ব্রেকিং নিউজ :
দফায় দফায় ছাত্রদলের দুগ্রুপের সংঘর্ষ, জরুরি বিভাগে কোপানো হয় কয়েকজনকে
নরসিংদীতে জেলা ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলি ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছে।
বুধবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে নরসিংদীর চিনিশপুর এলাকায় জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের নিচতলায় প্রথম দফায় সংঘর্ষ হয়, পরে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের ভেতর আরেক দফা হামলা হয়।
ঘটনায় জড়িত দুই গ্রুপের একগ্রুপের নেতৃত্ব দেন নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক জাহিদ হোসান জাপ্পি এবং অপরপক্ষ নরসিংদী জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ।
এই ঘটনায় আহতরা হলেন, পৌর শহরের বাশাইল এলাকার মানিক মিয়ার ছেলে মিনহাজুর রহমান, দাসপাড়ার ডালিম মিয়ার ছেলে রিপন (২২), সদরের আলোকবালি এলাকার ফুরকান মিয়ার ছেলে (২৫), চিনিশপুরের ছানা উল্লাহর ছেলে তৌফিক(২৭), ব্রাহ্মন্দী এলাকার জাকিরের ছেলে জাহিদ হোসেন জাপ্পি (২৮), একই এলাকারের শহিদুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৭), সংগীতার নাসিরুদ্দিনের ছেলে জীবন (২০), নজরুল ইসলামের ছেলে জাহিদ বিন রাফি (২২), আবুল কাশেমের ছেলে অয়ন, বাবুল মিয়ার ছেলে শিমুল ( ২৮), দাসপাড়ার দানিশ মিয়ার ছেলে শিপন (২৫), সাহেপ্রতাপের খোরশেদ এর ছেলে সানভির আলম নিবিড় (২৫)। এছাড়া আরও অন্তত ৪ জন আহতের নাম পাওয়া যায়নি।
তারা সবাই জাপ্পি গ্রুপের সদস্য এবং স্থানীয় বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী।
অপরদিকে, নাহিদসহ নাহিদ গ্রুপের বেশকিছু সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও তাদের বিস্তারিত বিবরণ ও নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া আহত ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, বিকেলে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় বসে থাকা নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ হসান জাপ্পি গ্রুপের ওপর হামলা করে নরসিংদী জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদের গ্রুপ। এ সময় দুই গ্রুপের মধ্যে শুরুতে ধস্তাধস্তি ও পরে মারামারি শুরু হয়। এতে জাপ্পি গ্রুপের অন্তত ১৪ জন আহত হয়।
পরে আহতরা নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে হাসপাতালে ঢুকে আহতদের ওপর নাহিদ গ্রুপ আক্রমণ করে। এ সময় আহতদের মধ্য থেকে আরও তিন জনকে কুপিয়ে এবং হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একটি কক্ষে ভাঙচুর করে চলে যায় নাহিদ গ্রুপের সদস্যরা ৷
ঘটনার পরে সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করে নরসিংদী মডেল থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, দলীয় কার্যালয়ে চেয়ারে বসা নিয়ে তর্কের সূত্রপাত। এরপর ঘটনাটি মারামারিতে রুপ নেয়। সেখানে একদফা মারামারির পর দলীয় নেতারা ঘটনাটির সমাধান করে দুই গ্রুপকে মিলিয়ে দেয়। পরে আহতরা নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে নাহিদ গ্রুপ জাপ্পি গ্রুপের ওপর হামলা করে।
ঘটনায় আহত জাহিদ হোসেন জাপ্পি বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করেছি জুলাইয়ে। আমরা সাধারণ ছাত্র। আমাদের ওপর নাহিদের নেতৃত্বে হামলা করা হয়েছে। প্রথম দফা হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে আসার পর দ্বিতীয় দফায় হাসপাতালে এসে হামলা করেছে আমাদের।’
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তৌহিদুল আলম বলেন, ১০ জন জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে তিন জনকে কোপানো হয়েছে হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভেতরেই। আরও ৪ থেকে ৫ জন আহত থাকলেও হাসপাতালে হামলার পর তারা পালিয়ে যায় আতঙ্কে। হামলার সময় হাসপাতালে ভাঙচুরের চেষ্টা করা হয়েছে।
এ দিকে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ বলেন, জেলা বিএনপির কার্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তা আমার সাথে কোনো সম্পর্ক নাই। নিচে কয়েকজন তারা মারামারি করছে সেই খবর পেয়ে আমি গিয়ে তাদের মিলিয়ে দেই। আর হাসপাতালে হামলার যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেই বিষয়েও আমি কিছু জানি না। তারা মিথ্যা অভিযোগ করছে আমার বিরুদ্ধে। আমি বা আমার লোকজন যদি তাদের ওপর হামলা করে থাকে তাহলে সিসি ক্যামেরা আছে, ফুটেজ দেখেন আমরা কেউ হামলা করেছি কিনা। রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্য তারা এসব অভিযোগ করছে।
নরসিংদী মডেল থানার উপপরিদর্শক ইউসুফ হাসপাতাল পরিদর্শন করলেও পুরো ঘটনা বিস্তারিত না জেনে কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে, রাত ১২ টার দিকে নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মো. এমদাদুল হকের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।