ঢাকা ১১:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভারতীয় দল প্রকাশ, জায়গা হয়নি শুভমান গিলের, ফিরেছেন ঈশান কিষাণ Logo শহীদ হাদির স্মরণে জার্সি উৎসর্গ করবে রাজশাহী Logo ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: আপিল সংক্রান্ত সময়সূচিতে পরিবর্তন আনল ইসি Logo দুর্নীতির দ্বিতীয় মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির ১৭ বছরের সাজা Logo জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শরীফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত Logo ময়মনসিংহে যুবক হত্যাকাণ্ড ও মরদেহে আগুন দেয়ার চেষ্টা: র‍্যাবের হাতে ৭ জন Logo শহিদ ওসমান হাদির জানাজায় মানুষের ঢল, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জনসমুদ্র Logo মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানুষের স্রোত, পূর্ণ জনসমাবেশ Logo মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পৌঁছেছে হাদির Logo ঢাকায় ১৫ দিনের সফর শেষে লন্ডনে ফিরলেন ডা. জুবাইদা রহমান

কারা কবরের অন্ধকারে নিরাপদ থাকবেন? হাদিসে বর্ণিত সাত সৌভাগ্যবান

নিজস্ব সংবাদ :

সংগৃহিত

মৃত্যু এমন এক বাস্তবতা, যাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো পথ নেই। দুনিয়ার ব্যস্ততার পর মানুষকে যেতেই হবে তার শেষ ঠিকানায়—কবরের নিঃসঙ্গ অন্ধকারে। কবর থেকেই শুরু হয় পরকালের যাত্রা—সৌভাগ্যের পথ অথবা পরীক্ষার পথ। তবে প্রত্যেককেই সেখানে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে—এমন নয়। কিছু মানুষ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে কবরের ফিতনা ও প্রশ্ন থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন হাদিসে এই বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত মানুষদের পরিচয় তুলে ধরেছেন। তাদের সম্পর্কে জানা যেমন প্রশান্তি দেয়, তেমনি আমাদের জীবনের লক্ষ্যও পরিষ্কার করে।

১. ইসলামের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পালনকালে শহীদ হওয়া রিবাতকারী

হজরত সালমান ফারসি (রা.) জানান, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—সীমান্ত পাহারা দেওয়া এক দিন ও রাতের আমল এক মাস নফল রোজা ও নামাজের চেয়েও উত্তম। মৃত্যুর পরও তাদের সওয়াব অব্যাহত থাকে এবং কবরের পরীক্ষাও তাদের জন্য সরিয়ে নেওয়া হয়।

২. আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হওয়া ব্যক্তি

বিভিন্ন হাদিসে শহিদের জন্য ছয়টি মর্যাদার কথা বলা হয়েছে—

  • প্রথম রক্তবিন্দুর সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা

  • জান্নাতের আবাসন দেখানো

  • কবরের আজাব থেকে নিরাপত্তা

  • বড় ভীতির দিনেও তারা নিশ্চিন্ত

  • সম্মানের মুকুট পরানো

  • ৭২ জন হুরের সঙ্গে বিবাহ এবং

  • ৭০ জন আত্মীয়ের জন্য সুপারিশ কবুল

শহিদের জন্য কবরের প্রশ্ন থাকে না।

৩. নিয়মিত সুরা মুলক পাঠকারী

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—সুরা মুলক হলো এমন সুরা, যা পড়লে তা কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা দেয়। প্রতিদিন এই সুরা পড়া যেন কবরের অন্ধকারে একটুকরো আলো নিয়ে যাওয়ার মতো।

৪. জুমার দিন বা রাতে মৃত্যু হওয়া মুমিন

হাদিসে এসেছে, কেউ যদি জুমার দিন বা রাতের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন, তবে কবরের ফিতনা থেকে তাকে রক্ষা করা হবে। এটি একটি বড় সৌভাগ্যের নিদর্শন।

৫. পেটে রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু (শহীদের মর্যাদা)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন—উদরাময় রোগে মৃত ব্যক্তি শহীদের মর্যাদা পান। তাই কবরের প্রশ্ন তাদের ক্ষেত্রেও নেই। একইভাবে আগুনে পুড়ে, পানিতে ডুবে বা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে শহীদের মর্যাদা পাওয়া যায়।

৬. অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু ও গর্ভে মৃত্যু হওয়া শিশু

ইসলামি আলেমদের মতে, শিশুদের ওপর শরিয়তের দায়িত্ব প্রযোজ্য না হওয়ায় তাদেরকে কবরের বিপদের সম্মুখীন হতে হয় না। গর্ভকালীন মৃত্যু হলেও একই বিধান প্রযোজ্য।

৭. মানসিকভাবে অসামর্থ্য বা বুদ্ধিবিকল ব্যক্তি

যাদের বুদ্ধি-ক্ষমতা নেই, তাদের ওপরও কোনো শরিয়তী দায়িত্ব নেই। তাই তাদের কবরেও প্রশ্ন করা হবে না।

শেষত, দুনিয়ার সব অর্জনের চেয়ে এই মর্যাদা অনেক বড়। কবরের নিরাপত্তা পাওয়া মানে মৃত্যুর পরের কঠিন পরীক্ষায় সফলতা। তাই আমাদের জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত এমন কাজ করা, যা কবরের অন্ধকারকে আলোয় ভরে দেয়—ঈমান, সৎকর্ম ও আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:৪৬:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
৫৩ বার পড়া হয়েছে

কারা কবরের অন্ধকারে নিরাপদ থাকবেন? হাদিসে বর্ণিত সাত সৌভাগ্যবান

আপডেট সময় ০৮:৪৬:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

মৃত্যু এমন এক বাস্তবতা, যাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো পথ নেই। দুনিয়ার ব্যস্ততার পর মানুষকে যেতেই হবে তার শেষ ঠিকানায়—কবরের নিঃসঙ্গ অন্ধকারে। কবর থেকেই শুরু হয় পরকালের যাত্রা—সৌভাগ্যের পথ অথবা পরীক্ষার পথ। তবে প্রত্যেককেই সেখানে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে—এমন নয়। কিছু মানুষ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে কবরের ফিতনা ও প্রশ্ন থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন হাদিসে এই বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত মানুষদের পরিচয় তুলে ধরেছেন। তাদের সম্পর্কে জানা যেমন প্রশান্তি দেয়, তেমনি আমাদের জীবনের লক্ষ্যও পরিষ্কার করে।

১. ইসলামের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পালনকালে শহীদ হওয়া রিবাতকারী

হজরত সালমান ফারসি (রা.) জানান, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—সীমান্ত পাহারা দেওয়া এক দিন ও রাতের আমল এক মাস নফল রোজা ও নামাজের চেয়েও উত্তম। মৃত্যুর পরও তাদের সওয়াব অব্যাহত থাকে এবং কবরের পরীক্ষাও তাদের জন্য সরিয়ে নেওয়া হয়।

২. আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হওয়া ব্যক্তি

বিভিন্ন হাদিসে শহিদের জন্য ছয়টি মর্যাদার কথা বলা হয়েছে—

  • প্রথম রক্তবিন্দুর সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা

  • জান্নাতের আবাসন দেখানো

  • কবরের আজাব থেকে নিরাপত্তা

  • বড় ভীতির দিনেও তারা নিশ্চিন্ত

  • সম্মানের মুকুট পরানো

  • ৭২ জন হুরের সঙ্গে বিবাহ এবং

  • ৭০ জন আত্মীয়ের জন্য সুপারিশ কবুল

শহিদের জন্য কবরের প্রশ্ন থাকে না।

৩. নিয়মিত সুরা মুলক পাঠকারী

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—সুরা মুলক হলো এমন সুরা, যা পড়লে তা কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা দেয়। প্রতিদিন এই সুরা পড়া যেন কবরের অন্ধকারে একটুকরো আলো নিয়ে যাওয়ার মতো।

৪. জুমার দিন বা রাতে মৃত্যু হওয়া মুমিন

হাদিসে এসেছে, কেউ যদি জুমার দিন বা রাতের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন, তবে কবরের ফিতনা থেকে তাকে রক্ষা করা হবে। এটি একটি বড় সৌভাগ্যের নিদর্শন।

৫. পেটে রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু (শহীদের মর্যাদা)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন—উদরাময় রোগে মৃত ব্যক্তি শহীদের মর্যাদা পান। তাই কবরের প্রশ্ন তাদের ক্ষেত্রেও নেই। একইভাবে আগুনে পুড়ে, পানিতে ডুবে বা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে শহীদের মর্যাদা পাওয়া যায়।

৬. অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু ও গর্ভে মৃত্যু হওয়া শিশু

ইসলামি আলেমদের মতে, শিশুদের ওপর শরিয়তের দায়িত্ব প্রযোজ্য না হওয়ায় তাদেরকে কবরের বিপদের সম্মুখীন হতে হয় না। গর্ভকালীন মৃত্যু হলেও একই বিধান প্রযোজ্য।

৭. মানসিকভাবে অসামর্থ্য বা বুদ্ধিবিকল ব্যক্তি

যাদের বুদ্ধি-ক্ষমতা নেই, তাদের ওপরও কোনো শরিয়তী দায়িত্ব নেই। তাই তাদের কবরেও প্রশ্ন করা হবে না।

শেষত, দুনিয়ার সব অর্জনের চেয়ে এই মর্যাদা অনেক বড়। কবরের নিরাপত্তা পাওয়া মানে মৃত্যুর পরের কঠিন পরীক্ষায় সফলতা। তাই আমাদের জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত এমন কাজ করা, যা কবরের অন্ধকারকে আলোয় ভরে দেয়—ঈমান, সৎকর্ম ও আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে।