ঢাকা ০২:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo শিবগঞ্জ সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা, স্থানীয়দের পাল্টাপাল্টি স্লোগান Logo গুম ও গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল: প্রেস উইং Logo ই-সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ করল সরকার Logo বাণিজ্য মেলায় ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি! Logo বরিশালকে ১২৬ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিলো সিলেট Logo বিএনপি এখনও ক্ষমতায় আসেনি, কোনো অন্যায়ে জড়াবেন না: রুমিন ফারহানা Logo ট্রুডোর পদত্যাগ/ কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা Logo কেন রোজার প্রেমে পড়লেন, প্রশ্নের উত্তরে যা বললেন তাহসান Logo বাংলাদেশ কোন পথে যাবে, ফয়সালার বছর ২০২৫: গোলাম পরওয়ার Logo নাটোর/ কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের মিছিল

সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের নতুন পরিকল্পনা

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের নতুন পরিকল্পনা।

সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্লাস্টিক বোতলের পানির পরিবর্তে বিকল্প উপায়ে খাবার পানি নিশ্চিতের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার (প্লাজমা রিয়েক্টর) যুগেও প্রবেশ করতে যাচ্ছে এই দ্বীপটি।

এই প্রকল্পের আওতায় থাকবে দ্বীপের সমস্ত বর্জ্য সংগ্রহে পরিবেশবান্ধব পরিবহন (বেকোটেগ)। এটিএম কার্ডের আদলে বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে নিজেদের ইচ্ছেমতো নেয়া যাবে খাবার পানি। সেন্টমার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ এই প্রকল্প সরকার বাস্তবায়ন করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্বব্যাংকের অনুদানে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে।


সরকারের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দ্বীপের পরিবেশ দূষণ যেমন কমে আসবে, তেমনি পরিবেশ-প্রতিবেশের পাশাপাশি প্রবালসহ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যও রক্ষা পাবে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।


কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সেন্টমার্টিন দ্বীপে বর্তমানে বসবাসরত ১৭০০ পরিবারের ছোট-বড় ৮ হাজার মানুষের প্রতিদিন দুই টন করে মনুষ্য বর্জ্য ও দুই টন কঠিন বর্জ্য সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি পর্যটন মৌসুমের তিন মাসে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটকের চার হাজার প্লাস্টিকের বোতল, চিপসহ অন্যান্য প্লাস্টিক-পলিথিনের প্যাকেটজাত নিত্যপণ্যের বর্জ্যও সৃষ্টি হচ্ছে। এসব বর্জ্যের কারণে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংকটে পড়েছে। তাই দ্বীপের সার্বিক পরিবেশ ঠিক রাখতে সেন্টমার্টিনে মল স্লাজ ও সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নির্মাণ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। ইতোমধ্যে প্রকল্পটিকে দুই ভাগে ভাগ করে টেন্ডারের মাধ্যমে টার্ন বিল্ডার্স, গ্রিন ডট লিমিটেড ও ওয়াটার বার্ডস লিমিটেড নামের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে।

কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী আবুল মনজুর বলেন, এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে রেইন ওয়াটার, গ্রাউন ওয়াটার ও সারফেস ওয়াটার পরিশোধন করে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বাসিন্দাদের মধ্যে খাবার পানি সরবরাহ করা। এতে দ্বীপে প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হবে। তবে এই পানি সরবরাহ করতে প্রতিদিন যে ব্যয় হবে, তা পানি গ্রহণকারীদের কাছ থেকে নেয়া হবে। পানি গ্রহীতারা এটিএম কার্ডের আদলে বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে ন্যূনতম ধার্যকৃত মূল্য দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো খাবার পানি নিতে পারবেন। এই পানির মান যাচাইয়ের জন্য থাকবে বিশেষ ল্যাবরেটরি। নির্মাণ করা হবে ইট, সিমেন্ট ও লোহার রড ছাড়া পরিবেশবান্ধব অপারেশন বিল্ডিং ও আন্তর্জাতিক মানের দুটি পাবলিক টয়লেট।

এ ছাড়াও মানব বর্জ্য, মেডিকেল বর্জ্য, কঠিন বর্জ্য ও প্লাস্টিক বর্জ্য মিলেই থাকবে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (প্লাজমা রিয়েক্ট)। এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশে দ্বিতীয়। এই প্রকল্পের মধ্যদিয়ে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিক থেকে তৃতীয় দেশ হিসেবে তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে প্রকল্পটি পরীক্ষামূলকভাবে কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে চালু করে সফলতা আসে। প্রকল্পটি আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎও উৎপাদন করা হবে জানিয়ে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী আবুল মনজুর বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টার্ন বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি নাহিদ আল হাসান বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা কার্যাদেশ হাতে পেয়েছি। মালামাল পরিবহনে সামান্য জটিলতা রয়েছে, তা সমাধান করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করব।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে সেন্টমার্টিনে যখন সর্বত্র পরিবেশ ধ্বংসের কার্যক্রম চলছে, ঠিক এই সময়ে সরকারের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আশা করি সরকারের পরিবেশবান্ধব এই প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।’

পরিবেশ অধিদফতর ও একাধিক পরিবেশ সংগঠন সূত্রে জানা যায়, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদফতর ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিনকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী, সেন্টমার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।

সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সর্বশেষ ২০২০ সালের আগস্টে সেখানে প্রথম পর্যটক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সরকারের তরফ থেকে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেসকে (সিইজিআইএস) একটি সমীক্ষা করার দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা শেষে জানায়, দ্বীপটিতে কোনোভাবেই পর্যটকদের রাতে থাকার অনুমতি দেয়া ঠিক হবে না। শীতে পর্যটন মৌসুমে দিনে ১ হাজার ২৫০ জনের বেশি পর্যটক যেতে দেয়া ঠিক হবে না।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেন্টমার্টিনের সুরক্ষায় নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে যেতে পারবেন। তবে রাত যাপন না করে দিনেই ফিরে আসতে হবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই দুই মাস পর্যটকরা সেন্টমার্টিন ভ্রমণ ও সেখানে রাত যাপনের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে পর্যটকের সংখ্যা দৈনিক দুই হাজার নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকের যাতায়াত বন্ধ থাকবে। গত ১ নভেম্বর থেকে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়।

সূত্র: বাসস 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১০:০৭:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
৩ বার পড়া হয়েছে

সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের নতুন পরিকল্পনা

আপডেট সময় ১০:০৭:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের নতুন পরিকল্পনা।

সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্লাস্টিক বোতলের পানির পরিবর্তে বিকল্প উপায়ে খাবার পানি নিশ্চিতের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার (প্লাজমা রিয়েক্টর) যুগেও প্রবেশ করতে যাচ্ছে এই দ্বীপটি।

এই প্রকল্পের আওতায় থাকবে দ্বীপের সমস্ত বর্জ্য সংগ্রহে পরিবেশবান্ধব পরিবহন (বেকোটেগ)। এটিএম কার্ডের আদলে বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে নিজেদের ইচ্ছেমতো নেয়া যাবে খাবার পানি। সেন্টমার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ এই প্রকল্প সরকার বাস্তবায়ন করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্বব্যাংকের অনুদানে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে।


সরকারের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দ্বীপের পরিবেশ দূষণ যেমন কমে আসবে, তেমনি পরিবেশ-প্রতিবেশের পাশাপাশি প্রবালসহ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যও রক্ষা পাবে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।


কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সেন্টমার্টিন দ্বীপে বর্তমানে বসবাসরত ১৭০০ পরিবারের ছোট-বড় ৮ হাজার মানুষের প্রতিদিন দুই টন করে মনুষ্য বর্জ্য ও দুই টন কঠিন বর্জ্য সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি পর্যটন মৌসুমের তিন মাসে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটকের চার হাজার প্লাস্টিকের বোতল, চিপসহ অন্যান্য প্লাস্টিক-পলিথিনের প্যাকেটজাত নিত্যপণ্যের বর্জ্যও সৃষ্টি হচ্ছে। এসব বর্জ্যের কারণে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংকটে পড়েছে। তাই দ্বীপের সার্বিক পরিবেশ ঠিক রাখতে সেন্টমার্টিনে মল স্লাজ ও সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নির্মাণ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। ইতোমধ্যে প্রকল্পটিকে দুই ভাগে ভাগ করে টেন্ডারের মাধ্যমে টার্ন বিল্ডার্স, গ্রিন ডট লিমিটেড ও ওয়াটার বার্ডস লিমিটেড নামের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে।

কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী আবুল মনজুর বলেন, এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে রেইন ওয়াটার, গ্রাউন ওয়াটার ও সারফেস ওয়াটার পরিশোধন করে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বাসিন্দাদের মধ্যে খাবার পানি সরবরাহ করা। এতে দ্বীপে প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হবে। তবে এই পানি সরবরাহ করতে প্রতিদিন যে ব্যয় হবে, তা পানি গ্রহণকারীদের কাছ থেকে নেয়া হবে। পানি গ্রহীতারা এটিএম কার্ডের আদলে বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে ন্যূনতম ধার্যকৃত মূল্য দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো খাবার পানি নিতে পারবেন। এই পানির মান যাচাইয়ের জন্য থাকবে বিশেষ ল্যাবরেটরি। নির্মাণ করা হবে ইট, সিমেন্ট ও লোহার রড ছাড়া পরিবেশবান্ধব অপারেশন বিল্ডিং ও আন্তর্জাতিক মানের দুটি পাবলিক টয়লেট।

এ ছাড়াও মানব বর্জ্য, মেডিকেল বর্জ্য, কঠিন বর্জ্য ও প্লাস্টিক বর্জ্য মিলেই থাকবে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (প্লাজমা রিয়েক্ট)। এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশে দ্বিতীয়। এই প্রকল্পের মধ্যদিয়ে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিক থেকে তৃতীয় দেশ হিসেবে তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে প্রকল্পটি পরীক্ষামূলকভাবে কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে চালু করে সফলতা আসে। প্রকল্পটি আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎও উৎপাদন করা হবে জানিয়ে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী আবুল মনজুর বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টার্ন বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি নাহিদ আল হাসান বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা কার্যাদেশ হাতে পেয়েছি। মালামাল পরিবহনে সামান্য জটিলতা রয়েছে, তা সমাধান করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করব।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে সেন্টমার্টিনে যখন সর্বত্র পরিবেশ ধ্বংসের কার্যক্রম চলছে, ঠিক এই সময়ে সরকারের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আশা করি সরকারের পরিবেশবান্ধব এই প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।’

পরিবেশ অধিদফতর ও একাধিক পরিবেশ সংগঠন সূত্রে জানা যায়, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদফতর ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিনকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী, সেন্টমার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।

সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সর্বশেষ ২০২০ সালের আগস্টে সেখানে প্রথম পর্যটক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সরকারের তরফ থেকে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেসকে (সিইজিআইএস) একটি সমীক্ষা করার দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা শেষে জানায়, দ্বীপটিতে কোনোভাবেই পর্যটকদের রাতে থাকার অনুমতি দেয়া ঠিক হবে না। শীতে পর্যটন মৌসুমে দিনে ১ হাজার ২৫০ জনের বেশি পর্যটক যেতে দেয়া ঠিক হবে না।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেন্টমার্টিনের সুরক্ষায় নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে যেতে পারবেন। তবে রাত যাপন না করে দিনেই ফিরে আসতে হবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই দুই মাস পর্যটকরা সেন্টমার্টিন ভ্রমণ ও সেখানে রাত যাপনের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে পর্যটকের সংখ্যা দৈনিক দুই হাজার নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকের যাতায়াত বন্ধ থাকবে। গত ১ নভেম্বর থেকে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়।

সূত্র: বাসস