২০২৬ বিশ্বকাপ টিকিটের মূল্য নিয়ে বিশ্বজুড়ে তীব্র অসন্তোষ
২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিটের দাম প্রকাশের পর থেকেই বিশ্বজুড়ে সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ফাইনালের প্রিমিয়াম সিটের মূল্য প্রায় ৯ হাজার ডলার—যা কাতার বিশ্বকাপের তুলনায় প্রায় সাত গুণ বেশি বলে দাবি করছেন অনেক ভক্ত। ফুটবল সাপোর্টার্স ইউরোপের মতে, এমন মূল্য নীতির ফলে সাধারণ দর্শকরা কার্যত টুর্নামেন্টের বাইরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তাদের সরাসরি আহ্বান—ফিফার উচিত অবিলম্বে টিকিট বিক্রি স্থগিত করা।
জার্মানি, ইংল্যান্ড এবং ক্রোয়েশিয়া ফুটবল ফেডারেশনের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে—গ্রুপপর্ব থেকে ফাইনাল পর্যন্ত সব ম্যাচের টিকিট কিনতে হলে একজন দর্শককে প্রায় ৬,৯০০ ডলার খরচ করতে হচ্ছে। আর নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালের প্রিমিয়াম সিটের দাম ৮,৫০০ ডলারেরও বেশি।
ফিফা জানিয়েছে, ম্যাচভেদে নতুন একটি মূল্য কাঠামো প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে এই কাঠামো কীভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, তা পরিষ্কার করেনি সংস্থাটি। উদাহরণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে—ইংল্যান্ড–ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে গোলপোস্টের পেছনের আসনের মূল্য ৫২৩ ডলার, কিন্তু স্কটল্যান্ডের সমর্থকদের জন্য একই শ্রেণির টিকিটের দাম তুলনামূলকভাবে কম।
ফুটবল বিশ্লেষক হেনরি উইন্টার সতর্ক করে বলেছেন—অতিরিক্ত দাম বিশ্বকাপকে ‘করপোরেট ইভেন্ট’-এ পরিণত করতে পারে, যেখানে সাধারণ দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত উৎসবের আমেজ হারিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক সমর্থকদের জন্য ব্যয় আরও বেড়ে যাচ্ছে—টিকিটের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াত, থাকা ও খাবারের খরচ মিলিয়ে পুরো ভ্রমণই হয়ে উঠছে অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আফ্রিকান বিশ্লেষক গারি আল-স্মিথের ভাষায়—“এটি সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিশ্বকাপ।”
ফিফার ২০১৮ সালের বিড ডকুমেন্টে বলা হয়েছিল, গ্রুপপর্বের টিকিট ২১ ডলার থেকে শুরু হবে। বাস্তবে সেই প্রতিশ্রুতির কোনো প্রতিফলন নেই। এমনকি সবচেয়ে কম মূল্যমানের ‘ক্যাটেগরি–৪’ টিকিটও অনেক সমর্থকের বরাদ্দ থেকে বাদ পড়েছে।
এ অবস্থায় সমর্থকরা ফিফার ওপর চাপ বাড়িয়েছেন, যাতে পরিষ্কার ও ন্যায্য মূল্যনীতি চালু করা হয়। তাদের সতর্কবার্তা—এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বকাপের উন্মাদনা স্টেডিয়ামে নয়, টিভির সামনে গিয়ে ঠেকবে।























