সুনামগঞ্জে জমি ও ঘাট দখল বিতর্ক: এনসিপি নেতার দাবি—‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা অভিযোগ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার চকবাজার এলাকায় দোকানের পেছনের জমি এবং খেয়াঘাট দখলের অভিযোগ ‘মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সুনামগঞ্জ জেলা শাখার প্রথম যুগ্ম সমন্বয়কারী আতাউর রহমান। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আতাউর রহমান বলেন, চকবাজারের ওই জমি তিনি বৈধভাবে ক্রয় করেছেন এবং পূর্বে মানবিক কারণে সেখানে দু’জনকে থাকার সুযোগ দেন। পরে তারা আওয়ামী লীগে যুক্ত হন। সম্প্রতি নিজ জমিতে পাকা ঘর নির্মাণ করতে চাইলে তাদের সরে যেতে বলেন। একজন সরে গেলেও অন্যজন জায়গা ছাড়তে অস্বীকৃতি জানায়। তার অভিযোগ, এরপরই উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের আহ্বায়ক ফরিদ আহমেদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তার ভাই কালাম ও ভাতিজা জুয়েল তার বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ অপপ্রচার চালাতে শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, ফরিদ আহমেদ নৌকা ঘাটের ইজারা নেয়ার জন্য ইউএনও’র কাছে সুপারিশ করতে তাকে অনুরোধ করেছিলেন। অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করায় প্রতিহিংসার বশে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে দাবি করেন আতাউর।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুপ রতন সিংহ বলেন, দোয়ারাবাজারের অস্থায়ী খেয়াঘাট পরিচালনার দায়িত্ব কারও একক হাতে নয়। স্থানীয় সাতটি ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান—যেমন মসজিদ ও মাদ্রাসা—এই ঘাটের দেখভাল করে থাকে। রাজনৈতিক নেতারা যা বলছেন, তা তাদের নিজস্ব অবস্থান থেকে করা মন্তব্য। ইউএনও আরও জানান, এ নিয়ে তার কাছে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ এখনও জমা পড়েনি।
এদিকে গত ৯ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সেখানে জুয়েল আহমদ অভিযোগ করেন, তার ‘জুয়েল স্টোর’ নামের একটি দোকান ও চাচার আরেকটি দোকান চকবাজারে রয়েছে। পেছনের কিছু খালি জায়গা নিয়ে সম্প্রতি এনসিপি নেতা আতাউর রহমান দাবি করছেন, তিনি জমিটি কিনেছেন এবং দখলে নিতে চাইছেন।
এই প্রসঙ্গে দোয়ারাবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফরিদ আহমেদ তারেক এনসিপি জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারীর কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
প্রধান সমন্বয়কারী দেওয়ান সাজাউর রাজা চৌধুরী বলেন, একজন ব্যবসায়ী তার দলের এক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন এবং তিনি সেটি গ্রহণ করে দলের কেন্দ্রীয় দফতরে পাঠিয়েছেন। তিনি জানান, অভিযোগকারী যে আওয়ামী লীগ নেতা, তা তিনি জানতেন না। তবে দলের যে-ই হোক, কোনো নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি বা দখলবাজির অভিযোগ এলে তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।
তিনি বলেন, “আমার দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আমার জন্য বিব্রতকর।”