টাকা ধার চাইলে কীভাবে ‘না’ বলবেন, সম্পর্ক নষ্ট না করেই
মাসের শেষ দিকে টানাটানির অভিজ্ঞতা অনেকেরই পরিচিত। অনেক সময় এই পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে কাছের মানুষদের কাছে টাকা ধার চাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। কারও কাছে এটা স্বাভাবিক হয়ে উঠলেও, কেউ কেউ বিষয়টিকে অস্বস্তিকর বলেই মনে করেন।
অন্যদিকে, যখন আপনাকেই বারবার কেউ ধার চাইতে থাকেন, তখন অনেকেই সংকোচে পড়ে না বলতে পারেন না। ফলে নিজের সঞ্চয় থেকেও দিতে বাধ্য হন। এতে আর্থিক চাপে পড়ার পাশাপাশি সম্পর্কেও প্রভাব পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘ব্যাংরেট’-এর ২০২৪ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে— চারজনের একজন ধার দেওয়ার পর ফেরত পান না। ফলে ওই সম্পর্কগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেতন হওয়া জরুরি।
এই সমস্যা মোকাবিলায় আর্থিক থেরাপি বিশেষজ্ঞ এজা ইভান্স কিছু বাস্তবমুখী পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রথমেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে— আপনি ধার দিতে পারবেন কিনা। যদি সামর্থ্য না থাকে, তবে তা সোজাসাপ্টা এবং নম্রভাবে জানিয়ে দেওয়া উচিত। কারও অনুরোধ রাখতে গিয়ে নিজের আর্থিক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলা ঠিক নয়।
তবে একথা স্বীকার করতেই হয় যে, এসব কথা বলা সহজ নয়। অনেক সময় পরিচিতজনেরা আপনার খরচের ধরন দেখেই ধরে নেন আপনি সাহায্য করতে পারবেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে— আপনার ব্যয়ের হিসাব আপনি ছাড়া অন্য কেউ ঠিকমতো জানেন না।
যেভাবে ‘না’ বলবেন সম্পর্ক অটুট রেখে:
✅ সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করুন:
ধার চাওয়া মানেই পুরো টাকা দিতে হবে, তা নয়। আপনি চাইলে যতটুকু দিতে পারেন, সেটুকু অফার করুন। যেমন, কেউ যদি ৫০০০ টাকা চান, আর আপনি বুঝতে পারেন এতে আপনার বাজেট চাপবে, তাহলে ৫০০ বা ১০০০ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিন।
✅ অপরাধবোধ হতেই পারে, তবে নিজেকে বুঝিয়ে বলুন:
না বলে দিলে অপরাধবোধ আসতেই পারে। কিন্তু ভাবুন, আপনি নিজের ভবিষ্যতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চাইছেন। জরুরি সঞ্চয়ের জন্য যদি আপনি টাকা জমাচ্ছেন, সেটাই আপনার প্রাধান্য হওয়া উচিত। প্রয়োজনে এই লক্ষ্যগুলো লিখে রাখুন এবং নিজেকে মনে করিয়ে দিন।
✅ আর্থিক সীমা নির্ধারণ করুন:
নিজের জন্য একটা সীমা ঠিক করুন, কী পরিমাণে সাহায্য করতে পারবেন। এটা কঠিন মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি আপনার জন্য সুফল বয়ে আনবে এবং ভবিষ্যতের আর্থিক সংকট এড়াতে সাহায্য করবে।
সঠিকভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারলে, সম্পর্ক বজায় রেখেই ‘না’ বলাও সম্ভব। নিজের আর্থিক সুস্থতা রক্ষা করাই শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে জরুরি।