ঢাকা ০৭:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তক এখনো ছাপানো শুরু হয়নি

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তক এখনো ছাপানো শুরু হয়নি।

মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ এখনো শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান। এর ফলে ২০২৫ সালে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে যথাসময়ে পাঠ্যপুস্তক বিতরণে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। অন্যদিকে প্রাথমিক স্তরের জন্য ১০ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ পরিকল্পনামতো এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, মাধ্যমিক স্তরের ১৩ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর জন্য তহবিল অনুমোদন করা হয়েছে। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে ছাপানোর কাজ শুরু হবে। ছাপানোর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আর্মি প্রিন্টিং প্রেসকে এক কোটি বই ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাঁচটি বই বিতরণের লক্ষ্য রয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা ১ জানুয়ারির মধ্যেই বইগুলো পায়। বাকী মাধ্যমিকের সব পাঠ্যপুস্তক জানুয়ারির শেষে বিতরণের চেষ্টা চালানো হবে।

তিনি আরও বলেন, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে সম্পাদনার কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা কয়েকটি সংশোধন করেছি, যেমন জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত কিছু গ্রাফিতি অন্তর্ভুক্ত করা।

অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ৩০ কোটি বই ৪৫ দিনের মধ্যে ছাপানো অসম্ভব; কাজটি সম্পূর্ণ করতে আমাদের আরও ৩০ থেকে ৪৫ দিন সময় প্রয়োজন। পাঁচটি বই ছাপানোর অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য কিছু কাজের আদেশে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আমরা এনসিটিবিকে আগে জানিয়েছিলাম, কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পাঠ্যপুস্তকের পাণ্ডুলিপি সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছায়নি। আমরা এনসিটিবির সঙ্গে এক পরামর্শ সভায় আমাদের উদ্বেগগুলো জানিয়েছি এবং এতে তারা সম্মতিও দিয়েছেন।

এনসিটিবির উৎপাদন ও বিতরণ শাখার কর্মকর্তারা বলেন, এই বছর মাধ্যমিক পাঠ্যপুস্তক ৬৮০টি লটে ছাপানো হবে, যা গত বছর ছিল ৪১৭টি। এই পরিবর্তনটি বই ছাপানোর প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে এবং ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমে ফিরে যাওয়ার কারণে দেরি হওয়ার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে করা হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ বাড়বে। গত বছর ৮২টি প্রিন্টিং প্রেস ব্যবহার করা হয়েছিল, তবে এবার ১০০টি প্রেস ব্যবহৃত হবে।

এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সাধারণত প্রতি বছর জুন মাসে বই ছাপানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং এই বছরও তাই হয়েছে। তবে, সরকার পরিবর্তনের পর পাঠ্যক্রম সংশোধন করতে হয়েছিল। গত ১২ সেপ্টেম্বর টেন্ডার বাতিল করা হয়েছিল। তাই আমাদের হাতে খুব কম সময় আছে, কারণ আমরা আসলে একেবারে নতুন করে শুরু করছি।

৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ২০২২ সালের পাঠ্যক্রম বাতিল করে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়াও পাঠ্যক্রমে জুলাই-আগস্ট মাসের গণঅভ্যুত্থানের সম্পর্কিত কিছু গ্রাফিতি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:৪১:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
৮ বার পড়া হয়েছে

মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তক এখনো ছাপানো শুরু হয়নি

আপডেট সময় ০৮:৪১:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তক এখনো ছাপানো শুরু হয়নি।

মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ এখনো শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান। এর ফলে ২০২৫ সালে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে যথাসময়ে পাঠ্যপুস্তক বিতরণে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। অন্যদিকে প্রাথমিক স্তরের জন্য ১০ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ পরিকল্পনামতো এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, মাধ্যমিক স্তরের ১৩ কোটি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর জন্য তহবিল অনুমোদন করা হয়েছে। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে ছাপানোর কাজ শুরু হবে। ছাপানোর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আর্মি প্রিন্টিং প্রেসকে এক কোটি বই ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাঁচটি বই বিতরণের লক্ষ্য রয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা ১ জানুয়ারির মধ্যেই বইগুলো পায়। বাকী মাধ্যমিকের সব পাঠ্যপুস্তক জানুয়ারির শেষে বিতরণের চেষ্টা চালানো হবে।

তিনি আরও বলেন, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে সম্পাদনার কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা কয়েকটি সংশোধন করেছি, যেমন জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত কিছু গ্রাফিতি অন্তর্ভুক্ত করা।

অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ৩০ কোটি বই ৪৫ দিনের মধ্যে ছাপানো অসম্ভব; কাজটি সম্পূর্ণ করতে আমাদের আরও ৩০ থেকে ৪৫ দিন সময় প্রয়োজন। পাঁচটি বই ছাপানোর অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য কিছু কাজের আদেশে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আমরা এনসিটিবিকে আগে জানিয়েছিলাম, কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পাঠ্যপুস্তকের পাণ্ডুলিপি সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছায়নি। আমরা এনসিটিবির সঙ্গে এক পরামর্শ সভায় আমাদের উদ্বেগগুলো জানিয়েছি এবং এতে তারা সম্মতিও দিয়েছেন।

এনসিটিবির উৎপাদন ও বিতরণ শাখার কর্মকর্তারা বলেন, এই বছর মাধ্যমিক পাঠ্যপুস্তক ৬৮০টি লটে ছাপানো হবে, যা গত বছর ছিল ৪১৭টি। এই পরিবর্তনটি বই ছাপানোর প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে এবং ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমে ফিরে যাওয়ার কারণে দেরি হওয়ার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে করা হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ বাড়বে। গত বছর ৮২টি প্রিন্টিং প্রেস ব্যবহার করা হয়েছিল, তবে এবার ১০০টি প্রেস ব্যবহৃত হবে।

এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সাধারণত প্রতি বছর জুন মাসে বই ছাপানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং এই বছরও তাই হয়েছে। তবে, সরকার পরিবর্তনের পর পাঠ্যক্রম সংশোধন করতে হয়েছিল। গত ১২ সেপ্টেম্বর টেন্ডার বাতিল করা হয়েছিল। তাই আমাদের হাতে খুব কম সময় আছে, কারণ আমরা আসলে একেবারে নতুন করে শুরু করছি।

৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ২০২২ সালের পাঠ্যক্রম বাতিল করে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়াও পাঠ্যক্রমে জুলাই-আগস্ট মাসের গণঅভ্যুত্থানের সম্পর্কিত কিছু গ্রাফিতি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।