শাপলা প্রতীক না পেলে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ইঙ্গিত এনসিপির
নিবন্ধনের অপেক্ষায় থাকা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রতীক নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে মতবিরোধে জড়িয়েছে। দলটি শুরু থেকেই শাপলা ফুল প্রতীক চেয়ে এলেও, ইসির তালিকাভুক্ত প্রতীকের মধ্যে শাপলার নাম নেই। ফলে কমিশনের প্রস্তাবিত ৫০টি প্রতীকের মধ্য থেকে একটি বেছে নেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও এনসিপি তাদের দাবি থেকে সরে আসতে নারাজ।
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইসির এক পর্যায়ে বলা হয়েছিল, ১৫০টি প্রতীকের তালিকা প্রণয়ন করা হলে সেখানে শাপলাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সেই আশ্বাসের ভিত্তিতেই এনসিপি শাপলা প্রতীক চূড়ান্ত করতে চেয়েছে এবং এমনকি প্রতীকের ৭টি ডিজাইন কমিশনে জমাও দিয়েছে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “শাপলার সঙ্গে আমাদের দলীয় কর্মীদের একটি আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। জুলাই মাসে আয়োজিত পদযাত্রায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমর্থকরা প্রকৃত শাপলা ফুল নিয়ে অংশ নিয়েছেন। এ প্রতীক ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই আমাদের।”
দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন দাবি করেন, জাতীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা যেমন রয়েছে, তেমনি অন্যান্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোও জাতীয় প্রতীকের অংশ ব্যবহার করছে—যেমন ধানের শীষ, তারকা, পাটপাতা ইত্যাদি। এ প্রেক্ষাপটে, শাপলাকে প্রতীক হিসেবে দিতে কমিশনের কোনো আইনগত বাধা থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি।
যদিও নির্বাচন কমিশন এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়ার পক্ষে নয়, তবে তারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও কমিশন সংস্কার কমিটির সদস্য জেসমিন টুলি বলেন, “কমিশন চাইলে নিয়মে ছোটখাটো সংশোধনের মাধ্যমে তালিকায় নতুন প্রতীক যুক্ত করা সম্ভব। এটি পুরোপুরি কমিশনের সিদ্ধান্তের বিষয়।”
বর্তমান অবস্থান থেকে সরে না এলে এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা নিয়ে দলটি ভাবছে বলে জানানো হয়েছে। দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, প্রতীক ইস্যুতে কমিশনের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আচরণ করা হচ্ছে কিনা, সে প্রশ্নও তাদের মনে আসছে।
আখতার হোসেন হুঁশিয়ার করে বলেন, “শাপলা না দিলে যদি নির্বাচন ঘিরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়, তার দায় সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।”
সারোয়ার তুষার আরও বলেন, “প্রতিটি ইস্যুতে আমাদের হয়রানি প্রমাণ করে, ইসি হয়তো চায় না আমরা নির্বাচনে যাই। কিন্তু আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো। শাপলা না পেলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি আমরা নতুন করে ভাববো।”
প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে কমিশনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে মনে করছে এনসিপি নেতৃত্ব।