রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সময় সংবাদকে এসব কথা বলেন আইনজ্ঞরা।
অভ্যুত্থানের আড়াই মাস পর গত ২২ অক্টোবরে ৫ দফা ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। যেখানে প্রোক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক ঘোষণাও ছিল। এরপর কেটে গেছে ২ মাস। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) একযোগে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা জানান দেন, ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে প্রকাশ করা হবে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র।
কী থাকছে ঘোষণাপত্রে- এ নিয়ে সব মহলেই রয়েছে নানা কৌতূহল। জানা গেছে, ১৯৪৭ এর দেশভাগ থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, ৭২ এর সংবিধান, বাকশাল, বিগত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের আমলের গুম, খুন, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে ঘোষণাপত্রে। এছাড়া এক এগারোর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সংসদ ভেঙে দেয়া, বিগত সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের অপসারণের বিষয়েও উঠে এসেছে।
জুলাই বিপ্লব প্রমাণ করেছে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক জনগণ। ঘোষণাপত্রে বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পাশাপাশি ঘোষণাপত্রে রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিও। ৩১ ডিসেম্বর প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভোল্যুশন ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হলেও ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের দিন থেকে কার্যকর হয়েছে বলে ধরে নেয়া হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা বলছেন, নতুন রাজনৈতিক ধারায় সাংবিধানিক ঝুঁকি এড়াতে এ ঘোষণাপত্রের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেরিতে হলেও ঘোষণাপত্র রাজনৈতিক ঐক্য গড়তে ভূমিকা রাখবে।
তবে কেউ কেউ বলেন, ঘোষণাপত্রের আইনি ভিত্তি না থাকলেও রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ ঘোষণাপত্র বিবেচনায় নিতে পারে, তবে নিতে পারে না-এমনটা মনে করার কারণ নেই। কিন্তু সেটা আইন প্রক্রিয়ার মধ্যে করতে হবে। অপশক্তি অপতৎপরতার বিরুদ্ধে তাদের এ ঘোষণাপত্র রাজেনৈতিক চাপ হিসেবে বর্তমান সরকার এবং ভবিষৎ সরকারের জন্য কাজ করবে।
বিপ্লবের পর এ ধরনের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা নতুন নয়। তবে জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার আন্দোলনকে বিপ্লব নাকি গণ-অভ্যুত্থান বলা হবে এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।