চট্টগ্রামে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিদেশি সম্পদ–সংক্রান্ত ২৩ বস্তা কাগজপত্র উদ্ধার
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রামের কালুরঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশি সম্পদের প্রমাণ-সংক্রান্ত ২৩ বস্তা নথি জব্দ করেছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে তার সম্পদের খোঁজ মিলেছে।
দুদক সূত্র জানায়, কয়েক দিন ধরে আরামিট গ্রুপের কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে নথি খুঁজে না পেয়ে তারা গোপন সূত্রে জানতে পারে যে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রী রুকমিলা জামানের গাড়িচালক ইলিয়াস নথি সরিয়ে পাশের ওসমান তালুকদারের বাড়িতে রেখেছেন। শনিবার ভোররাত তিনটার দিকে তালাবদ্ধ ঘর থেকে এসব নথি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিকভাবে খোলা কয়েকটি বস্তায় বিদেশে সম্পদ কেনা–বেচার রশিদ, ট্যাক্সের তথ্য, বাড়িভাড়া ও বিল পরিশোধের কাগজপত্র এবং আদালতের আদেশের অনুলিপি পাওয়া গেছে। দুদকের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, কাগজগুলোতে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য রয়েছে, যা সাবেক মন্ত্রীর ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ নেই।
এর আগে, দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমান জানান, সাইফুজ্জামানের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছিল—অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েব করা হয়েছে। প্রথমে ইলিয়াসের বাড়িতে অভিযান চালিয়েও সেগুলো মেলেনি। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুদকের দল পৌঁছানোর আগেই নথিপত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। পরে অন্য একটি বাসা থেকে ২৩ বস্তা আলামত উদ্ধার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুলাই সাবেক মন্ত্রী, তার স্ত্রীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত ও বিদেশে পাচারের অভিযোগে মামলা হয়। এর পর দুদক আদালতে আবেদন করলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও রুকমিলা জামানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারির নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে, নগরীর আগ্রাবাদ থেকে সাইফুজ্জামানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আব্দুল আজিজ ও আরামিট গ্রুপের এজিএম উৎপল পালকে গ্রেপ্তার করে দুদক। তাদের কাছ থেকে সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদের তথ্য মেলে, যা পরবর্তী অভিযানের সূত্র দেয়।