২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ১৭ জুলাই
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মামলায় খালাসপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি আগামী ১৭ জুলাই নির্ধারণ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ মামলার সকল আসামিকে খালাস প্রদান করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১৯ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে। আপিল বিভাগের অনুমতি সত্ত্বেও হাইকোর্টের খালাসের রায় তখন স্থগিত করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ওই দিন বিকেলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়, যাতে দলটির ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ বহু নেতা-কর্মী, যাদের অনেকেই আজও দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। অনেকে স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
এ ঘটনার পর হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলার রায় প্রদান করে। ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামির তালিকায় রয়েছেন:
লুৎফুজ্জামান বাবর
আবদুস সালাম পিন্টু
মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম
হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ
জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন
মাওলানা আবদুস সালাম
মাওলানা শেখ ফরিদ
মাওলানা আবু সাইদ
মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ (আবু জান্দাল)
হাফেজ আবু তাহের
মো. ইউসুফ ভাট (মাজেদ ভাট)
আবদুল মালেক
মফিজুর রহমান (মহিবুল্লাহ)
আবুল কালাম আজাদ (বুলবুল)
মো. জাহাঙ্গীর আলম
হোসাইন আহমেদ তামিম
রফিকুল ইসলাম (সবুজ)
মো. উজ্জ্বল (রতন)
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন:
শাহাদাৎ উল্লাহ (জুয়েল)
মাওলানা আবদুর রউফ (আবু ওমর)
আবু হোমাইরা (পীরসাহেব)
মাওলানা সাব্বির আহমদ (আবদুল হান্নান)
আরিফ হাসান (সুজন/আবদুর রাজ্জাক)
হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া
আবু বকর (সেলিম হাওলাদার)
মো. আরিফুল ইসলাম (আরিফ)
মহিবুল মোত্তাকিন (মুত্তাকিন – পলাতক)
আনিসুল মুরছালিন (মুরছালিন – পলাতক)
মো. খলিল (পলাতক)
জাহাঙ্গীর আলম বদর (ওস্তাদ জাহাঙ্গীর – পলাতক)
মো. ইকবাল (পলাতক)
লিটন (মাওলানা লিটন – পলাতক)
তারেক রহমান (তারেক জিয়া – পলাতক)
হারিছ চৌধুরী (পলাতক)
কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক)
মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক)
মুফতি আবদুল হাই (পলাতক)
রাতুল আহম্মেদ বাবু (রাতুল বাবু – পলাতক)
এই ঐতিহাসিক মামলার রায় এবং আপিল প্রক্রিয়া দেশের রাজনৈতিক ও বিচারব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।