ঢাকা ০৪:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে একমত ইইউ, তালিকায় কয়েক লাখ বাংলাদেশি

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

ইউরোপের অভ্যন্তরীণ সমস্যার নাম অবৈধ অভিবাসী। কখনো ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে কখনো পশ্চিম বলকান রুট দিয়ে লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রবেশ করছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে রুয়ান্ডা, আলবেনিয়া অথবা তৃতীয় কোন দেশে পাঠানোর মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এই তালিকায় রয়েছে দেড় থেকে দুই লাখের মত প্রবাসী বাংলাদেশিও।

 

অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসীদের চাপে নাজুক অবস্থা গোটা ইউরোপের। প্রায় প্রতিবছরই কয়েকলাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী নানা বিপৎসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে একটু সুখের আশায় উন্নত এই মহাদেশটিতে প্রবেশ করে।

 

কখনো নৌপথে পশ্চিম আফ্রিকার লিবিয়া থেকে উত্তাল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে আবার কখনো অভিবাসন প্রত্যাশীদের পরিচিত ও জনপ্রিয় পথ তুরস্ক হয়ে পশ্চিম বলকান রুট দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে জার্মানি, ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল এবং ফ্রান্সে প্রবেশ করে।
 
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সীমান্ত রক্ষা সংস্থা ফ্রন্টটেক্স জানায়, শুধু মাত্র ২০২৩ সালেই প্রায় তিন লাখ ৬০ হাজার অবৈধ অভিবাসী ইউরোপে প্রবেশ করেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা গেলে বছরের কাছাকাছি বলেও জানায় সংস্থাটি।
 
 
মধ্য ইউরোপের অভিবাসীদের পছন্দের দেশ জার্মানি। দেশটির পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগ জানায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসী জার্মানিতে প্রবেশ করেছে।
 
অন্যদিকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি ও মাল্টায় আসা অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ইইউর বাইরে চলে যাওয়া যুক্তরাজ্যেও এই সংখ্যা লাখের বেশি। যাদের বেশিরভাগই তুরস্ক, আফগানিস্তান ও সিরিয়াসহ আফ্রিকার নানা দেশের নাগরিক। তালিকায় আছে বাংলাদেশিদের নামও।
 
ইইউর বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশের দূতাবাস ও নানা সূত্র মতে, শুধুমাত্র ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ও পর্তুগালেই আশ্রয় প্রার্থী অবৈধ বাংলাদেশিদের সংখ্যা দেড় থেকে দুই লাখের কাছাকাছি। পূর্ব ইউরোপের বসনিয়ার হার্জেগোভিনা, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়াতেও মানবেতর জীবন যাপন করছে এমন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের সংখ্যাও কম না।
 
বছরের পর বছর ধরে অনিয়ন্ত্রিত এসব অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসীরা নানা দেশে প্রবেশ করে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। স্থানীয়দের খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবসাসহ অসামাজিক নানা কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগও রয়েছে এসব অভিবাসীদের বিরুদ্ধে।
 
এর ফলে পাল্টে যেতে থাকে গোটা ইউরোপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও। ভোটে স্থানীয়দের পছন্দ হয়ে উঠে কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো।
 
সম্প্রতি অবৈধদের ঢল ঠেকাতে অভিবাসীদের আলবেনিয়া পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ইতালি। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য আফ্রিকার রুয়ান্ডাতে এবং জার্মানিও দেশটির সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি তৃতীয় কোন দেশে এসব অবৈধদের পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টিকে অমানবিক বলছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
 
এদিকে সম্প্রতি ইইউর পার্লামেন্টে শুরু হয় অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে বিশেষ আলোচনা। ইইউর সদস্যভুক্ত দেশগুলো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন।
 

ইউরোপ
অবৈধ অভিবাসী
অভিবাসনপ্রত্যাশী
অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:৩৪:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
১৬ বার পড়া হয়েছে

অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে একমত ইইউ, তালিকায় কয়েক লাখ বাংলাদেশি

আপডেট সময় ০৮:৩৪:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

ইউরোপের অভ্যন্তরীণ সমস্যার নাম অবৈধ অভিবাসী। কখনো ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে কখনো পশ্চিম বলকান রুট দিয়ে লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রবেশ করছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে রুয়ান্ডা, আলবেনিয়া অথবা তৃতীয় কোন দেশে পাঠানোর মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এই তালিকায় রয়েছে দেড় থেকে দুই লাখের মত প্রবাসী বাংলাদেশিও।

 

অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসীদের চাপে নাজুক অবস্থা গোটা ইউরোপের। প্রায় প্রতিবছরই কয়েকলাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী নানা বিপৎসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে একটু সুখের আশায় উন্নত এই মহাদেশটিতে প্রবেশ করে।

 

কখনো নৌপথে পশ্চিম আফ্রিকার লিবিয়া থেকে উত্তাল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে আবার কখনো অভিবাসন প্রত্যাশীদের পরিচিত ও জনপ্রিয় পথ তুরস্ক হয়ে পশ্চিম বলকান রুট দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে জার্মানি, ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল এবং ফ্রান্সে প্রবেশ করে।
 
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সীমান্ত রক্ষা সংস্থা ফ্রন্টটেক্স জানায়, শুধু মাত্র ২০২৩ সালেই প্রায় তিন লাখ ৬০ হাজার অবৈধ অভিবাসী ইউরোপে প্রবেশ করেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা গেলে বছরের কাছাকাছি বলেও জানায় সংস্থাটি।
 
 
মধ্য ইউরোপের অভিবাসীদের পছন্দের দেশ জার্মানি। দেশটির পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগ জানায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসী জার্মানিতে প্রবেশ করেছে।
 
অন্যদিকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি ও মাল্টায় আসা অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ইইউর বাইরে চলে যাওয়া যুক্তরাজ্যেও এই সংখ্যা লাখের বেশি। যাদের বেশিরভাগই তুরস্ক, আফগানিস্তান ও সিরিয়াসহ আফ্রিকার নানা দেশের নাগরিক। তালিকায় আছে বাংলাদেশিদের নামও।
 
ইইউর বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশের দূতাবাস ও নানা সূত্র মতে, শুধুমাত্র ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ও পর্তুগালেই আশ্রয় প্রার্থী অবৈধ বাংলাদেশিদের সংখ্যা দেড় থেকে দুই লাখের কাছাকাছি। পূর্ব ইউরোপের বসনিয়ার হার্জেগোভিনা, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়াতেও মানবেতর জীবন যাপন করছে এমন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের সংখ্যাও কম না।
 
বছরের পর বছর ধরে অনিয়ন্ত্রিত এসব অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসীরা নানা দেশে প্রবেশ করে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। স্থানীয়দের খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবসাসহ অসামাজিক নানা কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগও রয়েছে এসব অভিবাসীদের বিরুদ্ধে।
 
এর ফলে পাল্টে যেতে থাকে গোটা ইউরোপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও। ভোটে স্থানীয়দের পছন্দ হয়ে উঠে কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো।
 
সম্প্রতি অবৈধদের ঢল ঠেকাতে অভিবাসীদের আলবেনিয়া পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ইতালি। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য আফ্রিকার রুয়ান্ডাতে এবং জার্মানিও দেশটির সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি তৃতীয় কোন দেশে এসব অবৈধদের পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টিকে অমানবিক বলছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
 
এদিকে সম্প্রতি ইইউর পার্লামেন্টে শুরু হয় অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে বিশেষ আলোচনা। ইইউর সদস্যভুক্ত দেশগুলো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন।
 

ইউরোপ
অবৈধ অভিবাসী
অভিবাসনপ্রত্যাশী
অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু