বিএনপির আগাম নির্বাচনী প্রস্তুতি, তৃণমূলে বাড়ছে গণসংযোগ ও সেবামূলক কার্যক্রম
নির্বাচনের তফসিল এখনও প্রকাশ না হলেও, আগেভাগেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জনসংযোগ ও সেবামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি। ধীরে ধীরে তৃণমূল পর্যায়ে সক্রিয় হচ্ছে দলটি, যেখানে নারীরা ঘরে ঘরে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং পুরুষ সদস্যরা স্থানীয় সমস্যার সমাধানে সক্রিয় হচ্ছেন।
দলটির নেতারা মনে করছেন, এই কার্যক্রমে শুধু জামায়াতের একতরফা প্রচারণার জবাবই নয়, বরং রাজপথেও বিএনপির উপস্থিতি জোরালো হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, চলতি অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে নির্বাচনী তৎপরতা আরও ব্যাপক আকারে শুরু হবে এবং সারাদেশে ধানের শীষের প্রচার জোরদার করা হবে।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সদস্যারা ইতোমধ্যেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছোট দলে ভাগ হয়ে ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। তাঁরা বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি তুলে ধরছেন ভোটারদের সামনে। যদিও নির্বাচন কমিশন এখনো তফসিল ঘোষণা করেনি, বিএনপি মনে করছে এই মুহূর্তে মাঠে থাকার বিকল্প নেই। কারণ, জামায়াতের মহিলা কর্মীরা অনেক আগেই ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে, বিএনপিও কেন্দ্রভিত্তিক নারী প্রচার এবং ১৪ অক্টোবর থেকে জেলাভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি দলের পুরুষ সদস্যদের যুক্ত করা হয়েছে সেবামূলক কার্যক্রমে।
এর একটি উদাহরণ হিসেবে, উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের একটি দূষিত খাল পরিষ্কারে উদ্যোগ নেয় বিএনপি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি না করে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালটি পরিষ্কারের কাজে নেতৃত্ব দেন। স্থানীয় এক প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকদের সহায়তায় খালটি নতুন প্রাণ ফিরে পায় এবং অবৈধ দখল সরিয়ে সেখানে হেঁটে চলার উপযোগী ওয়াকওয়ে তৈরি হয়, যা স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।
বিএনপির নেতারা বলছেন, এই ধরনের সেবামূলক কর্মকাণ্ড তাদের জন্য নতুন নয়, তবে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের কৌশল বিবেচনায় এবার বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএনপির ওপর যেসব বিতর্কিত অভিযোগ এসেছে— যেমন চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও কোন্দল— এসবের নেতিবাচক প্রভাব কাটাতে জনগণের কাছে ভালো বার্তা পৌঁছানোই লক্ষ্য।
সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, চলতি মাস থেকেই দলটির নির্বাচনী প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হবে এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কৌশল পর্যালোচনা করেই বিএনপি পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।
এছাড়া দলটি অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ঘোষণা করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সময়ের পরই দেশে ফেরার কথা রয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। ফলে, তফসিল ঘোষণার আগেই দেশের সর্বত্র জনমত গঠনে তৎপর হয়েছে বিএনপি।