ঢাকা ০৫:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেঁটে ১২ কিলোমিটার দূরের বিদ্যালয়ে যেত শিক্ষার্থীরা!

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

হেঁটে ১২ কিলোমিটার দূরের বিদ্যালয়ে যেত শিক্ষার্থীরা!

খাগড়াছড়ির ১৫টি গ্রামে ছিল না কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এজন্য হেঁটে ১২ কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতে হতো শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘদিন পরে হলেও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে যাচ্ছে দীঘিনালার লম্বাছড়াসহ কয়েকটি এলাকা। আগামী বছর জানুয়ারি থেকে পুরোদমে শুরু হচ্ছে একটি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম।

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ ধরে কোমলমতী শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে স্কুলে। একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভাবে এতোদিন অনেকেই বঞ্চিত ছিল শিক্ষার আলো থেকে।


স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩ বছর পরও খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার লম্বাছড়াসহ আশপাশের ১৫টি গ্রামে গড়ে ওঠেনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এসব এলাকার শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক পাঠ শেষে যেতে হতো ১২ কিলোমিটার দূরের ছোট মেরুন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় অথবা দিঘীনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। এতে অনেক শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক পাঠ অপূর্ণই থেকে যেতো। ঝরে পড়া এসব শিক্ষার্থীরা সমাজে রাখতে পারতো না তেমন কোনো ভূমিকা।


এলাকাবাসীর দাবির মুখে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে জেলা প্রশাসন লম্বাছড়ায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। প্রতিষ্ঠানটির নাম দেয়া হয় জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ১০ মাসের মধ্যেই কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয় পাঠদান। গত সপ্তাহে বিদ্যালয়টির নতুন আরেকটি ভবন নির্মাণ করে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। দীর্ঘদিন পর হলেও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ হওয়ায় খুশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আবরণ ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা ৪২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু করেছি। ধাপে ধাপে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়বে।’

দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুতই একটি আবাসিক ছাত্রাবাস নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

দীঘিনালা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘এর মাধ্যমে এলাকার রাস্তাঘাটসহ নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। এ বিদ্যালয় থেকে আলো ছড়িয়ে পড়বে পুরো এলাকায়। এটিই হবে উন্নয়নের কেন্দ্র।’

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘এ বিদ্যালয় থেকে যাতে উদ্যোক্তা তৈরি হয় সেজন্য এখানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। কম্পিউটার ল্যাবসহ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হবে।’

বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য এক একর জমি দান করেন নয়নময় ত্রিপুরা নামে এক চিকিৎসক। আর এটি নির্মাণে ব্যয় হয় ২৫ লাখ টাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:২৪:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
১০ বার পড়া হয়েছে

হেঁটে ১২ কিলোমিটার দূরের বিদ্যালয়ে যেত শিক্ষার্থীরা!

আপডেট সময় ০৫:২৪:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

হেঁটে ১২ কিলোমিটার দূরের বিদ্যালয়ে যেত শিক্ষার্থীরা!

খাগড়াছড়ির ১৫টি গ্রামে ছিল না কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এজন্য হেঁটে ১২ কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতে হতো শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘদিন পরে হলেও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে যাচ্ছে দীঘিনালার লম্বাছড়াসহ কয়েকটি এলাকা। আগামী বছর জানুয়ারি থেকে পুরোদমে শুরু হচ্ছে একটি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম।

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ ধরে কোমলমতী শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে স্কুলে। একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভাবে এতোদিন অনেকেই বঞ্চিত ছিল শিক্ষার আলো থেকে।


স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩ বছর পরও খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার লম্বাছড়াসহ আশপাশের ১৫টি গ্রামে গড়ে ওঠেনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এসব এলাকার শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক পাঠ শেষে যেতে হতো ১২ কিলোমিটার দূরের ছোট মেরুন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় অথবা দিঘীনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। এতে অনেক শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক পাঠ অপূর্ণই থেকে যেতো। ঝরে পড়া এসব শিক্ষার্থীরা সমাজে রাখতে পারতো না তেমন কোনো ভূমিকা।


এলাকাবাসীর দাবির মুখে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে জেলা প্রশাসন লম্বাছড়ায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। প্রতিষ্ঠানটির নাম দেয়া হয় জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ১০ মাসের মধ্যেই কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয় পাঠদান। গত সপ্তাহে বিদ্যালয়টির নতুন আরেকটি ভবন নির্মাণ করে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। দীর্ঘদিন পর হলেও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ হওয়ায় খুশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আবরণ ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা ৪২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু করেছি। ধাপে ধাপে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়বে।’

দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুতই একটি আবাসিক ছাত্রাবাস নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

দীঘিনালা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘এর মাধ্যমে এলাকার রাস্তাঘাটসহ নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। এ বিদ্যালয় থেকে আলো ছড়িয়ে পড়বে পুরো এলাকায়। এটিই হবে উন্নয়নের কেন্দ্র।’

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘এ বিদ্যালয় থেকে যাতে উদ্যোক্তা তৈরি হয় সেজন্য এখানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। কম্পিউটার ল্যাবসহ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হবে।’

বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য এক একর জমি দান করেন নয়নময় ত্রিপুরা নামে এক চিকিৎসক। আর এটি নির্মাণে ব্যয় হয় ২৫ লাখ টাকা।