়। গত এক সপ্তাহে ৫ কেজির প্যাকেট খেজুরে প্রকার ভেদে দাম কমেছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে মেডজুল ৪ হাজার ১০০ টাকা, আজোয়া ৪ হাজার ৫০০ টাকা, সাফাবি ৩ হাজার ২০০ টাকা এবং মরিয়ম ৭ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
তবে ক্রেতারা বলছেন, সরকার যে হারে শুল্ক কমিয়েছে, সে অনুযায়ী দাম কমেনি খেজুরের। এখনও হাতের নাগালে আসেনি। দাম এত চড়া থাকলেও এবার রোজায় খেজুর কেনায় হিমশিম খেতে হবে।
 
এদিকে, সরকার খেজুরের আমদানি শুল্ক কমালেও ট্যারিফ নিয়ে আপত্তি রয়ে গেছে ব্যবসায়ীদের। বিশেষ করে অতিরিক্ত ট্যারিফ নির্ধারণের কারণে খেজুরের দর সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসছে না বলে অভিযোগ তাদের।
 
 
চট্টগ্রামের ফলমন্ডির ফ্রেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ডেটস গ্যালারির মালিক মোহাম্মদ শফিউল আজম বলেন,বিশ্ববাজার বিশ্লেষণ করে খেজুরের দাম নির্ধারণ করা জরুরি। এতে নিয়ন্ত্রণে আসবে বাজার।

 

চট্টগ্রামের ফলমন্ডির চট্টলা ডেটস শপের মালিক নাজমুল হাসান শেয়ান বলেন, সরকারের উচিত খেজুর আমদানিতে শুল্ক আরও কমানো। এতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসবে পণ্যটির দাম।
 
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বছরে অন্তত ৮০ হাজার মেট্রিক টন খেজুরের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে শুধু রমজান মাসেই ইফতারের অনুষঙ্গ হিসেবে খেজুরের চাহিদা ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন।