ঢাকা ১২:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo সুদানে ড্রোন হামলায় নিহত ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর জানাজায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা Logo টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভারতীয় দল প্রকাশ, জায়গা হয়নি শুভমান গিলের, ফিরেছেন ঈশান কিষাণ Logo শহীদ হাদির স্মরণে জার্সি উৎসর্গ করবে রাজশাহী Logo ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: আপিল সংক্রান্ত সময়সূচিতে পরিবর্তন আনল ইসি Logo দুর্নীতির দ্বিতীয় মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির ১৭ বছরের সাজা Logo জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শরীফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত Logo ময়মনসিংহে যুবক হত্যাকাণ্ড ও মরদেহে আগুন দেয়ার চেষ্টা: র‍্যাবের হাতে ৭ জন Logo শহিদ ওসমান হাদির জানাজায় মানুষের ঢল, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জনসমুদ্র Logo মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানুষের স্রোত, পূর্ণ জনসমাবেশ Logo মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পৌঁছেছে হাদির

সাবলেটের আড়ালে অপহরণচক্র: যেভাবে উদ্ধার হলো কামরাঙ্গীরচরের শিশু

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে শিশু অপহরণের এক নৃশংস ঘটনার পর উঠে এসেছে নতুন এক কৌশল—সাবলেটের আড়ালে অপহরণ। ছোট সন্তান রয়েছে এমন পরিবারগুলোকে টার্গেট করে সাবলেট বাসা নেয় এই চক্র। ধীরে ধীরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে, এরপর সুযোগ পেলেই শিশুদের অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে।

সম্প্রতি এমন এক ঘটনায় চার বছর বয়সী শিশু আব্দুল হাদি নূরকে অপহরণের অভিযোগে ফয়সাল ও কাকলী আক্তার নামে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

১৯ অক্টোবর কামরাঙ্গীরচরের আলীনগরের এক বাসায় দুপুরে নূর খেলছিল। পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন তার মা। ঘুম ভাঙার পর দেখা যায়, সন্তান নেই—সঙ্গে নিখোঁজ সাবলেট দম্পতিও। ফোনে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, শিশুটি তাদের কাছে আছে; কিন্তু কিছু সময় পরই ফোন বন্ধ করে দেয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শিশুটিকে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে ওই দম্পতি।

পরিবার শিশুটিকে খুঁজে না পেয়ে বিপাকে পড়ে। পরে শিশুর মায়ের ইমো নম্বরে একটি বার্তা আসে—“ছেলেকে ফিরে পেতে চাইলে ১ লাখ টাকা দিতে হবে, না হলে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেব।” আতঙ্কে পরিবার প্রথমে ৫ হাজার টাকা পাঠায়। তবে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তারা পুলিশের সহায়তা নেয়।

পুলিশের সাইবার ইউনিট দুই দিনের চেষ্টায় অপহৃত শিশুর অবস্থান শনাক্ত করে মিরপুরের একটি হোটেলে অভিযান চালায়। সেখান থেকে নূরকে উদ্ধার করা হয় এবং অভিযুক্ত দম্পতিকে আটক করা হয়।

তদন্তে জানা গেছে, এই দম্পতি মাত্র ১৫ দিন আগে ওই বাসায় সাবলেট হিসেবে ওঠে। শিশুটির সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে পরে চিপসের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে নিয়ে যায়।

কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি আমিরুল ইসলাম বলেন, “তারা পরিকল্পিতভাবে বাসা ভাড়া নিয়ে সুযোগ বুঝে অপহরণ করেছে। অভিযুক্তদের কাছে ১৫ থেকে ২০টি সিমকার্ড পাওয়া গেছে, যার কোনোটিই তাদের নিজের নামে নয়।”

পুলিশের ধারণা, এরা একটি বৃহত্তর মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। তাদের কার্যক্রম ও যোগাযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ পরামর্শ দিয়েছে—সাবলেট দেয়ার আগে ভাড়াটিয়ার পরিচয় ভালোভাবে যাচাই করা এবং সন্দেহজনক আচরণ দেখলে দ্রুত থানায় জানাতে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:৫২:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
৪৮ বার পড়া হয়েছে

সাবলেটের আড়ালে অপহরণচক্র: যেভাবে উদ্ধার হলো কামরাঙ্গীরচরের শিশু

আপডেট সময় ০৫:৫২:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে শিশু অপহরণের এক নৃশংস ঘটনার পর উঠে এসেছে নতুন এক কৌশল—সাবলেটের আড়ালে অপহরণ। ছোট সন্তান রয়েছে এমন পরিবারগুলোকে টার্গেট করে সাবলেট বাসা নেয় এই চক্র। ধীরে ধীরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে, এরপর সুযোগ পেলেই শিশুদের অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে।

সম্প্রতি এমন এক ঘটনায় চার বছর বয়সী শিশু আব্দুল হাদি নূরকে অপহরণের অভিযোগে ফয়সাল ও কাকলী আক্তার নামে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

১৯ অক্টোবর কামরাঙ্গীরচরের আলীনগরের এক বাসায় দুপুরে নূর খেলছিল। পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন তার মা। ঘুম ভাঙার পর দেখা যায়, সন্তান নেই—সঙ্গে নিখোঁজ সাবলেট দম্পতিও। ফোনে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, শিশুটি তাদের কাছে আছে; কিন্তু কিছু সময় পরই ফোন বন্ধ করে দেয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শিশুটিকে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে ওই দম্পতি।

পরিবার শিশুটিকে খুঁজে না পেয়ে বিপাকে পড়ে। পরে শিশুর মায়ের ইমো নম্বরে একটি বার্তা আসে—“ছেলেকে ফিরে পেতে চাইলে ১ লাখ টাকা দিতে হবে, না হলে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেব।” আতঙ্কে পরিবার প্রথমে ৫ হাজার টাকা পাঠায়। তবে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তারা পুলিশের সহায়তা নেয়।

পুলিশের সাইবার ইউনিট দুই দিনের চেষ্টায় অপহৃত শিশুর অবস্থান শনাক্ত করে মিরপুরের একটি হোটেলে অভিযান চালায়। সেখান থেকে নূরকে উদ্ধার করা হয় এবং অভিযুক্ত দম্পতিকে আটক করা হয়।

তদন্তে জানা গেছে, এই দম্পতি মাত্র ১৫ দিন আগে ওই বাসায় সাবলেট হিসেবে ওঠে। শিশুটির সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে পরে চিপসের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে নিয়ে যায়।

কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি আমিরুল ইসলাম বলেন, “তারা পরিকল্পিতভাবে বাসা ভাড়া নিয়ে সুযোগ বুঝে অপহরণ করেছে। অভিযুক্তদের কাছে ১৫ থেকে ২০টি সিমকার্ড পাওয়া গেছে, যার কোনোটিই তাদের নিজের নামে নয়।”

পুলিশের ধারণা, এরা একটি বৃহত্তর মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। তাদের কার্যক্রম ও যোগাযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ পরামর্শ দিয়েছে—সাবলেট দেয়ার আগে ভাড়াটিয়ার পরিচয় ভালোভাবে যাচাই করা এবং সন্দেহজনক আচরণ দেখলে দ্রুত থানায় জানাতে।