পিরোজপুরে বিনামূল্যের সরকারি বই কেজি দরে বিক্রি!
পিরোজপুরে বিনামূল্যের সরকারি বই কেজি দরে বিক্রি!
বিনামূলের সরকারি বই ফেরিওয়ালার কাছে কেজি দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার এক মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
খবর পেয়ে বৈঠাকাটা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ সুমন সরকার বইগুলো জব্দ করেন। বইগুলার ওজন প্রায় ১৪শত কেজি। যার মূল্য আনুমানিক ১ লাখ টাকা।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার ৩নং দেউলবাড়ী ইউনিয়নের বিলডুমুরীয়া গ্রামের ডুমুরিয়া নেছারিয়া বালিকা (আলিম) মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল হক তার মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মো. নুরুল ইসলামের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে গোপনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত ২০২২-২৩-২৪ ও ২৫ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের সরকারি বিনামূল্যের বই কেজি দরে ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করেন। স্থানীয়রা ফেরিওয়ালাদের কাছে সরকারি বই দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জবাবে ফেরিওয়ালারা জানান, মাদ্রাসা অধ্যক্ষের কাছ থেকে বইগুলো কিনেছেন।
ফেরিওয়ালা মামুন জানান, বইগুলো ডুমুরিয়া নেছারিয়া বালিকা আলিম মাদ্রাসা থেকে কিনেছেন। এছাড়া আরেও ৫ টি পুরাতন টিউবয়েল এবং আয়রন ব্রিজের লোহার পাত কেজি দরে কিনেছেন ওই একই মাদ্রাসা থেকে।
মাদ্রাসার দপ্তরি নুরুল হক বলেন, ‘প্রিন্সিপাল হুজুর দরদাম করেছে। আমাকে বলেছে মাইপা দিতে। দুটি চাবি রুমের একটা শরীফ ও আর একটা অফিস সহকারীর কাছে। শরিফ ভাই আসতে দেরি হওয়ায় আমি মাদ্রাসার চাবি এনে বই বের করে দেই । বই, খাতা, সাদা কাগজ, লোহা পচিশ হাজার তিন শত টাকায় বিক্রি করি।’
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. একে এম ফজলুল হক বলেন, ‘বইগুলো পুরান, কিছু বন্যায় ভিজা আছে। আমাদের পরিক্ষার খাতা এগুলো বিক্রির জন্য বলেছি। তারপর কী হইছে আমি বলতে পারি না। পড়ে থাকা টিওবয়েল বিক্রির জন্য বলেছি। ২৫ সালের অল্প কয়ডা বই পাইছি তা শিক্ষার্থীদের মাঝে বন্টন করে দিয়েছি।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে আমার কাছে খবরটা পৌঁছে, পৌঁছার পরে অধ্যক্ষকে রিং দিলাম, অধ্যক্ষ বলেন পুরান খাতাপত্র, একটা কলের মাথা, কয়টা পুরান বই। সরকারি কোনো বই বিক্রি করতে পারেন না। আপনার যদি অতিরিক্ত বই থাকে সেটা আপনি উপজেলায় জমা দেবেন। যদি বিক্রি করতে চান তাহলে কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বিক্রি করতে হবে। বিক্রির সব টাকা সরকারি কোষাগরে জমা দিতে হবে। না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুপ রতন সিংহ জানান, বিনা অনুমতিতে পাঠ্যপুস্তকসহ কিছু মালামাল বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগটা তদন্ত করার জন্য থানা পুলিশকে বলেছি। থানা পুলিশ সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহমুদ আল ফরিদ ভূঁইয়া বলেন, এবিষয়ে বৈঠাকাটা তদন্ত কেদ্রর অফিসার গেছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।