নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌর এলাকায় শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩৪) নামের এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। এসময় হামলাকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন নিহতের শ্বশুর রেজাউল হক। অভিযুক্ত হত্যাকারী সাইফুল ইসলাম খালেদ (৩০) নিহতের দূরসম্পর্কের দেবর হয়, ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চৌমুহনী পৌরসভার হাজীপুর এলাকার বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহনাজ আক্তার পিংকি চৌমুহনী পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের নোয়া বাড়ির কুয়েত প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। তিনি ২ ছেলের জননী। অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম খালেদ একই বাড়ির ডিস লিটনের ছেলে।
নিহতের বোন ফারজানা আক্তার সুমি বলেন, ‘পারিবারিকভাবে গত ১৬ বছর আগে পিংকির সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিয়ে হয়। বছর খানেক আগে পিংকির ব্যবহৃত মোবাইল নষ্ট হলে সেটি ঠিক করার জন্য খালেদকে দেয়। ওই সময় খালেদ মোবাইল থেকে কৌশলে পিংকির মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও নিজের মোবাইলে নিয়ে নেয়। এরপর ওই ছবি ও ভিডিও দিয়ে পিংকিকে ব্ল্যাকমেইল করে ৭ লাখ টাকা আদায় করে। একই কায়দায় পরকীয়া ও শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর চেষ্টা চালায়। এরপর সে আরও টাকা দাবি করে এবং পরকীয়ায় ব্যর্থ হয়ে ক্ষিপ্ত হয়। কিছুদিন আগে এ নিয়ে আদালতে মামলা করে পিংকি। গত দুই মাস আগে পিংকির স্বামী দেশে এলে এসব বিষয় নিয়ে তার ওপর হামলা করে খালেদ।’
নিহতের দুলাভাই বাবর হোসেন বলেন, ‘সকালে স্বামীর বাড়ি থেকে শ্বশুর রেজাউল হকের (৭২) সাথে চৌমুহনী পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন পিংকি। ওই সময় তারা চৌমুহনী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনে পৌঁছালে খালেদ তাদের গতি রোধ করে। সেখানে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে পিংকিকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে খালেদ। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তখন পুত্রবধকেূ বাঁচাতে চেষ্টা করলে শ্বশুর রেজাউল হোসনকেও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌমুহনী লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পিংকিকে মৃত ঘোষণা করে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, নিহত গৃহবধূ ও হত্যাকারী পূর্বপরিচিত। তাদের নিজেদের মধ্যে কোনো ঝামেলার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় একটি মামলা দায়ের প্রস্তুতি ও আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।