স্ত্রী কি স্বামীর নাম নেবে? জেনে নিন ইসলামের বিধান
ইসলাম ব্যক্তির পরিচয়, বংশ এবং নসবকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে সংরক্ষণ করে। একজন নারী বিবাহের মাধ্যমে স্বামীর পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করলেও তার প্রকৃত বংশপরিচয় পিতৃসূত্রেই নির্ধারিত হয়। তাই বিবাহের পর স্বামীর নাম নিজের পরিচয়ে যুক্ত করা বা বংশপরিচয় পরিবর্তন করা নিয়ে কুরআন ও হাদিস উভয়েই পরিষ্কার দিকনির্দেশনা দিয়েছে।
ইসলামী শরিয়তে নিজের পিতার পরিচয় পরিবর্তন করা স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ। ফলে কোনো নারী যদি নিজের পিতার নাম বাদ দিয়ে স্বামীর নামকে বংশপরিচয়ের স্থানে বসান, তবে তা শরীয়তসম্মত নয়। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী কাগজপত্রে বা সামাজিক পরিচয়ে ‘অমুকের স্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে—যতক্ষণ পর্যন্ত বংশপরিচয় পরিবর্তন না হয়।
ইসলামে উত্তম রীতি হলো বাবার নামে পরিচিত হওয়া—যেমন ফাতিমা বিনতে মুহাম্মাদ বা ফাতিমা মুহাম্মদ। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য।
কুরআনের নির্দেশনা
কুরআন স্পষ্টভাবে বলে—
“তোমরা তাদেরকে তাদের পিতাদের নামে ডাকো—এটাই আল্লাহর কাছে অধিক ন্যায়সঙ্গত।” (আহযাব: ৫)
হাদিসে এ বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা
- নবী ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রকৃত পিতাকে ছেড়ে অন্য কাউকে পিতা বলে দাবি করে, তার জন্য জান্নাত হারাম।
- আরেক বর্ণনায় এসেছে, যে নিজের বংশপরিচয় বিকৃত করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।
- এমনকি এক হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে—যে ব্যক্তি নিজের সঙ্গে এমন বংশ সংযুক্ত করে যার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই, তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।
কোনটি নিষিদ্ধ?
- বাবার নাম মুছে ফেলে স্বামীর নামকে বংশপরিচয় বা পদবির স্থানে ব্যবহার করা।
উদাহরণ:
‘রাফিয়া বিনতে করিম’ → ‘রাফিয়া আহমদ’ (যদি এটি বংশপরিচয়ের পরিবর্তন হয়)
কোনটি বৈধ?
- বংশপরিচয় বজায় রেখে পরিচয়ের সুবিধার্থে স্বামীর পরিচয় যোগ করা—
যেমন, - রাফিয়া করিম (W/O Abdullah)
- Rafia Karim, spouse of Abdullah
এই ধরনের উল্লেখে বংশপরিচয় পরিবর্তন হয় না, তাই তা শরীয়তসম্মত।
সারসংক্ষেপ
ইসলাম বংশপরিচয়কে পবিত্র বলে গণ্য করে। নারীর বংশপরিচয় বিবাহের পরও পিতার মাধ্যমেই নির্ধারিত থাকে। ফলে শুধুমাত্র সামাজিক সুবিধার জন্য পরিচয়ে স্বামীর নাম উল্লেখ করা বৈধ হলেও বংশ বা পদবি হিসেবে স্বামীর নাম গ্রহণ করা শরীয়তসম্মত নয়।




















