ঢাকা ১০:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo ওসমানী বিমানবন্দরের রানওয়ে এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo বাগেরহাটে টেলিস্কোপে চাঁদ-তারা দেখে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস Logo ওমরজাইয়ের দাপটেই আফগানিস্তানের জয়, বাংলাদেশ হোঁচট খেল প্রথম ওয়ানডেতে Logo শুধু হামজা নয়, বাংলাদেশের পুরো দলকেই নজরে রাখছেন হংকং কোচ Logo রাতে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে দোয়া ও কোরআন তেলাওয়াতে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া Logo এক লাফে ৬,৯০৬ টাকা বৃদ্ধি, ভরিতে স্বর্ণের নতুন রেকর্ড দাম Logo পাকিস্তানি অভিযানে ১৯ ভারতীয় প্রক্সি সন্ত্রাসী নিধন Logo রাশিয়ার হাতে যুদ্ধের লাগাম, ইউক্রেনের পাল্টা দাবি Logo এ বছরের রসায়ন নোবেল: তিন বিজ্ঞানীর যুগান্তকারী আবিষ্কার Logo শেখ হাসিনার মামলায় নতুন অধ্যায়: রোববার থেকে যুক্তিতর্ক

বাম দল ছাড়া কি সম্ভব হতো জুলাই বিপ্লব? জানুন তাদের আসল অবদান!

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি : সংগৃহিত

জুলাইয়ের ঐতিহাসিক আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বাম রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে, সিপিবি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতো প্রগতিশীল দলগুলো আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুর পরপরই সিপিবি রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রথম প্রেসক্লাব থেকে মিছিল করে। ওই আন্দোলনে সিপিবির চারজন কর্মী প্রাণ হারান এবং শতাধিক আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

জুলাইয়ের প্রথম দিকে সরকারবিরোধী নানা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হয় বামপন্থী দলগুলো। বিশেষ করে কোটা সংস্কার, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ছিল স্পষ্ট। এই ধারাবাহিকতায় সিপিবি ১৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সামনে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও আবু সাঈদের মৃত্যুতে তারা স্থান পরিবর্তন করে প্রতিবাদ মিছিল করে প্রেসক্লাবে।

পরের দিনগুলোতে রাজধানী ছাড়িয়ে সারা দেশেই বাম দলগুলোর সক্রিয়তা বাড়তে থাকে। ১৯ জুলাই গণতন্ত্র মঞ্চের ব্যানারে তারা সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে, যেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও ঘটে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রবিরোধী লড়াইয়ে বরাবরের মতো এবারও আমরা প্রথম সারিতে ছিলাম। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমরা পাশে ছিলাম।’

৩০ জুলাই সিপিবির সাংস্কৃতিক সংগঠনের ‘প্রতিবাদী গানের মিছিল’ থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জড়ো হয়ে পড়ে জিপিওর আশেপাশের সড়কে। এরপর ১ আগস্ট শাহবাগে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

সরকারের পক্ষ থেকে দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়তে থাকে। কারফিউ, গুলি ও গণগ্রেফতার ছাপিয়ে আন্দোলন এক বিশাল রূপ নেয়। তখনই ২ আগস্ট নাগরিক সমাজের ব্যানারে বের হয় ‘দ্রোহযাত্রা’। এই যাত্রায় বামপন্থী রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং ছাত্ররা নেতৃত্বে থাকেন। ৯ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন সেখানে রূপ নেয় সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে।

৩ আগস্ট শহীদ মিনারে বিশাল সমাবেশে প্রগতিশীল দলগুলো একত্রিত হয়। সেদিনই এক কণ্ঠে উচ্চারিত হয়: “দফা এক, দাবি এক—শেখ হাসিনার পদত্যাগ।”

চূড়ান্ত সংঘর্ষ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট আসে পরিবর্তনের ভোর। কারফিউ ভেঙে লাখো মানুষ রাস্তায় নামে। আন্দোলনের চূড়ান্ত সাফল্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে পরিণতি ঘটে এই ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৫৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
৬৮ বার পড়া হয়েছে

বাম দল ছাড়া কি সম্ভব হতো জুলাই বিপ্লব? জানুন তাদের আসল অবদান!

আপডেট সময় ০৪:৫৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

জুলাইয়ের ঐতিহাসিক আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বাম রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে, সিপিবি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতো প্রগতিশীল দলগুলো আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুর পরপরই সিপিবি রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রথম প্রেসক্লাব থেকে মিছিল করে। ওই আন্দোলনে সিপিবির চারজন কর্মী প্রাণ হারান এবং শতাধিক আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

জুলাইয়ের প্রথম দিকে সরকারবিরোধী নানা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হয় বামপন্থী দলগুলো। বিশেষ করে কোটা সংস্কার, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ছিল স্পষ্ট। এই ধারাবাহিকতায় সিপিবি ১৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সামনে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও আবু সাঈদের মৃত্যুতে তারা স্থান পরিবর্তন করে প্রতিবাদ মিছিল করে প্রেসক্লাবে।

পরের দিনগুলোতে রাজধানী ছাড়িয়ে সারা দেশেই বাম দলগুলোর সক্রিয়তা বাড়তে থাকে। ১৯ জুলাই গণতন্ত্র মঞ্চের ব্যানারে তারা সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে, যেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও ঘটে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রবিরোধী লড়াইয়ে বরাবরের মতো এবারও আমরা প্রথম সারিতে ছিলাম। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমরা পাশে ছিলাম।’

৩০ জুলাই সিপিবির সাংস্কৃতিক সংগঠনের ‘প্রতিবাদী গানের মিছিল’ থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জড়ো হয়ে পড়ে জিপিওর আশেপাশের সড়কে। এরপর ১ আগস্ট শাহবাগে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

সরকারের পক্ষ থেকে দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়তে থাকে। কারফিউ, গুলি ও গণগ্রেফতার ছাপিয়ে আন্দোলন এক বিশাল রূপ নেয়। তখনই ২ আগস্ট নাগরিক সমাজের ব্যানারে বের হয় ‘দ্রোহযাত্রা’। এই যাত্রায় বামপন্থী রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং ছাত্ররা নেতৃত্বে থাকেন। ৯ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন সেখানে রূপ নেয় সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে।

৩ আগস্ট শহীদ মিনারে বিশাল সমাবেশে প্রগতিশীল দলগুলো একত্রিত হয়। সেদিনই এক কণ্ঠে উচ্চারিত হয়: “দফা এক, দাবি এক—শেখ হাসিনার পদত্যাগ।”

চূড়ান্ত সংঘর্ষ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট আসে পরিবর্তনের ভোর। কারফিউ ভেঙে লাখো মানুষ রাস্তায় নামে। আন্দোলনের চূড়ান্ত সাফল্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে পরিণতি ঘটে এই ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের।