ঢাকা ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এফটিকে গভর্নর : ব্যাংক থেকে হাসিনার দোসররা ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

এফটিকে গভর্নর : ব্যাংক থেকে হাসিনার দোসররা ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ধনকুবের ও ব্যবসায়ীরা দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংক খাত থেকে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

সবল ব্যাংকগুলো দখলে নিতে হাসিনার ঘনিষ্ঠ ধনকুবেরদের দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি)।

 

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পতন হয় সরকারের। আগস্টে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর দেশ ও আর্থিক খাত সংস্কারে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। বেরিয়ে আসতে থাকে বিগত সরকারে আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা কার্যকলাপ।
 
এসময় পরিবর্তন করা হয় সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। সরকার পতনের পর সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পান ড. আহসান এইচ মনসুর।
 
 
এফটি দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গভর্নর বলেন, সবল ব্যাংকগুলো দখলে নিতে হাসিনার ঘনিষ্ঠ ধনকুবেরদের সাহায্য করেছে গোয়েন্দা সংস্থাটি। ব্যাংক দখলের পর নতুন শেয়ারহোল্ডারদের ঋণ ও আমদানি খরচ বেশি দেখিয়ে প্রায় ১৬.৭ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা) পাচার করা হয়েছে।
 
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এটিই সবচেয়ে বড় পরিসরের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা। এরকম মাত্রায় (ব্যাংক ডাকাতি) অন্য কোথাও হয়নি এবং এটি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে। (ব্যাংকের সাবেক প্রধান নির্বাহীদের ওপর) গোয়েন্দা কর্মকর্তারা চাপ না দিলে এরকম কিছু সম্ভব হতো না।’
 
বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গভর্নর অভিযোগ করে বলেন, এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার সহযোগীরা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তারা দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে অন্তত ১০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। প্রতিদিনই তারা নিজেদেরকে ঋণ দিচ্ছিলেন।
 
সাইফুল আলমের পক্ষে আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভান এক বিবৃতিতে জানায়, এস আলম গ্রুপ গভর্নরের সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং এগুলো ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।
 
 
বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়, ‘অন্তর্বর্তী সরকার এস আলম গ্রুপ এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রচার চালাচ্ছে।’
 
গভর্নরের অভিযোগকে বিস্ময়কর এবং অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে তারা আরও বলেছে, ‘এতে করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে।’
 

তবে যোগাযোগ করা হলেও গোয়েন্দা সংস্থাটি থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
১৫ বার পড়া হয়েছে

এফটিকে গভর্নর : ব্যাংক থেকে হাসিনার দোসররা ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে

আপডেট সময় ০৪:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

এফটিকে গভর্নর : ব্যাংক থেকে হাসিনার দোসররা ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ধনকুবের ও ব্যবসায়ীরা দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংক খাত থেকে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

সবল ব্যাংকগুলো দখলে নিতে হাসিনার ঘনিষ্ঠ ধনকুবেরদের দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি)।

 

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পতন হয় সরকারের। আগস্টে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর দেশ ও আর্থিক খাত সংস্কারে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। বেরিয়ে আসতে থাকে বিগত সরকারে আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা কার্যকলাপ।
 
এসময় পরিবর্তন করা হয় সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। সরকার পতনের পর সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পান ড. আহসান এইচ মনসুর।
 
 
এফটি দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গভর্নর বলেন, সবল ব্যাংকগুলো দখলে নিতে হাসিনার ঘনিষ্ঠ ধনকুবেরদের সাহায্য করেছে গোয়েন্দা সংস্থাটি। ব্যাংক দখলের পর নতুন শেয়ারহোল্ডারদের ঋণ ও আমদানি খরচ বেশি দেখিয়ে প্রায় ১৬.৭ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা) পাচার করা হয়েছে।
 
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এটিই সবচেয়ে বড় পরিসরের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা। এরকম মাত্রায় (ব্যাংক ডাকাতি) অন্য কোথাও হয়নি এবং এটি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে। (ব্যাংকের সাবেক প্রধান নির্বাহীদের ওপর) গোয়েন্দা কর্মকর্তারা চাপ না দিলে এরকম কিছু সম্ভব হতো না।’
 
বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গভর্নর অভিযোগ করে বলেন, এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার সহযোগীরা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তারা দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে অন্তত ১০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। প্রতিদিনই তারা নিজেদেরকে ঋণ দিচ্ছিলেন।
 
সাইফুল আলমের পক্ষে আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভান এক বিবৃতিতে জানায়, এস আলম গ্রুপ গভর্নরের সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং এগুলো ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।
 
 
বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়, ‘অন্তর্বর্তী সরকার এস আলম গ্রুপ এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রচার চালাচ্ছে।’
 
গভর্নরের অভিযোগকে বিস্ময়কর এবং অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে তারা আরও বলেছে, ‘এতে করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে।’
 

তবে যোগাযোগ করা হলেও গোয়েন্দা সংস্থাটি থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।