গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ভণ্ডুলের ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথচলাকে ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে চালানো হামলাকে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. ইউনূস। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এক জরুরি বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অন্যতম উদ্বেগজনক ঘটনা। এই হামলার মাধ্যমে পরাজিত শক্তি দেশের অস্তিত্বকেই চ্যালেঞ্জ জানাতে চেয়েছে এবং গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে থামানোর অপচেষ্টা চালিয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এমন অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না এবং যেকোনো মূল্যে তা প্রতিহত করা হবে।
হামলার আড়ালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট বানচালের পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যত বাধাই আসুক, কোনো শক্তিই আসন্ন নির্বাচনকে ব্যাহত করতে পারবে না। দেশের সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত প্রয়াসে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী মো. সায়েদুর রহমান জানান, ওসমান হাদির অবস্থা গুরুতর। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা দ্রুততম সময়ের মধ্যে হামলাকারী ও পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন এবং দেশবাসীর কাছে হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন।
পুলিশ জানায়, হামলার স্থান থেকে সিসিটিভি ফুটেজসহ প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা সীমান্তে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন, যাতে জড়িতরা দেশ ছাড়তে না পারে।
জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকার কারণে যারা সম্ভাব্য ঝুঁকিতে থাকতে পারেন, তাদের নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে একটি বিশেষ হটলাইন চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান জোরদার এবং অপরাধীদের সম্ভাব্য আশ্রয়স্থলে তল্লাশি বাড়ানোর সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে শিগগিরই দেশের প্রধান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষ সহকারী ও পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।























