ছাতকে সংঘর্ষ: পুলিশ, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে গুলি ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, আহত ১০ জন, ছাত্রদল নেতা মাহমুদুল আলম ফাবির অন্তর্ভুক্ত
সুনামগঞ্জের ছাতকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একটি বিক্ষোভ মিছিলে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বিকেল ৩ টায় গোবিন্দগঞ্জ বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে এই হামলা ঘটে।
এতে আহত হন ছাতক উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল আলম ফাবির, যিনি ঢাকাইবাড়ি মওলাভোগ গ্রামের মো. নুরুল আলমের ছেলে। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আহতদের মধ্যে ছাত্রদল নেতা মোজাহিদ আলী, শাহবুদ্দিন আহমদ, আশরাফুল ইসলাম, পথচারী মো. হাবিবুল ইসলাম ফুয়াদ, যুবায়ের, নোয়ারাই গ্রামের হাফিজ বাহা উদ্দিন, লায়েছ আহমদ, ব্যবসায়ী মো. আজিজুল হক আজিজ ও দেবারাই গ্রামের আব্দুস সামাদ রয়েছেন।
এদিকে, সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল বাশার মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সূত্র জানায়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ও বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ছাত্রদল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের ফলে সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের বাধার পর বিক্ষোভকারীরা মিছিল ও সমাবেশ চালিয়ে যান, এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে তিনদিক থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়, এবং গোবিন্দগঞ্জ বাজারের কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর ঘটে।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও গুলি ছুঁড়ে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার ডাক্তার মাহমুদুল আলম ফাবির অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে সিলেট পাঠান।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা হামলা করেছে।
অন্যদিকে, সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট জানান, ছাত্রদল নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গালিগালাজ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।
ছাত্রদল নেতা মাহমুদুল আলম ফাবিরের ভাই তানভীর হাসান হামলার জন্য ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডারদের দায়ী করেন এবং ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়, এবং ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।