বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ ভ্যারিয়েন্ট এক্সইসি (XEC) দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও হাসপাতালে ভর্তির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। গবেষকরা এখনও নিশ্চিত নন, কেন এমনটি ঘটছে।
২০২৪ সালে আবির্ভূত হওয়া নতুন ভ্যারিয়েন্টটিকে বলা হয়েছিল ওমিক্রনের একটি নতুন শাখা। যা জেনেটিক রিকম্বিনেশনের মাধ্যমে তৈরি। প্রাথমিক গবেষণায় দেখা যায়, এটি আগের সংক্রমণ ও টিকাদানের মাধ্যমে সৃষ্ট ইমিউনিটিকে সহজেই ফাঁকি দিতে পারে। তবে বাস্তবে এটি তেমন বিপজ্জনক প্রভাব ফেলছে না। বিবিসি’র একটি প্রতিবেদনে তেমনটাই উল্লেখ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রতি এক লাখে ৬.১ জন হাসপাতালে ভর্তি হলেও ২০২৪ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ জনে। গবেষকরা মনে করছেন, মানুষের দেহে সৃষ্ট শক্তিশালী ইমিউন মেমোরি নতুন সংক্রমণকে দ্রুত প্রতিহত করছে।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ পিটার চীন-হং বলেন, ‘বড় সংখ্যক মানুষ এখন হয় টিকা নিয়েছেন অথবা একাধিকবার সংক্রমিত হয়েছেন। ফলে তাদের শরীর ভাইরাসকে দ্রুত শনাক্ত করে প্রতিহত করছে।’
তবে এই ভ্যারিয়েন্টের প্রকৃতি কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। স্বাদ-গন্ধ হারানোর মতো সাধারণ লক্ষণগুলোও এখন খুব একটা দেখা যায় না। এর ফলে বেশিরভাগ মানুষ উপসর্গহীন থাকছেন বা সাধারণ সর্দি-কাশি হিসেবে মনে করছেন। যদিও বয়স্ক এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তিদের জন্য এখনও ঝুঁকি রয়েছে। অন্যদিকে, চিকিৎসার ধরনেও পরিবর্তন এসেছে। এখন আর রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধে ওষুধ দেওয়া হয় না। বরং অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের ব্যবহার বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো তুলনামূলক মৃদু উপসর্গ তৈরি করছে এবং হাসপাতালে ভর্তির সময়ও আগের চেয়ে কমে এসেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ভাইরাসটি ভবিষ্যতে আবারও ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া লং কোভিডের ঝুঁকি এখনও রয়ে গেছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নতুন টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।