জন্মদিনে পরিবারসহ ছবি প্রকাশ করে নারীদের নিরাপত্তায় পাঁচ অগ্রাধিকারের ঘোষণা তারেক রহমানের
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে লন্ডন থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে একটি ছবি প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি নিজের ফেসবুক পেজে দীর্ঘ একটি পোস্টে প্রযুক্তির প্রভাব, নারীদের নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নিয়ে মতামত তুলে ধরেন।
স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, প্রযুক্তি আজ মানুষের জীবনযাপন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্ক—সবকিছুই দ্রুত বদলে দিচ্ছে। তিনি ও তার স্ত্রী প্রায়ই ভাবেন, তাদের বড় হওয়ার সময়ের পৃথিবী এবং তাদের কন্যার বেড়ে ওঠার বর্তমান পৃথিবীর মধ্যে কত পার্থক্য তৈরি হয়েছে। অধিক সুযোগের পাশাপাশি হুমকির মাত্রাও বেড়েছে—এ বিষয়টি অভিভাবক হিসেবে তাদের উদ্বিগ্ন করে।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতির পথে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন অসংখ্য নারী শুধু কথা বলা, কাজ করা, পড়াশোনা বা স্বাভাবিকভাবে চলার কারণে অনলাইন বা অফলাইনে হয়রানি ও সহিংসতার মুখোমুখি হন—যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তরুণ প্রজন্মের মেয়েদের জন্য আরও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা দেশের দায়িত্ব বলে তিনি মনে করেন।
পোস্টে তিনি জানিয়ে দেন, নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিএনপি পাঁচটি জরুরি উদ্যোগ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে—
১. ন্যাশনাল অনলাইন সেফটি সিস্টেম:
সাইবার বুলিং, হুমকি, প্রতারণা, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার বা ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের মতো ঘটনার দ্রুত অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা। থাকবে ২৪/৭ হটলাইন, অনলাইন পোর্টাল ও প্রশিক্ষিত রেসপন্ডার। বড় প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলা কনটেন্টের দ্রুত মডারেশনও নিশ্চিত করা হবে।
২. পাবলিক লাইফে নারীর সুরক্ষা প্রোটোকল:
সাংবাদিক, কর্মী, শিক্ষার্থী বা জনজীবনে সক্রিয় নারীরা আক্রমণ বা হয়রানির শিকার হলে পাবে জাতীয় নির্দেশিকা, দ্রুত আইনি সহায়তা, ডিজিটাল সাপোর্ট এবং গোপনীয় রিপোর্ট করার সুযোগ—যাতে কাউকে নীরব থাকতে না হয়।
৩. ডিজিটাল নিরাপত্তা শিক্ষা:
স্কুল–বিশ্ববিদ্যালয়ের ওরিয়েন্টেশন পর্যায়ে বাস্তবমুখী ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ চালু করা হবে। প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা সেফটি ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবেন, আর বার্ষিক সচেতনতা কার্যক্রম তরুণদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
৪. কমিউনিটি পর্যায়ে সহিংসতা প্রতিরোধ ব্যবস্থা:
নিরাপদ যাতায়াত, উন্নত স্ট্রিট লাইটিং, কমিউনিটি হেল্প ডেস্ক এবং ট্রমা-সেনসিটিভ রেসপন্ডার নিয়োগের মাধ্যমে নারীদের দৈনন্দিন চলাচল আরও নিরাপদ করা হবে।
৫. নারীর নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ বাড়ানো:
লিডারশিপ ট্রেনিং, মেন্টরশিপ নেটওয়ার্ক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান–অফিস–কারখানায় শিশু যত্ন সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে নারীরা নেতৃত্বমূলক ভূমিকায় এগিয়ে যেতে পারবেন। তারেক রহমানের ভাষায়, “নারী উন্নত হলে জাতিও এগিয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, মতাদর্শ বা পরিচয় যাই হোক—একটি বিষয় সবার জন্যই সত্য: নারীরা যত নিরাপদ ও ক্ষমতায়িত হবেন, বাংলাদেশ তত বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ দেশ গড়তে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।




















