ঢাকা ০৫:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo ইসরায়েলের জন্য নতুন সাবমেরিন রপ্তানিতে সম্মতি দিল জার্মানি Logo বিটকয়েনের মূল্য নতুন উচ্চতায়, ইথেরিয়াম-বাইন্যান্সেও উল্লম্ফন Logo সিলেটে অভিযানে ৫২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার Logo সিলেটের সাদা পাথর লুট: তদন্ত ও ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট আবেদন Logo যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৯৩৫ কোটি টাকায় দুটি বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ কিনছে সরকার Logo পিকে হালদারের রেড নোটিশ আরও পাঁচ বছর বাড়াতে ইন্টারপোলকে চিঠি দেবে দুদক Logo বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হতে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান Logo জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পেছনে চালের দাম দায়ী: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর Logo এখনও ভারতের সাড়া মেলেনি: বাণিজ্য আলোচনার জন্য পাঠানো চিঠির বিষয়ে ঢাকার অপেক্ষা Logo অতিরিক্ত আইজি হিসেবে পদোন্নতি পেলেন পুলিশের সাত কর্মকর্তা

আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ।

‘‘আমরা যা করছি, রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে’’ – দ্বিতীয় ওয়ানডের পর বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি এভাবেই নিজেদের অর্জনকে তুলে ধরেছিলেন গণমাধ্যমে। তখন নিশ্চয়ই জ্যোতি জানতেন না, তৃতীয় ওয়ানডেতেও জয় পেলে আরো কিছু রেকর্ড তাদের সঙ্গী হবে।

তেমনটাই হলো। আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার মিশন সাকসেসফুল বাংলাদেশের। ঘরের মাঠে তিন ম্যাচ সিরিজে এবারই প্রথম প্রতিপক্ষকে হোয়াইওয়াশ করতে পারল বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতায় সোমবার তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিতল ৭ উইকেটে।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আয়ারল্যান্ড সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রানের বেশি করতে পারেনি। জবাব দিতে নেমে ৩৭.৩ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশের মেয়েরা।

হোয়াইটওয়াশ করার মিশনের রেকর্ডের সঙ্গে ব্যাটসম্যানদের জুটির রেকর্ডও হয়েছে। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ফারজানা হক পিংকি ও শারমীন সুপ্তা আবারো জুটি বাঁধেন। প্রথম ওয়ানডেতে ১০৪ রান করেছিলেন তারা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে করেন ৮৫ রান। তৃতীয় ওয়ানডেতে তারা ছাড়িয়ে সব কিছু। ওপেনার মুর্শিদা খাতুন আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে ১৪৩ রান যোগ করেন। যা বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি।

ফারজানা হক আরেকটি ফিফটি তুলে নেন। ৯৯ বলে ৬ বাউন্ডারিতে করেন ৬১ রান। তার সঙ্গী শারমীন সুপ্তার ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৭২ রান। ৮৮ বলে ১১ বাউন্ডারিতে সাজান তার ইনিংস। দেড় বছর পর জাতীয় দলে ফিরে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন শারমীন। তিন ম্যাচে ৭০.৩৩ গড় ও ৮৭.৯২ স্ট্রাইক রেটে ২১১ রান করেছেন। ফারজানা হক ৫৭.৩৩ গড় ও ৫৭.৭২ গড়ে রান করেছেন ১৭২। টপ অর্ডারে তাদের দুজনের ব্যাটিং বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে চিন্তার কালো মেঘ সরিয়ে দিয়েছে।

দলীয় অর্জনের সঙ্গে শারমীন ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে রেকর্ডও গড়েছেন। দ্বিপক্ষীয় সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এর আগে ফারজানা হক ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজে ৩ ম্যাচে ১৮১ রান করেছিলেন। শারমীনের এবারের রান ২১১।

ফিফটি পাওয়া দুজনই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। অধিনায়ক জ্যোতি ১৮ ও সোবহানা মোস্তারি ৭ রান করে হোয়াইওয়াশ নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন।

বাংলাদেশকে জয়ের ভিত গড়ে দেন বোলাররা। দ্বিতীয় ওয়ানডের মতো এই ম্যাচেও বোলিং ছিল নিয়ন্ত্রিত। আইরিশ ব্যাটসম্যানদের কোনো সুযোগই দেননি স্পিনার ও পেসাররা।

উইকেট ছিল টার্নিং, লো অ্য্যান্ড স্লো। একেবারেই মিরপুরের চিরচেনা উইকেট। এমন উইকেটে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ভুগবে তা চোখ বন্ধ করেই বলে দেয়া যায়। তেমনটাই হয়েছে।

বাংলাদেশের সফলতম বোলার স্পিনার ফাহিমা খাতুন। ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪৩ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন ফাহিমা। ২টি করে উইকেট নেন সুলতানা খাতুন, নাহিদা আক্তার। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাবেয়া খান ও স্বর্ণা আক্তার।

আয়ারল্যান্ডকে এদিন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক গ্যাবি লুইস। ৭৯ রানে ৫২ রান করেন গ্যাবি। এছাড়া অ্যামি হান্টার ২৩ ও ওরলা পেন্ডারগাস্ট ২৭ রান করেন। লোয়ার অর্ডারে অরলিন কেলির ১৮ ও অ্যালানা ডেজেল ১৯ রান করলে লড়াই করার পুঁজি পায় অতিথিরা।কিন্তু বাংলাদেশকে আটকানোর জন্য ওই রান যথেষ্ট ছিল না।

র‌্যাংকিংয়ে পিছিয়ে থাকা আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতবে এমনটাই প্রত‌্যাশা ছিল। কতটা দাপট দেখাতে পারে, কতটা ধারাবাহিক হতে পারে সেটাই ছিল প্রশ্ন ছিল। দুটোর উত্তরই মিলেছে এই সিরিজে। চাইলে বাংলাদেশও ২২ গজে ভালো করতে পারে, ধারাবাহিকতা দেখাতে পারে সেই বিশ্বাস নিশ্চিতভাবেই জন্মেছে। এই সিরিজ দিয়ে আইসিসি ওমেন্স চ‌্যাম্পিয়নশিপের ৬ পয়েন্ট নিশ্চিত হয়েছে। যা নিঃসন্দেহে বড় পাওয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৬:২০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪
৭৫ বার পড়া হয়েছে

আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

আপডেট সময় ০৬:২০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ।

‘‘আমরা যা করছি, রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে’’ – দ্বিতীয় ওয়ানডের পর বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি এভাবেই নিজেদের অর্জনকে তুলে ধরেছিলেন গণমাধ্যমে। তখন নিশ্চয়ই জ্যোতি জানতেন না, তৃতীয় ওয়ানডেতেও জয় পেলে আরো কিছু রেকর্ড তাদের সঙ্গী হবে।

তেমনটাই হলো। আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার মিশন সাকসেসফুল বাংলাদেশের। ঘরের মাঠে তিন ম্যাচ সিরিজে এবারই প্রথম প্রতিপক্ষকে হোয়াইওয়াশ করতে পারল বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতায় সোমবার তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিতল ৭ উইকেটে।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আয়ারল্যান্ড সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রানের বেশি করতে পারেনি। জবাব দিতে নেমে ৩৭.৩ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশের মেয়েরা।

হোয়াইটওয়াশ করার মিশনের রেকর্ডের সঙ্গে ব্যাটসম্যানদের জুটির রেকর্ডও হয়েছে। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ফারজানা হক পিংকি ও শারমীন সুপ্তা আবারো জুটি বাঁধেন। প্রথম ওয়ানডেতে ১০৪ রান করেছিলেন তারা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে করেন ৮৫ রান। তৃতীয় ওয়ানডেতে তারা ছাড়িয়ে সব কিছু। ওপেনার মুর্শিদা খাতুন আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে ১৪৩ রান যোগ করেন। যা বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি।

ফারজানা হক আরেকটি ফিফটি তুলে নেন। ৯৯ বলে ৬ বাউন্ডারিতে করেন ৬১ রান। তার সঙ্গী শারমীন সুপ্তার ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৭২ রান। ৮৮ বলে ১১ বাউন্ডারিতে সাজান তার ইনিংস। দেড় বছর পর জাতীয় দলে ফিরে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন শারমীন। তিন ম্যাচে ৭০.৩৩ গড় ও ৮৭.৯২ স্ট্রাইক রেটে ২১১ রান করেছেন। ফারজানা হক ৫৭.৩৩ গড় ও ৫৭.৭২ গড়ে রান করেছেন ১৭২। টপ অর্ডারে তাদের দুজনের ব্যাটিং বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে চিন্তার কালো মেঘ সরিয়ে দিয়েছে।

দলীয় অর্জনের সঙ্গে শারমীন ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে রেকর্ডও গড়েছেন। দ্বিপক্ষীয় সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এর আগে ফারজানা হক ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজে ৩ ম্যাচে ১৮১ রান করেছিলেন। শারমীনের এবারের রান ২১১।

ফিফটি পাওয়া দুজনই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। অধিনায়ক জ্যোতি ১৮ ও সোবহানা মোস্তারি ৭ রান করে হোয়াইওয়াশ নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন।

বাংলাদেশকে জয়ের ভিত গড়ে দেন বোলাররা। দ্বিতীয় ওয়ানডের মতো এই ম্যাচেও বোলিং ছিল নিয়ন্ত্রিত। আইরিশ ব্যাটসম্যানদের কোনো সুযোগই দেননি স্পিনার ও পেসাররা।

উইকেট ছিল টার্নিং, লো অ্য্যান্ড স্লো। একেবারেই মিরপুরের চিরচেনা উইকেট। এমন উইকেটে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ভুগবে তা চোখ বন্ধ করেই বলে দেয়া যায়। তেমনটাই হয়েছে।

বাংলাদেশের সফলতম বোলার স্পিনার ফাহিমা খাতুন। ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪৩ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন ফাহিমা। ২টি করে উইকেট নেন সুলতানা খাতুন, নাহিদা আক্তার। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাবেয়া খান ও স্বর্ণা আক্তার।

আয়ারল্যান্ডকে এদিন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক গ্যাবি লুইস। ৭৯ রানে ৫২ রান করেন গ্যাবি। এছাড়া অ্যামি হান্টার ২৩ ও ওরলা পেন্ডারগাস্ট ২৭ রান করেন। লোয়ার অর্ডারে অরলিন কেলির ১৮ ও অ্যালানা ডেজেল ১৯ রান করলে লড়াই করার পুঁজি পায় অতিথিরা।কিন্তু বাংলাদেশকে আটকানোর জন্য ওই রান যথেষ্ট ছিল না।

র‌্যাংকিংয়ে পিছিয়ে থাকা আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতবে এমনটাই প্রত‌্যাশা ছিল। কতটা দাপট দেখাতে পারে, কতটা ধারাবাহিক হতে পারে সেটাই ছিল প্রশ্ন ছিল। দুটোর উত্তরই মিলেছে এই সিরিজে। চাইলে বাংলাদেশও ২২ গজে ভালো করতে পারে, ধারাবাহিকতা দেখাতে পারে সেই বিশ্বাস নিশ্চিতভাবেই জন্মেছে। এই সিরিজ দিয়ে আইসিসি ওমেন্স চ‌্যাম্পিয়নশিপের ৬ পয়েন্ট নিশ্চিত হয়েছে। যা নিঃসন্দেহে বড় পাওয়া।