সাবমেরিন ক্ষমতায় কার অবস্থান শক্তিশালী—যুক্তরাষ্ট্র না রাশিয়া?
বিশ্ব রাজনীতির দুই প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি—যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া—নৌবাহিনীর অন্যতম কৌশলগত উপাদান হিসেবে সাবমেরিন ব্যবস্থাকে দীর্ঘদিন ধরেই অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। পারমাণবিক ও প্রচলিত অস্ত্রে সজ্জিত ডুবোজাহাজের দিক থেকে উভয় দেশেরই শক্ত অবস্থান রয়েছে। তবে কিছু দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে থাকলেও, নির্দিষ্ট কিছু খাতে রাশিয়ার অবস্থানও কম নয়।
রাশিয়ার নৌবহরে এখনও ডিজেল চালিত সাবমেরিনের ব্যবহার থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্রের সব সাবমেরিনই পরমাণু শক্তি নির্ভর। সম্প্রতি সাবেক রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্র ভেদভেদেভের এক মন্তব্যের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুইটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দেন। এ ঘটনার পর থেকেই উভয় দেশের সাবমেরিন শক্তি নিয়ে আলোচনা আরও জোরালো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সাবমেরিন বহর ৬৭টি সক্রিয় ডুবোজাহাজ নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে ১৮টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম ওহাইও ক্লাস সাবমেরিন, যেগুলো “বুমার” নামে পরিচিত। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আক্রমণাত্মক সাবমেরিন হচ্ছে ভার্জিনিয়া ক্লাস, যার সংখ্যা ২২টি। আরও রয়েছে ২৪টি লস অ্যাঞ্জেলেস ক্লাস ও ৩টি অত্যাধুনিক সিউল্ফ ক্লাস সাবমেরিন।
এই সাবমেরিনগুলোতে ক্রুজ মিসাইল, টর্পেডো এবং জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রসহ নানা ধরণের অস্ত্র থাকে। যুদ্ধের পাশাপাশি এগুলোকে গুপ্তচরবৃত্তি ও নজরদারির মতো কৌশলগত কাজে ব্যবহার করা হয়।
অন্যদিকে রাশিয়ার সাবমেরিন বহরেও রয়েছে ৬৪টি সক্রিয় ইউনিট। এর মধ্যে ২৫টি পারমাণবিক শক্তিচালিত ব্যালিস্টিক মিসাইল বহনে সক্ষম সাবমেরিন, যেগুলোকে রুশ নৌশক্তির মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া ২৩টি ডিজেলচালিত সাবমেরিনও রয়েছে তাদের বহরে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের শুরু থেকেই রাশিয়া এই সাবমেরিনগুলো উপকূলীয় ও উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় মোতায়েন করে রেখেছে।
সর্বশেষ পরিস্থিতিতে বলা যায়, সাবমেরিন প্রযুক্তি ও ক্ষমতায় দুই দেশের মধ্যে ভারসাম্য রয়েছে। তবে আধুনিকীকরণ ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতায় যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা এগিয়ে থাকলেও, রাশিয়াও পিছিয়ে নেই কৌশলগত উপস্থিতিতে।