সালমান শাহ হত্যা মামলা: ৪ নম্বর আসামির তালিকায় অভিনেতা ডন
প্রায় তিন দশক পর বাংলা সিনেমার সুপারস্টার সালমান শাহের মৃত্যু নিয়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছে পুরোনো সেই রহস্য। আদালতের নির্দেশে এতদিনের অপমৃত্যু মামলা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যা মামলা হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
মামলাটি দায়ের করেছেন সালমান শাহের মামা আলমগীর কুমকুম। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে সালমানের স্ত্রী সামিরা হককে। এছাড়া অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, অভিনেতা ডনসহ মোট ১১ জনের নাম। এজাহারে আরও কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে।
এই মামলার ৪ নম্বর আসামি হিসেবে নাম এসেছে চলচ্চিত্রের খলনায়ক অভিনেতা ডন-এর। তদন্তে সাক্ষ্য ও জবানবন্দি থেকে উঠে এসেছে, সালমান শাহকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল এবং সে ঘটনায় ডনের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
তবে ডন বরাবরই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সালমান শাহ তার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং মৃত্যুর দিন তিনি ঢাকায় ছিলেন না। তার ভাষায়, “সালমান ছিল আমার হৃদয়ের মানুষ, তার চলে যাওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্ট।”
অন্যদিকে, সালমান শাহের ভক্তরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন, ডনের সহযোগিতায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। তাদের মতে, ঘটনার প্রকৃত সত্য জানতে ডনকে আইনের আওতায় এনে তদন্ত হওয়া জরুরি।
গত সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যু মামলার পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন এবং সেটিকে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সালমান শাহের মামা রমনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রমনা মডেল থানা পুলিশকে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা শুরু থেকেই সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছেন। যদিও পিবিআইয়ের (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) প্রতিবেদনে মৃত্যুটিকে আত্মহত্যা বলা হয়েছিল, পরিবার তা কখনোই মেনে নেয়নি।
মামলাকারী আলমগীর কুমকুম সাংবাদিকদের বলেন, “সালমান শাহর বাবা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। তিনি বারবার চেয়েছিলেন মামলাটি হত্যা হিসেবে তদন্ত হোক, কিন্তু সে সুযোগ পাননি। এখন অবশেষে আদালত সেই নির্দেশ দিয়েছেন। ইনশাআল্লাহ সত্য প্রমাণ হবে।”
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার অকাল মৃত্যু তখন গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এবার নতুন তদন্তে হয়তো বেরিয়ে আসবে সেই বহুল আলোচিত রহস্যের আসল সত্য।