আজ গাজা সংঘর্ষের দুই বছর: উত্তাল মধ্যপ্রাচ্য, পাল্টে যাওয়া বৈশ্বিক রাজনীতি
আজ দুই বছর পূর্ণ হলো সেই দিনটির, যেদিন হামাসের আকস্মিক হামলায় চমকে উঠেছিল ইসরায়েল। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের টানা বোমাবর্ষণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় গাজা উপত্যকা, যেখানে প্রাণ হারান ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।
বিশ্লেষকদের মতে, হামাসের ওই আক্রমণ শুধু গাজার ভেতরে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে। ইরান, হিজবুল্লাহ ও হুতি-সহ ইসরায়েলবিরোধী জোটগুলো আরও ঘনিষ্ঠ হয়। আগে যেখানে এসব সংঘর্ষ সীমাবদ্ধ ছিল প্রক্সি যুদ্ধে, ৭ অক্টোবরের ঐতিহাসিক ঘটনার পর ইরান সরাসরি ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
এ সংঘাতের পরিধি ছড়িয়ে পড়ে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ড. সানাম ভাকিল জানান, গত দুই বছরে অঞ্চলটিতে একাধিক ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করা হয়েছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা, যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপ—এসব মিলিয়ে গোটা অঞ্চলটি এখন চরম অস্থিরতায় ভুগছে।
যুদ্ধের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো ইসরায়েলকে পূর্ণ সমর্থন দিলেও, গাজায় চলমান সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। পশ্চিমা দেশগুলোতে বাড়ছে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ও সচেতনতা, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতিসংঘে গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে মার্কিন ভেটো প্রয়োগ পশ্চিমা বিশ্বের দ্বিমুখী নীতির প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছে। একইসঙ্গে, গ্লোবাল সাউথসহ বিকল্প শক্তিবলয়ের উত্থান বিশ্ব রাজনীতিকে একমেরু থেকে বহুমেরুভিত্তিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।