ঢাকা ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo রাঙ্গামাটির ক্রীড়া অবকাঠামো নিয়ে হতাশ বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর Logo সোজা আঙুলে না উঠলে বাঁকা করব, ঘি আমাদের লাগবেই: জামায়াত নেতা তাহের Logo তিন বছরে রাহা: ভাইয়ের মেয়েকে জন্মদিনে আবেগঘন বার্তা রণবীরের বোনের Logo ট্রাম্পের দাবি: ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ৮ যুদ্ধবিমান ধ্বংস, তার মধ্যস্থাতেই শান্তি স্থাপন Logo প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কাঠামোতে বড় পরিবর্তন Logo জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি তুললেন বিএনপি নেতা আলাল Logo ইমরান হাশমির কারণে স্কুলে যেতে লজ্জা পাচ্ছেন তার ছেলে আয়ান! Logo স্বর্ণপ্রেমীদের জন্য সুখবর! কমেছে ভরিপ্রতি দাম Logo প্রেম, পরকীয়া আর বিতর্কে টালমাটাল ব্রিটিশ রাজপরিবার Logo সুদানে আরএসএফ বাহিনীর তাণ্ডব, মানবিক বিপর্যয় তীব্র

যেভাবে হত্যা করা হয় শিশু মুনতাহাকে

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

যেভাবে হত্যা করা হয় শিশু মুনতাহাকে।

সিলেটের কানাইঘাটে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন (৬) হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়ে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


তিনি বলেন, ৩ নভেম্বর মুনতাহার বাবা তার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে থানায় একটি জিডি করেন। পরে তদন্তের সূত্র ধরে মুনতাহার সাবেক গৃহশিক্ষিকা শামিমা বেগম মার্জিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেন তিনি।


জিজ্ঞাসাবাদে শামিমা বেগম মার্জিয়া জানান, গত ৩ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে তাদের ঘরে শিশু মুনতাহাকে গলা টিপে ও বস্তাচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর শিশুটির মরদেহ মূলত ডোবায় কাদার মধ্যে পুঁতে রাখা হয়। পরে তার মা ঘটনাকে অন্য রূপ দিতে মরদেহ ডোবা থেকে তুলে আজ রোববার ভোরে শিশুটির বাড়ির পাশে একটি পুকুরে ফেলে আসতে যান। তবে পথে স্থানীয় লোকজনের হাতে তিনি আটক হন। আটক ওই নারীর নাম আলিফজান (৫৫)। তিনি কানাইঘাট সদর উপজেলার বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের বাসিন্দা। 

পুলিশ সুপার মাহবুব আলম  বলেন, ‘আমরা এই ঘটনায় যাদের ধরতে পেরেছি তার বাইরেও আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা তদন্ত করে বের করে আনার চেষ্টা করছি, আমাদের বিভিন্ন ইউনিট এই অনুসন্ধানে একযোগে কাজ করছে।’

এদিকে নিখোঁজ পাঁচ বছরের শিশুকন্যা মুনতাহা আক্তার জেরিনের মরদেহ দেখতে বাড়িতে ভিড় করেন আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ। মুনতাহাকে  ফিরে পেতে গেলো ৭ দিন ধরেই অধীর অপেক্ষায় ছিলো মা-বাবাসহ স্বজনরা। কিন্তু সে ফিরলো। জীবিত নয় লাশ হয়ে। শিশু মুনতাহা একই গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।

জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর বিকেলে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের নিজ বাড়ির উঠান থেকে নিখোঁজ হয়েছিলো মুনতাহা।

অবশেষে রোববার ভোর ৪টার দিকে বাড়ির পাশের ডোবায় গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে এবং পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রতিবেশী আলিফজানসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।

এ দিকে এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা জড়িতদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, খাস জমিতে বসবাস করেন ভিক্ষুক আলিফজান। প্রতিবেশী শিশু মুনতাহার পরিবারের সঙ্গে সহানুভূতির সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো আলিফজানের পরিবারের। মুনতাহাকে পড়াতো আলিফজানের মেয়ে মারজিয়া। গত ৩ নভেম্বর শিশু মুনতাহা নিখোঁজের পর বিভিন্ন নম্বর থেকে পরিবারের কাছে চাওয়া হয় টাকা। ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে আসে হুমকিও। ঘটনাটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত আলিফজানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৪৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪
১৬১ বার পড়া হয়েছে

যেভাবে হত্যা করা হয় শিশু মুনতাহাকে

আপডেট সময় ০৪:৪৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

যেভাবে হত্যা করা হয় শিশু মুনতাহাকে।

সিলেটের কানাইঘাটে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন (৬) হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়ে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


তিনি বলেন, ৩ নভেম্বর মুনতাহার বাবা তার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে থানায় একটি জিডি করেন। পরে তদন্তের সূত্র ধরে মুনতাহার সাবেক গৃহশিক্ষিকা শামিমা বেগম মার্জিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেন তিনি।


জিজ্ঞাসাবাদে শামিমা বেগম মার্জিয়া জানান, গত ৩ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে তাদের ঘরে শিশু মুনতাহাকে গলা টিপে ও বস্তাচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর শিশুটির মরদেহ মূলত ডোবায় কাদার মধ্যে পুঁতে রাখা হয়। পরে তার মা ঘটনাকে অন্য রূপ দিতে মরদেহ ডোবা থেকে তুলে আজ রোববার ভোরে শিশুটির বাড়ির পাশে একটি পুকুরে ফেলে আসতে যান। তবে পথে স্থানীয় লোকজনের হাতে তিনি আটক হন। আটক ওই নারীর নাম আলিফজান (৫৫)। তিনি কানাইঘাট সদর উপজেলার বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের বাসিন্দা। 

পুলিশ সুপার মাহবুব আলম  বলেন, ‘আমরা এই ঘটনায় যাদের ধরতে পেরেছি তার বাইরেও আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা তদন্ত করে বের করে আনার চেষ্টা করছি, আমাদের বিভিন্ন ইউনিট এই অনুসন্ধানে একযোগে কাজ করছে।’

এদিকে নিখোঁজ পাঁচ বছরের শিশুকন্যা মুনতাহা আক্তার জেরিনের মরদেহ দেখতে বাড়িতে ভিড় করেন আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ। মুনতাহাকে  ফিরে পেতে গেলো ৭ দিন ধরেই অধীর অপেক্ষায় ছিলো মা-বাবাসহ স্বজনরা। কিন্তু সে ফিরলো। জীবিত নয় লাশ হয়ে। শিশু মুনতাহা একই গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।

জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর বিকেলে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের নিজ বাড়ির উঠান থেকে নিখোঁজ হয়েছিলো মুনতাহা।

অবশেষে রোববার ভোর ৪টার দিকে বাড়ির পাশের ডোবায় গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে এবং পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রতিবেশী আলিফজানসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।

এ দিকে এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা জড়িতদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, খাস জমিতে বসবাস করেন ভিক্ষুক আলিফজান। প্রতিবেশী শিশু মুনতাহার পরিবারের সঙ্গে সহানুভূতির সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো আলিফজানের পরিবারের। মুনতাহাকে পড়াতো আলিফজানের মেয়ে মারজিয়া। গত ৩ নভেম্বর শিশু মুনতাহা নিখোঁজের পর বিভিন্ন নম্বর থেকে পরিবারের কাছে চাওয়া হয় টাকা। ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে আসে হুমকিও। ঘটনাটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত আলিফজানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।