ঢাকা ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo ভোট কারচুপির যে কোনো উদ্যোগের বিরুদ্ধে কড়া সতর্কবার্তা গোলাম পরওয়ারের Logo সারাদেশে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত মৃত ৬, আহত শতাধিক Logo মৃদু ভূকম্পনে দুলল কলকাতা, বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক Logo রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে নবজাতকের মৃত্যু, আহত দুই নারী Logo দেশজুড়ে তাপমাত্রা সামান্য কমার সম্ভাবনা, শেষ দিকে বাড়বে শীতের অনুভূতি Logo ময়মনসিংহে ডাকসু নেত্রী রাফিয়ার বাসার গেটে দুর্বৃত্তদের আগুন, তদন্তে পুলিশ Logo চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে প্রাইভেটকার পড়ে সাইকেল আরোহীর মৃত্যু Logo পাকিস্তানের সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ—তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন অধ্যায় Logo বিক্ষোভের উত্তাপে নেপাল, কারফিউ জারি করে প্রশাসন Logo নবী (সা.)-এর নামকরণ—স্বপ্ন, ইলহাম ও ভবিষ্যদ্বাণী

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশজুড়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার দ্বিতীয় অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং প্রথম অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করেছে যে, শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এছাড়াও আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধেও অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। চৌধুরী মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে সত্য উদঘাটনে সহায়তা করায় তার সর্বোচ্চ শাস্তি কমানো হবে।

রায় ঘোষণার আগে দুপুর ১২টার পর ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পাঠ করেন আদালত। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হয়। পুনর্গঠনের পর প্রথম বিবিধ মামলা হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ মামলার বিচার শুরু হয়। ১৭ অক্টোবর ২০২৪ মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় এবং সেদিনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

প্রাথমিকভাবে একমাত্র আসামি হলেও পরে ১৬ মার্চ ২০২৫ এ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও মামলার আওতায় আনা হয়। তদন্ত শেষে প্রসিকিউশন মোট পাঁচটি অভিযোগ আনে, যা ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। ১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আদালতে দাখিল করা হয় এবং ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।

মামলার এক পর্যায়ে চৌধুরী মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেন, যা আদালত মঞ্জুর করে। চূড়ান্ত যুক্তিতর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল ও প্রধান প্রসিকিউটর শেখ হাসিনাসহ আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন, অন্যদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাদের খালাস চান। আদালত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করে।

অভিযোগসমূহের সারাংশ:

১. প্রথম অভিযোগ: ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার ‘রাজাকারের বাচ্চা’ মন্তব্যের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিহত ও ২৫ হাজার আহত হয়।

২. দ্বিতীয় অভিযোগ: শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন, যা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির মাধ্যমে কার্যকর করা হয়। এতে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

৩. তৃতীয় অভিযোগ: রংপুরে আবু সাঈদ নামে এক ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

৪. চতুর্থ অভিযোগ: ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

৫. পঞ্চম অভিযোগ: আশুলিয়ায় ছয়জনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৩:১১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
১০ বার পড়া হয়েছে

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ

আপডেট সময় ০৩:১১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশজুড়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার দ্বিতীয় অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং প্রথম অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করেছে যে, শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এছাড়াও আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধেও অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। চৌধুরী মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে সত্য উদঘাটনে সহায়তা করায় তার সর্বোচ্চ শাস্তি কমানো হবে।

রায় ঘোষণার আগে দুপুর ১২টার পর ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পাঠ করেন আদালত। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হয়। পুনর্গঠনের পর প্রথম বিবিধ মামলা হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ মামলার বিচার শুরু হয়। ১৭ অক্টোবর ২০২৪ মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় এবং সেদিনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

প্রাথমিকভাবে একমাত্র আসামি হলেও পরে ১৬ মার্চ ২০২৫ এ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও মামলার আওতায় আনা হয়। তদন্ত শেষে প্রসিকিউশন মোট পাঁচটি অভিযোগ আনে, যা ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। ১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আদালতে দাখিল করা হয় এবং ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।

মামলার এক পর্যায়ে চৌধুরী মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেন, যা আদালত মঞ্জুর করে। চূড়ান্ত যুক্তিতর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল ও প্রধান প্রসিকিউটর শেখ হাসিনাসহ আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন, অন্যদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাদের খালাস চান। আদালত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করে।

অভিযোগসমূহের সারাংশ:

১. প্রথম অভিযোগ: ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার ‘রাজাকারের বাচ্চা’ মন্তব্যের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিহত ও ২৫ হাজার আহত হয়।

২. দ্বিতীয় অভিযোগ: শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন, যা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির মাধ্যমে কার্যকর করা হয়। এতে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

৩. তৃতীয় অভিযোগ: রংপুরে আবু সাঈদ নামে এক ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

৪. চতুর্থ অভিযোগ: ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

৫. পঞ্চম অভিযোগ: আশুলিয়ায় ছয়জনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।